রড বিঁধেছে বুকে, তবুও তিনি ফোনে

দীর্ঘ ১৩ ফুট লোহার পাত বুকে বিঁধে আছে। তবু তিনি মগ্ন মোবাইল ফোনে। ছবি: মিয়াওপাইতের ভিডিও থেকে নেওয়া
দীর্ঘ ১৩ ফুট লোহার পাত বুকে বিঁধে আছে। তবু তিনি মগ্ন মোবাইল ফোনে। ছবি: মিয়াওপাইতের ভিডিও থেকে নেওয়া

হঠাৎ ইয়া বড় একটা রড আপনার বুকে বিঁধে গেল! কী করবেন? চিৎকার করবেন? জ্ঞান হারিয়ে ফেলবেন? নাকি অন্য কিছু? 

যদি বলি আপনি মোবাইল চালাবেন! চটে যাবেন নাতো?

তাহলে শুনুন এমনই এক মোবাইল-আসক্ত ব্যক্তির কথা। ঘটনাটি গত সপ্তাহে চীনের লায়োনিং প্রদেশের লিয়াওয়াং শহরের। সেখানকার এক ব্যক্তি তাঁর প্রাইভেট কারটি চালাচ্ছিলেন। কিন্তু তিনি ছিলেন মোবাইলে মগ্ন। আর ব্যস, ঘটে গেল দুর্ঘটনা।

চীনা গণমাধ্যম সাংহাইইস্টের প্রতিবেদন বলছে, ওই ব্যক্তির গাড়ি হঠাৎ নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে রাস্তার নিরাপত্তাবেষ্টনীর (গার্ড রেল) সঙ্গে ধাক্কা খায়। আর এতে গার্ড রেলের একটি চওড়া পাত গাড়ির গ্লাস ভেদ করে তাঁর বুকের বাম পাশ ভেদ করে পেছন দিক দিয়ে বের হয়।

ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা লোহার সেই পাতের বাড়তি অংশ কেটে লোকটিকে উদ্ধার করছেন। ছবি: মিয়াওপাইতের ভিডিও থেকে নেওয়া
ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা লোহার সেই পাতের বাড়তি অংশ কেটে লোকটিকে উদ্ধার করছেন। ছবি: মিয়াওপাইতের ভিডিও থেকে নেওয়া

সাংহাইইস্টের প্রতিবেদনের বরাত দিয়ে ভারতীয় গণমাধ্যম এনডিটিভি বলছে, বুকে বিঁধে যাওয়া ওই পাতের দৈর্ঘ্য ছিল ১৩ ফুট। ভিডিওতে দেখা যায়, ওই পাতের বেশির ভাগ অংশ গাড়ির গ্লাসের সঙ্গে আটকে থাকে। এর ফলে ওই ব্যক্তি নড়াচড়াও করতে পারছিলেন না। কিন্তু ‘মেবাইল-আসক্ত’ ওই ব্যক্তি কোনো ধরনের চেঁচামেচি না করে ঘাঁটতেই থাকলেন মোবাইল।

ভিডিওতে আরও দেখা যায়, বেশ কিছু সময় পর ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা ঘটনাস্থলে আসেন এবং লোহা কাটার বৈদ্যুতিক মেশিন দিয়ে পাতের বাড়তি অংশ কেটে আলাদা করেন। এরপর তাঁকে অ্যাম্বুলেন্সে করে হাসপাতালে নেওয়া হয়। কারণ আসল পাততো তাঁর শরীরেই বিঁধে আছে।

বেচারা! অ্যাম্বুলেন্সে তোলা হচ্ছে। খণ্ডিত লোহার অংশ তখনো শরীরে। কিন্তু তিনি ব্যস্ত মোবাইল ফোনে। ছবি: মিয়াওপাইতের ভিডিও থেকে নেওয়া
বেচারা! অ্যাম্বুলেন্সে তোলা হচ্ছে। খণ্ডিত লোহার অংশ তখনো শরীরে। কিন্তু তিনি ব্যস্ত মোবাইল ফোনে। ছবি: মিয়াওপাইতের ভিডিও থেকে নেওয়া

চীনের ভিডিও স্ট্রিমিং ওয়েবসাইট মিয়াওপাইতে দেখা যায়, ওই ব্যক্তিকে অ্যাম্বুলেন্সে তোলার সময়ও তিনি মোবাইল স্ক্রল করছেন। অথচ তাঁর শরীর থেকে রক্ত ঝরছে। এই ঘটনার ভিডিও চীনের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়ে। শুধু মিয়াওপাইতের ওয়েবসাইট থেকেই তা দেখা হয়েছে ৬০ কোটি ৪০ লাখবার। সাংহাইইস্ট প্রতিবেদনটি করেছিল ৩০ আগস্ট। সে হিসাবে এখন পর্যন্ত ছড়িয়ে পড়া এই ভিডিওর দর্শকসংখ্যা আরও বেড়ে গেছে।

এনডিটিভির প্রতিবেদনে বলা হচ্ছে, চীনে এ ধরনের মোবাইল-আসক্তি এটাই প্রথম নয়। এর আগে গত বছর এক নারী স্কুটিচালক ৬ ফুট গভীর একটি ম্যানহোলে পড়ে যান। কিন্তু তখনো তিনি বুঁদ হয়ে ছিলেন মোবাইলে।