সে এক বিরাট ইতিহাস

ইতিহাস বাসের ছবিটি দেখতে দেখতে ইতিহাসবিষয়ক কয়েকটি কৌতুক পড়ুন। সঙ্গে বোনাস হিসেবে থাকছে হুমায়ূন আহমেদের নাটকের সংলাপ—সে এক বিরাট ইতিহাস...

ছুটে চলেছে ‘সে এক বিরাট ইতিহাস’
ছবি: সাবিনা ইয়াসমিন, ধানমন্ডি ২৭, ঢাকা

প্রথম কৌতুক

প্রশ্ন: গুহামানবদের জন্য স্কুলের পড়ালেখা সহজ ছিল কেন?

উত্তর: কারণ, তাদের পড়ার মতো কোনো ইতিহাস ছিল না।

মন্তব্য: এই কৌতুক যিনি বানিয়েছেন, গুহামানবদের সম্পর্কে তাঁর কোনো ধারণাই ছিল না। গুহামানবরা পড়াশোনা করত না, স্কুল আসবে কোত্থেকে!

মন্তব্যের ওপর মন্তব্য: কৌতুকে সব সম্ভব। এখানে যৌক্তিকতা খোঁজা অনর্থক।

দ্বিতীয় কৌতুক

বাবু বলছে তার মাকে, ‘মা, আমার জন্মদিনে বন্ধুদের সঙ্গে আমাদের ইতিহাস স্যারকেও দাওয়াত কোরো।’

মা বললেন, ‘কেন?’

বাবু বলল, ‘আমার জন্মদিনটা স্যারের জানা দরকার। আশা করি জন্মদিন আর সালটা জানলে তিনি অন্তত আমার জন্মের আগে কী কী ঘটেছিল, এসব প্রশ্ন করা বন্ধ করবেন।’

মন্তব্য: এই কৌতুক যিনি বানিয়েছেন, তিনি নিজের শিকড় অস্বীকার করেন। এসব লোক সমাজের কীট...!

মন্তব্যের ওপর মন্তব্য: এটা ঠিক, ইতিহাস আমাদের পড়তেই হবে। তবে কৌতুকে ছাড় দেওয়া যায়। নাহলে কৌতুক হবে কী করে?

তৃতীয় কৌতুক

গৃহকর্তা জানতে চাইলেন, ‘আচ্ছা মাস্টার সাহেব, ছেলেটা ইতিহাসে কেমন করছে? আমি আবার ইতিহাসে কোনো দিনই ভালো করতে পারতাম না।’

গৃহশিক্ষক মুচকি হাসলেন, ‘ইতিহাসের পুনরাবৃত্তি হচ্ছে।’

মন্তব্য: অবিশ্বাস্য এক দৃশ্যপট। কারণ, আজকালকার জমানায় গৃহকর্তার মতো সত্যভাষী নেই, যিনি নিজের অতীত অক্ষমতার কথা অকপটে স্বীকার করবেন। একইভাবে গৃহশিক্ষকের মতো স্পষ্টভাষীও বিরল।

মন্তব্যের ওপর মন্তব্য: ভাই, কৌতুকটা মজার ছিল কি না, বলেন...! এত দোষ ধরেন কেন?

চতুর্থ কৌতুক

অধ্যাপক: এই যে ছেলে, তুমি আমার ক্লাসে কিছুতেই ঘুমাতে পারো না।

ছাত্র: পারি স্যার, আপনি একটু আস্তে লেকচার দিলেই পারি।

মন্তব্য: এরাই আসলে বর্তমান প্রজন্ম। রাবিশ।

মন্তব্যের ওপর মন্তব্য: এই প্রজন্মকে বকা দিয়ে কী লাভ! কিছুক্ষণ আগেই না স্পষ্টভাষীর প্রশংসা করলেন! ছেলেটা হয়তো সত্য কথাই বলেছে...!

পঞ্চম কৌতুক

ইতিহাস পড়াচ্ছিলেন শিক্ষক। হঠাৎ খেয়াল করলেন এক ছাত্র ঘুমাচ্ছে। তিনি রেগে গিয়ে তাকে ডেকে তুললেন—

: তুমি কতক্ষণ ধরে ঘুমাচ্ছ?

: স্যার, ষোড়শ শতাব্দী থেকে।

মন্তব্য: আর কোনো মন্তব্য করতে চাই না। যথেষ্ট।

মন্তব্যের ওপর মন্তব্য: বিষয়টা কিন্তু ইতিহাস হয়ে গেল! এবার তাহলে নন্দিত কথাশিল্পী হুমায়ূন আহমেদের ‘নিমফুল’ নাটকের কিছু সংলাপ শুনুন—

: ডাকাত মনারে ধরলা ক্যামনে?

: সে এক বিরাট ইতিহাস। আমার ঘরে ছিল না কেরোসি।

পরিবার বলল যে কেরোসি আইন্ন্যা দাও।

আমি বললাম, গত হাটে এক পোয়া কেরোসি আনলাম, আর আজ বলতেছ কেরোসি নাই, বিষয় কী?

স্ত্রী বলল, আমি কি আপনার কেরোসি খাইছি?

আমার উঠল রাগ, বেজায় রাগ।

: রাগ উঠারই কথা! তারপর?

কেরোসির বোতল হাতে রওনা দিলাম। পথে সোলেমানের সাথে দেখা।

সোলেমান বলল, চাচাজি কই যান?

আমি বললাম কেরোসি কিনতে যায়, তুই চল আমার সাথে, স্টলে চা খাওয়ামু।

সোলেমান বলল, জি, আচ্ছা।

তারপর আমরা রওনা দিলাম...

: সোলেমান? সোলেমানটা কে?

: সে আমার ভাইস্তা।

: তুমি দেখি লম্বা গফ শুরু করলা!

: আমি বলতেছি, বিরাট ইতিহাস...