এটাই ‘সাইন্স’

করোনাকালে হলিউডি সিনেমা কন্টাজিওন সবাইকে হতবাক করেছে। পৃথিবীর বর্তমান অবস্থা ২০১১ সালেই দেখানো হয়েছে এই সিনেমার মাধ্যমে। আর ইতিমধ্যে দেশেও করোনাভাইরাস নিয়ে একাধিক নাটক হয়ে গেছে। নাটক হতে পারলে অদূর ভবিষ্যতে হয়তো সিনেমাও হবে। যদি হয় তাহলে কেমন হবে করোনা নিয়ে বানানো সেই সিনেমার গল্পগুলো? ঢালিউডের পাশাপাশি হলিউড, বলিউডের প্রেক্ষাপটেও গল্পগুলো ভেবেছি আমরা

হলিউড

হলিউড অবশ্যই একটা থ্রিলার ঘরানার সিনেমা বানাবে। সিনেমায় দেখা যাবে, পৃথিবী ধ্বংস করার জন্য করোনাভাইরাস ছড়িয়েছে চীন। এই প্রকল্পে রাশিয়ার হাতও থাকবে নিঃসন্দেহে। চীন ও রাশিয়ার প্রতিরক্ষামন্ত্রীর যৌথ পরিকল্পনায় একদল গবেষক গোপনে কাজ করবে উহান প্রদেশের গবেষণাগারে। সিআইএ এজেন্ট টম ক্রুজকে দেওয়া হবে পৃথিবী রক্ষার দায়িত্ব। জীবনের ঝুঁকি নিয়ে স্ত্রী–সন্তানের কাছে শেষ বিদায় নিয়ে মাঠে নেমে পড়বেন টম ক্রুজ। অনেক গোলাগুলি, বাইক রেস, কার চেজ, মিসাইল মিস গাইডেডের মতো ঘটনার পর সবকিছু ধ্বংসের ঠিক এক সেকেন্ড আগে সফল হবেন টম ক্রুজ। একজন সাহসী মার্কিনের কারণেই রক্ষা পাবে পৃথিবীর সাত শ কোটি মানুষ।

বলিউড

বলিউড বানাবে রোমান্টিক ঘরানার অ্যাকশন সিনেমা। যেখানে ভারতীয় এজেন্ট হৃতিক রোশন সারা দিন দেশের কাজ নিয়ে ব্যস্ত থাকেন, ফলে প্রেমিকা ক্যাটরিনার সঙ্গে তাঁর ব্রেকআপ হবে। করোনাভাইরাসের কারণে ভারতে দেখা দেবে মহামারি। দেশটির ইন্টেলিজেন্স ব্র্যাঞ্চ আবিষ্কার করবে এই ভাইরাস ছড়ানোর পেছনে কাজ করছে পাকিস্তানি উগ্রবাদী সংগঠন। ভারতের অর্থনীতি ধ্বংস করে দেওয়াই যাদের স্বপ্ন। অ্যান্টিডোটও থাকবে সেই সংগঠনের কাছে। এদিকে করোনায় আক্রান্ত হয়ে নায়িকা ক্যাটরিনার ‘এখন মরে তখন মরে’ অবস্থা। মাঠে নামবেন হৃতিক রোশন। অভিকর্ষজ ত্বরণকে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে অনেক ‘উড়াধুড়া’ ফাইট ও বোমা ফাটানো শেষে একাই পাকিস্তানি সেনাবাহিনী ও উগ্রবাদী সংগঠনকে শুইয়ে দেবেন। উদ্ধার করবেন জীবনরক্ষাকারী অ্যান্টিডোট। মৃত্যুর মুখ থেকে ফিরে আসা ক্যাটরিনা প্রেমিক হৃতিকের ব্যাপারে নিজের ভুল বুঝতে পারবেন।

তামিল

তামিল সিনেমায় ভিলেন রজনীকান্ত খেলাচ্ছলে আবিষ্কার করবেন প্রাণঘাতী করোনাভাইরাস। বিদেশিদের কাছে এই ভাইরাস বিক্রির আগে প্রয়োগ করবেন নিজের দেশে। একের পর এক লোক মারা যেতে থাকবে। এ সময় এগিয়ে আসবেন ভিলেন রজনীকান্তের যমজ ভাই, তিনিও রজনীকান্ত; তবে তাঁর ভূমিকা নায়কের। দুই যমজ ভাইয়ের অনেক হাড়হাড্ডি–ভাঙাভাঙি শেষে নায়ক রজনীকান্ত মেরে ফেলবেন তাঁর যমজ ভাই ভিলেন রজনীকান্তকে। গ্রামবাসী আয়োজিত সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে রজনীকান্তের গলায় ‘পুষ্পমাল্য অর্পণের’ মাধ্যমে শেষ হবে সিনেমা। আর এই সিনেমায় মাঝেমধ্যে রজনীকান্তের হাঁটুর বয়সী এক নায়িকাকে নাচতে দেখা যাবে, যিনি কোনো কারণ ছাড়াই রজনীকান্তের প্রেমিকা।

ঢালিউড

বসে থাকবে না আমাদের ঢালিউডও। সিনেমায় দেখা যাবে নায়িকা বুবলীর ব্যবসায়ী বাবা মিশা সওদাগর চোরাচালানির মাধ্যমে দেশে করোনাভাইরাস আমদানি করবেন। একই সঙ্গে এর টিকাও উৎপাদন করবেন তিনি। ফলে ব্যবসা যাবে জমে। কিন্তু সৎ পুলিশ অফিসার শাকিব খান হবেন প্রধান বাধা। ‘কঠিন দৌড়ানি’ দেবেন মিশা ও তাঁর দলকে। চুনোপুঁটিরা সব মারা পড়বে। ফাঁকে ফাঁকে প্রেম চলতে থাকবে শাকিব–বুবলীর। একটা গান হবে চন্দ্রিমা উদ্যানে। আরেকটা মালয়েশিয়ার রাস্তায়। এদিকে এফডিসিসংলগ্ন বস্তির লোকজন প্রাণ হারাতে থাকবে মিশার আমদানি করা ভাইরাসের প্রকোপে। হাতিরঝিলে স্পিডবোট চালিয়ে মিশাকে ধ্বংস করে দেবেন পুলিশ অফিসার শাকিব। কিন্তু মৃত্যুর আগে আগে শাকিবকে করোনাভাইরাসে সংক্রমিত করে যাবেন মিশা। ফলে আইসোলেশনে যেতে হবে শাকিবকে। মানসম্মত ‘পিপিপি’ না থাকায় কেউই শাকিবের ধারেকাছে ঘেঁষবে না। মৃত্যু যখন সুনিশ্চিত তখন হাসপাতালে ছুটে আসবেন বুবলী। একপশলা কান্নাকাটি শেষে শাকিবের ঠোঁটে এঁকে দেবেন চুমু। তড়াক করে লাফিয়ে উঠবেন শাকিব, জয় করবেন করোনাভাইরাস।