বাণিজ্যযুদ্ধ এখন বাস্তবতা: ফ্রান্সের অর্থমন্ত্রী

আর্জেন্টিনার রাজধানী বুয়েনস এইরেসে বিশ্বের শীর্ষ অর্থনীতির ২০ দেশের অর্থমন্ত্রী ও কেন্দ্রীয় ব্যাংকারদের দুই দিনব্যাপী সম্মেলন শুরু হয় গতকাল শনিবার। ছবি: রয়টার্স
আর্জেন্টিনার রাজধানী বুয়েনস এইরেসে বিশ্বের শীর্ষ অর্থনীতির ২০ দেশের অর্থমন্ত্রী ও কেন্দ্রীয় ব্যাংকারদের দুই দিনব্যাপী সম্মেলন শুরু হয় গতকাল শনিবার। ছবি: রয়টার্স

‘বাণিজ্যযুদ্ধ এখন বাস্তবতা’—এমনটাই মনে করছেন ফ্রান্সের অর্থমন্ত্রী ব্রুনো ল্য মেয়ার। গতকাল শনিবার আর্জেন্টিনায় অনুষ্ঠিত হতে যাওয়া জি-২০-ভুক্ত দেশগুলোর অর্থমন্ত্রীদের এক সম্মেলনের আগে এমন মন্তব্য করেন তিনি। বিবিসি অনলাইনের এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়।

গতকাল আর্জেন্টিনার রাজধানী বুয়েনস এইরেসে বিশ্বের শীর্ষ অর্থনীতির ২০ দেশের অর্থমন্ত্রী ও কেন্দ্রীয় ব্যাংকারদের দুই দিনব্যাপী সম্মেলন শুরু হয়েছে।

ব্রুনো ল্য মেয়ার বলেন, একতরফা শুল্ক প্রয়োগের বর্তমান মার্কিন বাণিজ্য নীতি ‘জঙ্গলের আইনের ওপর ভিত্তি করে’ তৈরি। এএফপিকে দেওয়া ওই সাক্ষাৎকারে ফরাসি অর্থমন্ত্রী আরও বলেন, ‘জঙ্গের আইন নিয়ে বিশ্ব বাণিজ্যের ভিত্তি গড়ে উঠতে পারে না। একতরফা শুল্ক বাড়ানো তো জঙ্গলের আইন।’ তিনি বলেন, ‘জঙ্গলের আইন, ক্ষমতাবানদের আইন, এটি বিশ্ব বাণিজ্য সম্পর্কের ভবিষ্যৎ হতে পারে না।’

মেয়ার বলেন, বাণিজ্যযুদ্ধ এখন একটি বাস্তবতা। যুক্তরাষ্ট্র যদি তাদের অ্যালুমিনিয়াম ও ইস্পাতের ওপর থেকে শুল্ক প্রত্যাহার না করে, তাহলে তাদের সঙ্গে মুক্ত বাণিজ্য চুক্তির বিষয় বিবেচনা করবে না ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ)।

তবে মেয়ারের মন্তব্যের বিপরীতে নিজেদের সাফাই গেয়েছেন মার্কিন অর্থমন্ত্রী স্টিভেন মুচিন। তিনি ইইউ ও চীনের প্রতি আহ্বান জানান, তারা যেন তাদের বাজার উন্মুক্ত করে দিয়ে মুক্ত প্রতিযোগিতার সুযোগ রাখে।

গত সপ্তাহে এক মন্তব্যে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেন, ইইউ যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্যের জন্য শত্রু। এ ছাড়া গত শুক্রবার প্রকাশিত এক সাক্ষাৎকারে চীন থেকে আমদানি করা সব পণ্যের ওপর শুল্ক আরোপ করার হুমকি দিয়েছেন ট্রাম্প। তিনি বলেন, প্রয়োজনে চীন থেকে যুক্তরাষ্ট্রে আমদানি করা সব পণ্যের ওপর শুল্ক আরোপ করা হবে। যুক্তরাষ্ট্রের সিএনবিসি টিভি চ্যানেলকে ওই সাক্ষাৎকার দেন ট্রাম্প। তিনি বলেন, ‘আমি ৫০০ বিলিয়ন ডলার মূল্যের পণ্যের ওপরই শুল্ক আরোপ করতে প্রস্তুত।’ ট্রাম্প ৫০০ বলতে চীন থেকে আমদানি করা সব পণ্যের কথা বুঝিয়েছেন। সাক্ষাৎকারে ট্রাম্প বলেন, ‘আমি রাজনীতির খাতিরে এটা করছি না; বরং আমাদের দেশের স্বার্থ রক্ষার জন্য এটা করছি। দীর্ঘদিন ধরেই আমরা চীনের প্রতারণার শিকার হচ্ছি।’

বর্তমানে ইইউভুক্ত ২৮টি দেশ ও চীনের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের বড় বাণিজ্য-ঘাটতি রয়েছে। এ অবস্থায় চলতি মাসের শুরুতে চীন থেকে আমদানি করা ৩ হাজার ৪০০ কোটি ডলার মূল্যের পণ্যের ওপর ২৫ শতাংশ শুল্ক আরোপের সিদ্ধান্ত কার্যকর করেন ট্রাম্প। পাল্টা জবাবে চীনও আমদানি করা মার্কিন পণ্যের ওপর শুল্ক আরোপের ঘোষণা দেয়।