বাহরাইনে ইমাম খুন, বাংলাদেশি মুয়াজ্জিন গ্রেপ্তার

ইমাম আবদুল জলিল। ছবি: সংগৃহীত
ইমাম আবদুল জলিল। ছবি: সংগৃহীত

বাহরাইনের আসকর নামক স্থানে লাশ গুম করতে গিয়ে স্ক্যাব ইয়ার্ডে কর্মরত দুই শ্রমিকের তৎপরতায় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর হাতে ধরা পড়েন বাংলাদেশের কুমিল্লা জেলার মুয়াজ্জিন কামাল উদ্দীন (৩৫)।

৫ আগস্ট বাহরাইনের আসকর এলাকার স্ক্যাব ইয়ার্ডের পাশে বস্তাবন্দী কিছু একটা ফেলে যেতে দেখে সন্দেহ হয় স্ক্যাব ইয়ার্ডে কর্মরত দুই শ্রমিকের। তাঁরা এসে ময়লার ব্যাগ ফেলে যাওয়া লোকটির কাছে জানতে চান, ব্যাগের ভেতর কী? তিনি প্রথমে জানান ব্যাগটি ময়লাভর্তি। একপর্যায়ে তাঁদের সন্দেহ হলে তিনি জানান, তার শিশু বাচ্চা মারা গেছে, তা ফেলে দিতে ব্যাগে ভর্তি করে নিয়ে এসেছেন। তাঁদের সন্দেহ আরও ঘনীভূত হলে তাঁরা পুলিশকে ফোন দেন এবং পুলিশ না আসা পর্যন্ত তাঁকে আটকে রাখেন। পুলিশ এসে ঘাতক মুয়াজ্জিন কামাল উদ্দীনকে গ্রেপ্তার করে এবং একই মসজিদের ইমাম আবদুল জলিল হামদের খণ্ডিত লাশ উদ্ধার করে। মুয়াজ্জিন কামাল উদ্দীন এবং মৃত ইমাম আবদুল জলিল হামদ উদ্ধারের স্থান থেকে প্রায় ৩০ কিলোমিটার দূরে মুহররকের সিদা মসজিদে কর্মরত ছিলেন। ৪ আগস্ট বাদ ফজর থেকে ইমাম আবদুল জলিল হামদ নিখোঁজ ছিলেন।

বাহরাইনের ইন্টেরিয়র মন্ত্রণালয় থেকে জানা যায়, গতকাল একটি খণ্ডিত লাশ উদ্ধার হয় বাহরাইনের আসকর স্ক্যাব ইয়ার্ডের মাজরা এলাকা থেকে।

মুয়াজ্জিন কামাল উদ্দীন। ছবি: সংগৃহীত
মুয়াজ্জিন কামাল উদ্দীন। ছবি: সংগৃহীত

এই মুয়াজ্জিনের বিরুদ্ধে বেশ কিছু অভিযোগ ইমামের কাছে গেলে তিনি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে (আল ওক্কাফ ) অভিহিত করেন। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে ঘাতক এ ঘটনা ঘটিয়ে থাকতে পারেন বলে ধারণা করা যাচ্ছে। উল্লেখ্য, বাহরাইনে প্রায় ৯০ শতাংশ বাংলাদেশি মুয়াজ্জিন সুনামের সঙ্গে দীর্ঘদিন থেকে কাজ করে যাচ্ছেন।

এই অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনায় বাংলাদেশি মুয়াজ্জিন ও বাহরাইনে বসবাসরত প্রবাসীদের মধ্যে উৎকণ্ঠার সৃষ্টি হয়েছে। এ ব্যাপারে বাংলাদেশ দূতাবাসের শ্রমসচিব শেখ তৌহিদুল ইসলাম প্রথম আলোকে জানান, ‘ঘটনাটি এমন এমটি সময় সংঘটিত যখন বাংলাদেশিদের প্রতি বাহরাইনিদের নেতিবাচক ধারণা পাল্টে যেতে শুরু করছিল। কারণ, বাংলাদেশ দূতাবাস গত কয়েক সপ্তাহে বাহরাইনের মিনিস্ট্রি অব ইন্টেরিয়রের সঙ্গে যৌথভাবে গুরুতর অপরাধী বাংলাদেশিদের ধরতে বিভিন্ন সফল অভিযান পরিচালনা করে আসছিল এবং বাংলাদেশি এলাকায় অপরাধপ্রবণতা থেকে সরে আসার আহ্বান সংবলিত বিভিন্ন লিফলেট ও পোস্টার বিতরণ করেছিল। বেশ কিছুদিন থেকে বাহরাইনে বাংলাদেশিদের সংকুচিত শ্রমবাজার সম্পর্কে তারা নতুন করে ভাবতে শুরু করছিল। এ সময় এই ঘটনা হয়তো তাদের ধারণা পাল্টে দিতে পারে। তবে আমাদের রাষ্ট্রদূত কে এম মমিনুর রহমান এ ব্যাপারে মিনিস্ট্রির সঙ্গে সার্বক্ষণিক যোগাযোগ রাখছেন এবং আমরা আশাবাদী বাহরাইন গভর্নমেন্ট বিষয়টিকে একটি বিচ্ছিন্ন ঘটনা হিসেবে বিবেচনায় নেবে এবং আমাদের লক্ষ্যে আমরা পৌঁছাতে পারব।’