শিকারি চিংড়ির অস্ত্র যখন শব্দ

মানুষের হুংকারেও কিন্তু গ্লাস ভাঙে। একটি পানি খাওয়ার কাচের গ্লাসের সামনে ৫৫৬ হার্টজ তরঙ্গে ১০৫ ডেসিবেল মাত্রার শব্দ ২০ বার উৎপন্ন করলে কাচের গ্লাসটিতে চিড় ধরবে। আর কে না জানে হুংকারের বেলায় অনেক প্রাণীই মানুষের চেয়ে এগিয়ে থাকবে। চলুন জেনে নেওয়া যাক প্রাণিজগতের কে কত জোরে আর অদ্ভুতভাবে ‘হুংকার’ দিতে পারে। সঙ্গে আছে ভিডিও।

আলফিয়েদাই নামের এক প্রজাতির চিংড়ি আছে। এরা দাঁড়া দিয়ে পানিতে বুদ্‌বুদ তৈরি করে, যা ২১৮ ডেসিবেল কম্পাঙ্কের শব্দ তৈরি করে। আর ওই শব্দতরঙ্গের আঘাতে মারা পড়ে নিরীহ প্রকৃতির চিংড়ি। তাই এই প্রজাতির আরেক নাম পিস্তল চিংড়ি।

প্রাণিজগতে সবচেয়ে পুঁচকে আকারের প্রাণীর মধ্যে সবচেয়ে বেশি মাত্রার শব্দ তৈরি করে সিকাডা নামের একটি পতঙ্গ! এই পতঙ্গের শব্দ কখনো কখনো ১২০ ডেসিবেলও ছাড়িয়ে যায়। এই মাত্রার শব্দে মানুষের শ্রবণশক্তি নষ্ট হয়ে যেতে পারে।

আফ্রিকার সিংহের ডাক পাঁচ মাইল দূর পর্যন্ত পৌঁছায়।

এক হাতির ডাক আরেক হাতি পাঁচ-ছয় মাইল দূর থেকে স্পষ্ট শুনতে পায়। হাতি মানুষের শ্রবণসীমার চেয়েও বেশি জোরে ডাকতে পারে। এদের হুংকারের মাত্রা ৮০ থেকে ৯০ ডেসিবেল।

পৃথিবীতে সবচেয়ে জোরে ‘হুংকার’ দিতে পারে নীল তিমি। স্বাভাবিক অবস্থায় এদের একটা ডাকে ১৮৮ ডেসিবেল মাত্রার শব্দ উৎপন্ন হয়। যেখানে সাধারণ একটা কনসার্টে উৎপন্ন হয় মাত্র ১০০ ডেসিবেল মাত্রার শব্দ। পুরুষ নীল তিমির ডাক ৫০০ মাইল দূর থেকেও শোনা যায়।

দক্ষিণ ও মধ্য আমেরিকার রেইন ফরেস্টে হাউলার মাংকি নামে একধরনের বানরের দেখা মেলে। চার ফুট উচ্চতার এই বানরের ডাক দুই মাইল পর্যন্ত ছড়িয়ে পড়ে।

দক্ষিণ আমেরিকায় বুলফ্রগ নামের এক প্রজাতির ব্যাঙ পাওয়া যায়। পুরুষ বুলফ্রগের ডাক আধা মাইল এলাকাজুড়ে শোনা যায়।

গহিন বনের মধ্যে মাঝেমধ্যে মানুষের হাসির শব্দ শোনা যায়। এমন হাসির শব্দের উৎস সাধারণত হায়েনার ডাক। এদের এই ডাকের শব্দ ৮ মাইল দূর থেকেও মানুষের কানে পৌঁছায়।

সূত্র: হাউ স্টাফ ওয়ার্কস ও লিস্ট ভার্স ডটকম