‘অর্থই অনর্থের মূল। টাকা কখনো সুখ কিনতে পারে না। টাকাই জীবনের সব নয়। অতএব, টাকার পেছনে নয়; বরং নিজের স্বপ্নের পেছনে ছুটুন।’
‘টিকটকার অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ’ আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে এভাবেই মোটিভেশন দিচ্ছিলেন কিলিয়ান এমবাপ্পে। পিএসজির ফরোয়ার্ডের বক্তব্য শেষে সবাই যখন করতালি দিয়ে তাঁকে বাহবা জানাচ্ছিল, তখন দেখা গেল, দর্শকসারির একটা অংশ একদমই নীরব। ‘একটু থামুন’–এর অনুসন্ধান দলের খোঁজখবরে বেরিয়ে এসেছে, তারা আদতে সবাই রিয়াল মাদ্রিদ সমর্থক!
প্রতিবারের মতো এবারও রিয়াল মাদ্রিদকে ছেঁকা দিলেন কিলিয়ান এমবাপ্পে। সিজন শেষ হয়ে যাওয়ায় অবসরে কোনো কাজ হাতে না থাকায় বিশ্বব্যাপী মোটিভেশনাল স্পিচ দিয়ে বেড়াচ্ছেন এই ফরাসি ফুটবলার।
‘টাকা কখনোই জীবনের লক্ষ্য হওয়া উচিত নয়। হ্যাঁ, জীবনে টাকার প্রয়োজন আছে সত্যি, তবে সেই টাকার পেছনে অন্ধের মতো ছুটতে গিয়ে নিজের সম্মান, স্বপ্ন ও ভালোবাসাকে বিসর্জন দেওয়া উচিত নয়।’ ভারতের ‘ইন্ডিয়ান সিরিয়াল ফ্যানস ক্লাব’ আয়োজিত এক মোটিভেশনাল সেমিনারে বক্তব্য দিতে গিয়ে কিছুদিন আগে এমনটা বলেছিলেন এমবাপ্পে।
এমবাপ্পের মোটিভেশনাল স্পিচ নিয়মিত শোনেন এবং জীবনে কাজে লাগান, এ রকম লোকের সংখ্যা দেশে অসংখ্য। যদিও এমবাপ্পের ভাষণ শুনে দেশের অনেকেই নিজের সব অর্থকড়ি হারিয়েছেন, তবু তারা নিজেদের সুখী হিসেবেই দেখছেন।
এমবাপ্পেকে গভীরভাবে ফলো করেন, এমন অনেকেই নিয়মিত ডিগবাজির ভিডিও বানিয়ে টিকটকে রাতারাতি সেলিব্রিটি বনে গেছেন। ডিগবাজির শুটিংয়ে ব্যস্ত, এমন এক টিকটকারের সঙ্গে কথা হয় ‘একটু থামুন’-এর প্রতিনিধির। নাম জিজ্ঞেস করা হলে তিনি বলেন, ‘পরিচয় দেওয়ার সময় নেই। তোদের বড় ভাইদের জিগা, দেলোয়ার কিডা!’
এমবাপ্পের ঠিক কোন কথাটার কারণে দেলোয়ার ডিগবাজির ভিডিও বানাচ্ছেন, এ প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, ‘এমবাপ্পে বলেছে, সোজা পথে লক্ষ্য অর্জিত না হলে উল্টো পথে যেতে। সোজা হাঁটার বা দৌড়ানোর ভিডিও বানিয়ে টিকটকে ভাইরাল হতে পারিনি। তাই এখন উল্টো, মানে পল্টিবাজি করছি।’
এদিকে বিশ্বব্যাপী এমবাপ্পের ফ্যান-ফলোয়ার বেড়েই চলেছে। সদ্য বার্সেলোনার সমর্থকগোষ্ঠী থেকে প্রায় ৫০০ মিলিয়ন সমর্থক যোগ দেন ‘এমবাপ্পে ফ্যানস ক্লাব’-এ। তবে হঠাৎ ফুটবলার থেকে মোটিভেশনাল স্পিকার বনে যাওয়ার পেছনে কারণ কী, এ প্রশ্ন করা হলে এমবাপ্পে জানান, ‘আসলে আমি বাংলাদেশি মোটিভেশনাল স্পিকারদের ছোটবেলা থেকেই পছন্দ করি। বাংলাদেশি একজন বিখ্যাত মোটিভেশনাল স্পিকার...আরে, নামটা এই মুহূর্তে মনে আসতেছে না। তো ওই ভাইকে দেখে প্রেরণা পেয়ে আমিও এই পথে আসছি। আপনাদের দোয়ায় স্পিচ বিক্রি করে ভালোই টাকাপয়সা কামাচ্ছি। তবে ভুলে গেলে চলবে না, টাকাই জীবনের সব নয়।’