৬০ বছর পরও যত্নে আছে নিক্সনের আধখাওয়া স্যান্ডউইচ

মুরগির ডিম থেকে শুরু করে গরুর মাংস, ফ্রিজে কত কিছু থাকে। স্টিভ জেনের ফ্রিজে আছে প্রয়াত মার্কিন প্রেসিডেন্ট রিচার্ড নিক্সনের আধখাওয়া স্যান্ডউইচ! শিরোনামেই জেনেছেন, সেটির বয়স নেহাত কম নয়; গত বছরের সেপ্টেম্বরে ৬০ বছর পূর্ণ হলো। স্টিভ জেন যুক্তরাষ্ট্রের ৩৭তম প্রেসিডেন্টের আধখাওয়া স্যান্ডউইচটি সংগ্রহ করার গল্প বলেছেন একাধিক সংবাদমাধ্যমে। বিস্তারিত পড়ুন এখানে...

বাফেলো বারবিকিউ স্যান্ডউইচে কামড় বসিয়েছেন রিচার্ড নিক্সন
হেরাল্ড অ্যান্ড রিভিউ

১৯৬০ সালের ২২ সেপ্টেম্বর তৎকালীন মার্কিন ভাইস প্রেসিডেন্ট নিক্সন গিয়েছিলেন ইলিনয়ের সালিভান শহরে। প্রেসিডেন্টের নির্বাচনী প্রচারণায় অংশ নিতে গিয়ে বক্তব্য দেওয়ার আগে হালকা জলপানের জন্য বসেছিলেন খাবার টেবিলে। পাতে দেওয়া হয়েছিল বাফেলো বারবিকিউ স্যান্ডউইচ, সঙ্গে কোমল পানীয়। ঠিক পেছনেই দাঁড়িয়ে ছিল ১৪ বছর বয়সী স্কাউট সদস্য স্টিভ জেন।

রিচার্ড নিক্সন স্যান্ডউইচে কয়েকটা কামড় বসিয়েই ‘বাহ, খুব ভালো স্যান্ডউইচ!’ বলে উঠে পড়েছিলেন টেবিল থেকে। খেতে ভালো হলেও পুরোটা শেষ করার সময় কোথায়! যাহোক, খাবার টেবিল থেকে ওঠার পর সবাই ভাইস প্রেসিডেন্টের পিছু নিলেও ঠায় দাঁড়িয়ে ছিল কিশোর স্টিভ জেন। নিক্সনের চেয়ে তাঁর আধখাওয়া স্যান্ডউইচটাই যে মনোযোগ কেড়ে নিয়েছে ততক্ষণে।

যুক্তরাষ্ট্রের হেরাল্ড অ্যান্ড রিভিউ পত্রিকাকে স্টিভ জেন বলেছেন, ‘তিনি (রিচার্ড নিক্সন) উঠে যাওয়ার পর পিকনিক টেবিলের ওপর চোখ পড়ল। সবাই চলে গেছে আর আধখাওয়া স্যান্ডউইচটা পড়ে আছে কাগজের প্লেটের ওপর। চারপাশে তাকিয়ে ভাবলাম, এটা কেউ না নিলে আমি নিয়ে যাব।’

রিচার্ড নিক্সনের আধখাওয়া স্যান্ডউইচ হাতে স্টিভ জেন
হেরাল্ড অ্যান্ড রিভিউ

কে আর আধখাওয়া স্যান্ডউইচ নিয়ে মাথা ঘামাবে! কাজেই বেশিক্ষণ আর অপেক্ষা করতে হয়নি স্টিভ জেনকে। চট করে স্যান্ডউইচটি তুলে নিয়ে চেপে বসেন সাইকেলে। একটানে ছুটে যান বাড়িতে। এর পরের ঘটনা শুনুন তাঁর মুখে, ‘দরজা অবধি গিয়ে হাঁকডাক শুরু করলাম, “মা, নিক্সনের কামড় দেওয়া একটা স্যান্ডউইচ পেয়েছি আমি।” মা তো বেজায় অবাক, “তো এটা দিয়ে কী করতে বলছ আমাকে?” আমি বললাম, “ফ্রিজে রেখে দাও।”’

ছেলের আবদারে মা ওই আধখাওয়া স্যান্ডউইচ প্লাস্টিকে মুড়ে আপেল-সসের বোতলে ঢুকিয়ে রেখে দিলেন ফ্রিজে। সেই যে রেখেছেন, আজও তা বহাল তবিয়তে আছে। এর মধ্যে এই আধখাওয়া স্যান্ডউইচের কথা বিশ্বব্যাপী জানাজানি হয়েছে পত্রপত্রিকার কল্যাণে। ১৯৮৮ সালে জনি কারসনের টুনাইট শোতেও হাজির হয়েছিলেন স্টিভ জেন। তাঁর কথা, ‘যত দিন বেঁচে আছি, তত দিন “যত্নে রেখো, ফেলে দিয়ো না” লেবেল সাঁটানো ওই স্যান্ডউইচের কন্টেইনার আমার ফ্রিজেই থাকবে।’

সূত্র: ডেইলি মেইল, হেরাল্ড অ্যান্ড রিভিউ