অটল বিহারি বাজপেয়ি আর নেই

অটল বিহারি বাজপেয়ি
অটল বিহারি বাজপেয়ি

ভারতের সাবেক প্রধানমন্ত্রী অটল বিহারি বাজপেয়ি আর নেই। আজ বৃহস্পতিবার স্থানীয় সময় সন্ধ্যার দিকে দিল্লির একটি হাসপাতালে শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেন বিজেপির এই নেতা। তাঁর বয়স হয়েছিল ৯৩ বছর।

বার্তা সংস্থা এএফপি জানায়, ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি টুইট বার্তায় বলেছেন, ‘অটল জি মারা গেছেন। এটা আমার জন্য অপূরণীয় এক ক্ষতি। অটল জির অসাধারণ নেতৃত্ব ভারতকে একুশ শতকের শক্তিশালী, সমৃদ্ধ ও সমন্বিত এক দেশ গড়ার ভিত্তি গড়ে দিয়েছে।’

দিল্লির অল ইন্ডিয়া ইনস্টিটিউট অব মেডিকেল সায়েন্সেস (এআইআইএমএস) এক বিবৃতিতে জানায়, ‘অটল বিহারি বাজপেয়ি মারা গেছেন। গত ৩৬ ঘণ্টায় তাঁর শারীরিক অবস্থার মারাত্মক অবনতি ঘটে। তাঁকে লাইফ সাপোর্টে রাখা হয়। আমরা সর্বোচ্চ চেষ্টা করেছি। কিন্তু সব ব্যর্থ করে দিয়ে তিনি আজ চিরবিদায় নিলেন। তাঁর মৃত্যুতে পুরো জাতির সঙ্গে আমরাও শোকাহত।’

ভারতের তিনবারের প্রধানমন্ত্রী বাজপেয়ি অনেক দিন ধরেই অসুস্থ ছিলেন। তবে সম্প্রতি তাঁর শারীরিক জটিলতা বেড়ে যাওয়ায় তাঁকে নয় সপ্তাহ আগে এআইআইএমএসে ভর্তি করা হয়। গতকাল বুধবার থেকে তিনি লাইফ সাপোর্টে ছিলেন। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিসহ মন্ত্রী পরিষদের কয়েকজন সদস্যসহ স্বনামধন্য অনেকেই তাঁকে হাসপাতালে দেখতে যান।

১৯৯৬, ১৯৯৮, ১৯৯৯ সালে তিনবার প্রধানমন্ত্রী হিসেবে শপথ নিয়েছিলেন অটল বিহারি বাজপেয়ি। প্রথম দফায় ১৩ দিন, দ্বিতীয় দফায় ১৩ মাস আর তৃতীয় দফায় পূর্ণ মেয়াদ প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দেশের দায়িত্বভার সামলেছেন তিনি। ২০১৪ সালে মোদির সরকার ক্ষমতায় আসার পরে বাজপেয়িকে ভারতরত্ন সম্মাননা দেওয়া হয়।

একাধারে রাজনীতিক, দুর্দান্ত সাংসদ, কবি ও অসাধারণ বাগ্মী বাজপেয়ির জন্ম ১৯২৪ সালে গোয়ালিয়রে। বাবা কৃষ্ণবিহারী বাজপেয়ি ও মা কৃষ্ণা দেবী। ১৯৭৭ সালে জনতা পার্টি সরকারে মন্ত্রী হন তিনি। কিন্তু পরে সংঘপন্থী অন্য নেতাদের সঙ্গে বাজপেয়িও জনতা পার্টি ছেড়ে বেরিয়ে আসেন, গঠিত হয় ভারতীয় জনতা পার্টি। ১৯৮০ সালে প্রতিষ্ঠিত ভারতীয় জনতা পার্টির প্রথম সভাপতিও হন বাজপেয়ি। তার ১৬ বছর পরে প্রথমবার দেশের প্রধানমন্ত্রী হন। ২০০৪ সালের লোকসভা নির্বাচনে বিজেপি নেতৃত্বাধীন এনডিএ জোট পরাজিত হয়। পরাজয়ের দায় নিজের কাঁধে নিয়ে প্রধান বিরোধী দলনেতার পদ নেননি তিনি। পরে নিজেকে ক্রমশ সক্রিয় রাজনীতি থেকে দূরে সরিয়ে নেন।