উপরিউক্ত আলোচনা থেকে বলা যায় যে আমরা চার ভাইবোন

সাধারণ উত্তর যদি পরীক্ষার উত্তরের মতো করে দেওয়া হতো, তাহলে কেমন হবে? আসুন, দেখা যাক...

ছবি: পেক্সেলস

প্রশ্ন :

কেমন আছ?

মানবজীবনে সুখ-দুঃখ অঙ্গাঙ্গিভাবে জড়িত। একটি ছাড়া অন্যটির কথা চিন্তা করা যায় না। দুঃখের পর সুখ আসে। সুখের পর দুঃখ। দুঃখের সময় মন রাখতে হয় স্থির। সুখের সময় থাকতে হয় নিরহংকার। কবি বলেছেন, ‘কাঁটা হেরি ক্ষান্ত কেন কমল তুলিতে, দুঃখ বিনা সুখ লাভ হয় কি মহীতে?’ অর্থাৎ দুঃখ ছাড়া সুখ লাভ সম্ভব নয়। মানসিক সুস্থতা সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। এটি আমাদের জীবনের একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। আমি সব সময় সুখী থাকতে চেষ্টা করি। অতএব আমি এখন ভালো বোধ করছি।

প্রশ্ন :

তোমার নাম কী?

নাম যেকোনো মানুষের জীবনে একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। একজন মানবশিশু জন্মের পরপরই সবাই তার নাম দেওয়া নিয়ে চিন্তিত হয়ে পড়ে। অনেকে শিশুর জন্মের আগেই নাম ঠিক করে রাখে। নামকরণ নিয়ে মানুষের কৌতূহলের শেষ নেই। মায়ের কাছে শুনেছি, আমার নামকরণ নিয়েও অনেক ঝামেলা হয়েছিল। তবে মা–বাবা দূরদৃষ্টিসম্পন্ন মানুষ। তাঁরা অনেক আগেই বুঝতে পেরেছিলেন, দুনিয়ায় একসময় ফেসবুক আসবে এবং সেখানে উচ্চমানের নামের প্রয়োজন পড়বে। তাই মা–বাবা আমার নাম রেখেছেন ‘অ্যাঞ্জেল জরি’।

প্রশ্ন :

তোমার বাবা কী করেন?

পৃথিবীতে বেঁচে থাকা একটা বড় বিষয়। টিকে থাকতে হলে আমাদের বিভিন্ন রকমের কাজ করতে হয়। ব্যক্তিভেদে কাজ ভিন্ন হয়। তবে কোনো কাজই অসম্মানের নয়। প্রতিটি কাজকে আমাদের সমান সম্মান করা উচিত। কর্ম ছাড়া কোনো কিছুই সম্ভব নয়। বেঁচে থাকার জন্য অর্থের দরকার। আমাদের পরিবারের মূল উপার্জনকারী আমার বাবা। আমার বাবা একজন সরকারি চাকরিজীবী।

প্রশ্ন :

তোমরা কয় ভাইবোন?

জীবনে ভাইবোনের গুরুত্ব অপরিসীম। পৃথিবীতে নানা রকমের সম্পর্ক বিরাজমান। তন্মধ্যে ভাইবোনের সম্পর্কটা সবচেয়ে মধুর। মাঝেমধ্যে ভাইবোনের মধ্যে ভীষণ রকমের ঝগড়া হয়। তবে এটাকে ঠিক ঝগড়া বলাটা উচিত হবে না। এটা এক রকম মধুর সম্পর্কের বহিঃপ্রকাশ। কবি বলেছেন, ‘অভিভাবকদের কাছে পৃথিবীতে ভাইবোনের ঝগড়ার বিড়ম্বনার মতো আর কিছু নাই।’ আমরা চার ভাইবোন মা-বাবার খুব আদরের। আমরাও মাঝেমধ্যে মারামারি করি। অনেক দুষ্টুমি করি। এই তো কিছুদিন আগে ছোট ভাইটা আমার একটা এডিট ছাড়া ছবি ফেসবুকে আপলোড করেছিল। আমার যে কী রাগ হয়েছিল! উপরিউক্ত আলোচনা থেকে বলা যায় যে আমরা চার ভাইবোন।

ছবি: পেক্সেলস

প্রশ্ন :

তুমি কোন স্কুলে পড়ো?

শিক্ষাই জাতির মেরুদণ্ড। যেকোনো জাতিকে উন্নতির শিখরে উঠতে হলে শিক্ষার ভূমিকা অনস্বীকার্য। শিক্ষা অর্জনের জন্য আমাদের একটা নির্দিষ্ট সময়ের পর স্কুলে পড়তে হয়। তার আগে বাসায় মা-বাবা সন্তানদের প্রাথমিক পাঠ সম্পন্ন করান। তবে ইদানীং মা-বাবারা অনেক ব্যস্ত থাকেন। সন্তানকে নিজে পড়ানোর মতো সময় পান না, গৃহশিক্ষক রাখেন। আমার বেলায়ও একই অবস্থা ছিল। বাসার পাঠ শেষে স্কুলে ভর্তি হয়েছিলাম। আমাদের স্কুলের পরিবেশ খুব সুন্দর। ফ্রি ওয়াই-ফাই আছে। ওয়াই-ফাইয়ের নাম ‘জ্ঞানময়ী জিপিএ-৫ উচ্চবিদ্যালয়’। সুতরাং আমরা এই সিদ্ধান্তে উপনীত হতে পারি যে আমি জ্ঞানময়ী জিপিএ-৫ উচ্চবিদ্যালয়ের ছাত্রী।

প্রশ্ন :

স্কুলে কীভাবে যাও?

এক জায়গা থেকে অন্য জায়গায় যাওয়ার জন্য মানুষ যানবাহন ব্যবহার করে। এই বিষয়টাকে বলা হয় যোগাযোগব্যবস্থা। বিশ্বের সঙ্গে তাল মিলিয়ে আমাদের দেশেও যোগাযোগব্যবস্থায় দারুণ উন্নতি হয়েছে। সড়ক, নৌ, রেল, উড়াল—সব পথেই অগ্রগতি। তবে মাত্রাতিরিক্ত যানজট সড়কপথের উন্নতিতে ব্যাঘাত ঘটাচ্ছে। এটা নিয়ে সরকারের পাশাপাশি অন্য পেশাজীবীদেরও ভাবতে হবে। তবে স্কুলে যেতে আমাকে কোনো ঝামেলা পোহাতে হয় না। আমরা থাকি ষষ্ঠ তলায়। ভবনের নিচতলায় আমাদের স্কুল। আমি লিফট দিয়ে চলাফেরা করি। অর্থাৎ আমি লিফট দিয়ে স্কুলে যাই।

প্রশ্ন :

তোমার শখ কী?

পৃথিবীতে হরেক রকমের মানুষের বাস। হরেক রকম মানুষের হরেক রকম শখ। নিজের শখের জন্য মানুষ কত কিছুই না করেছে। বলিউডের জনপ্রিয় চলচ্চিত্র থ্রি ইডিয়টস-এ বলা হয়েছে, ‘মন যা চায় তা-ই করো। নিজের মনের কথা শোনো।’ এখানে মূলত শখের কথাই বলা হয়েছে। কারও শখ সিনেমা দেখা। কারও শখ ফেসবুকিং। কারও শখ অন্যের সমালোচনা করা। কারও শখ মিম বানানো। আমারও একটা শখ। পাঠ্যবই পড়া। অবসরে আমি নিয়মিত পাঠ্যবই পড়ি।

ছবি: পেক্সেলস

প্রশ্ন :

রাতে খেয়েছ?

ক্ষুধা নিবারণের জন্য মানুষ যা খায়, তা-ই খাদ্য। কথায় আছে, ‘পাগলে কী না বলে, ছাগলে কী না খায়।’ এ থেকে সহজেই খাদ্যের গুরুত্ব অনুধাবন করা যায়। খাদ্য ছাড়া আমরা বাঁচতে পারি না। আমাদের প্রধান খাদ্য ভাত। দিনে সাধারণত আমরা নিয়মিত তিনবার খাবার গ্রহণ করি। সকাল, দুপুর ও রাতের খাবারকে ইংরেজিতে যথাক্রমে ব্রেকফাস্ট, লাঞ্চ ও ডিনার বলা হয়। এখন রাত। ডিনার করার সময়। মা কয়েকবার ডেকেছেন। ইনস্টায় রাতের খাবারের ছবিটা আপলোড করেই খেতে বসব। এ থেকে বোঝা যায়, এখনো রাতের খাবার খাইনি।