পান্ডা দিনের ১৪ ঘণ্টাই বাঁশ খায় কেন

বাঁশ খেয়েই দিনের সিংহভাগ কাটিয়ে দেয় পান্ডা
এএফপি

প্রিয় পাঠক, আপনার জন্য প্রশ্ন। বলুন তো, ভালুক প্রজাতিগুলোর মধ্যে মানুষের সবচেয়ে পছন্দের কোনটি?

মনে হয় না কেউ চারটি অপশন চেয়েছেন। বিশেষ করে ছবি দেখে ও শিরোনাম পড়ার পর পান্ডা ছাড়া আর কোনো প্রাণীর কথা বোধ হয় কেউ ভাবেননি। সাদা-কালো এই প্রাণীগুলো দেখলে কেবল দুটো কথা মাথায় আসে। এক, গোলগাল আর আদুরে। দুই, এগুলো দিনভর বাঁশ খায়।

দিনভর না হোক, দিনের সিংহভাগ তো বটেই। একটি প্রাপ্তবয়স্ক পান্ডা দিনের ১৪ ঘণ্টা কেবল খেয়েদেয়ে কাটিয়ে দিতে পারে। আর এটির খাবারের ৯৯ শতাংশই হলো বাঁশ। তবে সমস্যা হলো, বাঁশের দীর্ঘ কাণ্ডের তুলনায় পুষ্টিগুণ থাকে কম। আর পান্ডার বিশাল বপুর প্রয়োজনীয় শক্তির জোগান পূরণ করতে চাইলে স্বাভাবিক কারণেই পরিমাণে প্রচুর বাঁশ খেতে হয় এটির। দিনে ১৪ ঘণ্টা পর্যন্ত বাঁশ খাওয়ার কারণ সেটাই।

বেশ আত্মভোলা একটা ভাব নিয়ে দিনভর বাঁশ চিবিয়ে যায়
পিক্সাবে

১৪ ঘণ্টা বুঝলাম, কিন্তু পরিমাণটা কত? এক গবেষণায় দেখা যায়, প্রাপ্তবয়স্ক পান্ডাগুলো দিনে ৪০ কেজি পর্যন্ত বাঁশের কোঁড়ল, ১৭ কেজি বাঁশের কাণ্ড কিংবা ১৪ কেজি কঞ্চি ও পাতা চিবিয়ে খেয়ে ফেলতে পারে।

বাঁশ থেকে শ্বেতসার পায় পান্ডা। আর ভিন্ন ভিন্ন ঋতুতে বাঁশের ভিন্ন ভিন্ন অংশে শ্বেতসার বেশি থাকে। সে কারণেই ঋতুভেদে বাঁশের নানা অংশ পান্ডার পছন্দের তালিকায় শীর্ষে থাকে। বসন্ত ও গ্রীষ্মে বাঁশের কোঁড়ল এটির বেশি পছন্দ এবং শীত ও শরতে বাঁশের কাণ্ড, কঞ্চি ও পাতাতেই নজর বেশি থাকে।

দেখে বেশ আমুদে বলেই মনে হয়
ফ্লিকার

কোঁড়ল বেশ নরম। সে তুলনায় বাঁশের কাণ্ড খাওয়া মোটেই সহজ কথা নয়। দীর্ঘ সময় ব্যয় করে সে কাণ্ডগুলো ফালি করে নেয় পান্ডা। আর বাছাবাছির সময়েই তুলনামূলক নরম বাঁশ নির্বাচন করে। পান্ডার দাঁতে বিশেষ এনামেল থাকে বলে চিবাতে সুবিধা হয়।

খাদ্য দিয়ে শুরু করে শেষ করা যাক একটা অখাদ্য দিয়ে। বাঁশে প্রচুর আঁশ থাকায় বেশির ভাগই পান্ডা হজম করতে পারে না। ফলে খাওয়ার পর বিষ্ঠা বর্জন করতেও খুব বেশি সময় লাগে না। তা-ও ২০ কেজি পর্যন্ত, যার বেশির ভাগই অজীর্ণ বাঁশ।

সূত্র: সিজিটিএন