সাধুদের খোজা করে রাখতেন রাম রহিম!

রাম রহিম
রাম রহিম

দুই নারী ভক্তকে ধর্ষণের দায়ে ১০ বছরের কারাদণ্ডাদেশ পাওয়া কথিত ধর্মগুরু রাম রহিমের ডেরায় খোজা বাহিনী আছে। ডেরার ৫০০ সাধুর মধ্যে ১৭৫ জনের লিঙ্গচ্ছেদ করে এই খোজা বাহিনী তৈরি করা হয়। খোজা বাহিনীর দায়িত্বের মধ্যে ছিল বাবার আবাসিক সাধ্বীদের পাহারা দেওয়া।

আজ সোমবার ভারতের বাংলা দৈনিক আনন্দবাজারের প্রতিবেদনে বলা হয়, রাম রহিমের ডেরার সাবেক সাধু গুরুদাস সিংহ আদালতে দেওয়া সাক্ষ্যে এসব কথা বলেছেন।

সাবেক ওই সাধুর দাবি, তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী অটল বিহারি বাজপেয়ির কাছে এক সাধ্বীর চিঠি প্রকাশের কারণে দেশ সেবক পত্রিকার সাংবাদিক রামচন্দ্র ছত্রপতিকে হত্যার পরিকল্পনা করেন রাম রহিম। এই হত্যার অভিযোগে গ্রেপ্তার দুই ব্যক্তি নির্মল ও কুলদীপ ওই ডেরার সাধু ছিলেন। ডেরায় তাঁদেরও লিঙ্গচ্ছেদ করা হয়েছিল।

প্রতিবেদনে বলা হয়, সাংবাদিক রামচন্দ্র ছত্রপতির বন্ধু আইনজীবী লেখরাজ ঢোট আনন্দবাজারকে ফোনে এসব তথ্য জানিয়েছেন।

আইনজীবী লেখরাজ ঢোট বলেন, ডেরার সাবেক সাধু গুরুদাস আদালতে বলেছেন, ১৯৯৬ থেকে ২০০২ সাল পর্যন্ত তিনি ডেরায় ছিলেন। ডেরায় রাম রহিমের একান্ত কক্ষগুলো পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার দায়িত্বে ছিলেন তিনি। এ কারণে সব ঘরেই তাঁর যাতায়াত ছিল। একদিন তিনি শোনেন, নির্মল ও কুলদীপকে বাবা রাম রহিম সাংবাদিক রামচন্দ্রকে হত্যার নির্দেশ দিচ্ছেন। গুরুদাস আদালতে আরও বলেছেন, রাম রহিমের এমন অনাচার দেখে ডেরার অনেক সাধুই পালাতেন। কিন্তু কোনো সাধু যাতে সংসারে ফিরে যেতে না পারেন, এ কারণেই তাঁদের লিঙ্গচ্ছেদ করে খোজা করে রাখা হতো। এই খোজা বাহিনী রাম রহিমের আবাসিক সাধ্বীদের থাকার জায়গা পাহারা দিতেন। এ ছাড়া তাঁদের শত্রু মোকাবিলার কাজেও রাখা হতো। একবার গোরা নামের এক সাধু এ ঘটনার প্রতিবাদ করেছিলেন। পরে তিনি নিখোঁজ হন।

প্রতিবেদনে বলা হয়, গুরুদাস হংসরাজ নামে ডেরার এক সাবেক সাধুকেও আদালতে হাজির করা হয়েছিল। মেডিকেল পরীক্ষা-নিরীক্ষায় তাঁর লিঙ্গচ্ছেদ করার প্রমাণ পাওয়া যায়।

তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী অটল বিহারি বাজপেয়ির কাছে লেখা চিঠিতে এক সাধ্বী বলেছিলেন, ডেরায় কয়েক শ মেয়ে প্রতিদিন ১৮ ঘণ্টা করে রাম রহিমের সেবা করেন। ডেরায় মেয়েদের ধর্ষণ করেন ডেরা মহারাজ (রাম রহিম)।