ভাইরাল শব্দটি এল কোথা থেকে

‘ভাইরাল’ শব্দটি আগাগোড়াই ছিল আতঙ্কের কারণ। ফেসবুক, ইউটিউব, ইনস্টাগ্রাম ভাইরালকে দিয়েছে ইতিবাচক ভাবমূর্তি। তবে করোনাভাইরাস এসে এক অর্থে ‘ভাইরাল’ শব্দটির জনপ্রিয়তায় ধস নামিয়েছে। তারপরও অনেকেই এখন ভাইরাল হতে উদগ্রীব। ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানগুলো ভাইরাল হওয়ার জন্য খোঁজে নানা উপায়। মুদ্রার উল্টো দিকও আছে; অনলাইনে ভাইরাল হওয়ার কারণে অনেকের জীবন হয়ে ওঠে দুর্বিষহ, ছড়ায় ভুল তথ্য। তো এই ভাইরাল শব্দটি এল কোথা থেকে?

ভাইরাল শব্দটি এখন নেশার মতো। মডেল: নাজিফা তুশি
প্রথম আলো

কোনো ছবি, ভিডিও বা লেখা অনলাইনে হড়কা বানের মতো প্রচণ্ড গতিতে বয়ে গেলে আমরা সেটাকে বলি ভাইরাল। এই ছবি, ভিডিও বা লেখাগুলো অনেক সময় বানের তোড়ে ভেসে যায়। কোনো কোনোটি স্রোত থেকে বেরিয়ে স্থায়ী আসন গাড়ে। এর কোনো কোনোটি সমাজে মারাত্মক প্রভাব ফেলে। কিছু ভাইরাল বিষয় স্রেফ আনন্দ দিয়ে যায়, কোনোটি ভাবায় কিংবা কাঁদায়।

ভাইরাল কবে থেকে ভাইরাল হলো? যবে থেকে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম জনপ্রিয় হলো—সাধারণ উত্তরটি সবারই জানা। ভাইরাল তো আদতে ইন্টারনেটেরই সন্তান। তবে ইন্টারনেট যখন আসেনি, কিংবা তারও আগের অনেক কিছুই তো ভাইরাল হয়েছিল।

মার্কিন লেখক সেথ গোডিনের লেখা এই প্রবন্ধ থেকেই এসেছে ‘ভাইরাল’ শব্দটি

একটু অন্যভাবে চিন্তা করা যাক। খনার বচনের কথাই ধরুন। লিখিত কোনো রূপ ছিল না, কিন্তু আজও মানুষ খনার বচন মুখস্থ আওড়ায় গড়গড় করে। কারণ, খনার বচনও এক অর্থে অ্যানালগ ভাইরাল হয়েছিল। তখন মাধ্যম বলতে ছিল কেবল ব্যক্তির মুখ। বিদুষী খনা ভবিষ্যদ্বাণী করতেন। সেগুলো ফলেও যেত হাতেনাতে। মানুষের বিস্ময়ের সীমা থাকত না। একজন আরেকজনকে খনার বচনের কথা বলত আগ্রহ নিয়ে। এভাবেই খনার বচন টিকে আছে প্রজন্মের পর প্রজন্ম। অনলাইনের ক্ষেত্রে প্রথমবারের মতো ভাইরাল শব্দটি ব্যবহার করেছিলেন মার্কিন লেখক সেথ গোডিন। ২০০০ সালের ৩১ জুলাই ‘আনলিশ ইয়োর আইডিয়াভাইরাস’ শিরোনামে একটি প্রবন্ধ লিখেছিলেন ফাস্ট কোম্পানি ডটকমে। সেখানে বলেছিলেন, ‘হ্যাভ দ্য আইডিয়া বিহাইন্ড ইয়োর অনলাইন এক্সপেরিয়েন্স গো ভাইরাল…’। প্রবন্ধটির কী হয়েছিল জানা নেই, তবে ভাইরাল শব্দটি পরে ঠিকই ভাইরাল হয়ে গেছে।