শাকসবজি কীভাবে কীটনাশকমুক্ত করবেন?

সবজিতে কীটনাশকের ক্ষতিকর প্রভাব দূর হতে কিছু সময় দরকার
ছবি: প্রথম আলো

খাদ্যে ভেজাল এক বড় সমস্যা। শুধু তা-ই নয়, শাকসবজিতে অতিরিক্ত কীটনাশক ব্যবহার করা হয় এবং এর ক্ষতিকর প্রভাব দূর হতে যতটা সময় দরকার, তার আগেই সেগুলো বাজারে নিয়ে আসা হয়, আমরা তা কিনে খাই। অর্থাৎ টাকা দিয়ে আমরা অনেক সময় বিষ কিনি।

এই অভিশাপ থেকে বাঁচার একটি উপায় হলো রান্নার আগে কলের পানিতে ভালোভাবে শাকসবজি ধুয়ে নেওয়া। সাধারণভাবে ধোয়া হয়, কিন্তু কলের পানি জোরে ছেড়ে অথবা পাত্রের পানিতে কিছুক্ষণ ঘষে ধুয়ে নিলে কীটনাশক ও অন্যান্য জীবাণু অনেকাংশে দূর করা যায়।

কয়েক বছর আগে যুক্তরাষ্ট্রের কানেকটিকাট এগ্রিকালচারাল এক্সপেরিমেন্ট স্টেশনে কৃষিবিজ্ঞানীরা লেটুসপাতা, স্ট্রবেরি ও টমেটোর ১৯৬টি নমুনা নিয়ে পরীক্ষা করেন। এগুলোর এক অংশ কলের পানিতে এক মিনিট ধোয়া হয় ও অপর অংশ এক শতাংশ পালমোলিভ সলিউশনে ধোয়া হয়। দেখা গেছে, পানিতে ধোয়া সবজিতে ১২টি কীটনাশকের অবশেষের মধ্যে নয়টি উল্লেখযোগ্যভাবে অপসারিত হয়েছে। বিজ্ঞানীরা বলছেন, একে সাবানে ধোয়ার মতোই কার্যকর বলা চলে। এখানে কতক্ষণ ধোয়া হয়েছে সেটা আসল ব্যাপার না, কলের পানির নিচে পাতা বা সবজি ঘষে ঘষে ধোয়া হয়েছে কি না, সেটাই মূল ব্যাপার।

পানির নিচে পাতা বা সবজি ঘষে ঘষে ধুতে হবে
ছবি: প্রথম আলো

শাকসবজিতে কীটনাশক ব্যবহারের পর অন্তত তিন সপ্তাহ সময় পার না হলে তা বাজারে বিক্রি করার নিয়ম নেই। কিন্তু এটা ঠিকভাবে মেনে চলে না অনেকেই। আর অনেকে তো এটা জানেই না।

আজকাল রাসায়নিক সার বা ওষুধ ব্যবহার না করে প্রাকৃতিক সার ও কীটনাশক পদ্ধতি ব্যবহারের মাধ্যমে শাকসবজি উৎপাদনের উদ্যোগ বাড়ছে। যেমন, বেগুনে খুব বেশি পোকা ধরে, এ জন্য ব্যাপক হারে কীটনাশক ব্যবহার না করে ফেরোমিন ফাঁদ ব্যবহার করা যায়। বেগুনগাছে চুলার ছাইও ভালো ওষুধ। নিমের পাতাসেদ্ধ পানি ছিটিয়ে পোকা দমন করার পদ্ধতি অনেক আগে থেকেই আমাদের কৃষিতে প্রচলিত। মাটিতে গোবরসারের ব্যবহারও কম নয়।

কীটনাশক ব্যবহার না করেও সবজি চাষ করা সম্ভব
ছবি: প্রথম আলো

এভাবে উৎপাদিত ‘অরগানিক’ শাকসবজি ও খাদ্যদ্রব্যের চাহিদা বাড়ছে। কিন্তু অরগানিক পণ্য কতটা সততার সঙ্গে উৎপাদন করা হয়েছে, সে প্রশ্ন থেকেই যায়। তাই পানিতে ঘষে-মেজে ধুয়ে নেওয়াই শ্রেয়।