সেনাবাহিনীকে মিয়ানমারের রাজনীতি থেকে সরানো উচিত

বুথিডং জেটিতে মিয়ানমার সেনাবাহিনী। ছবি: রয়টার্স
বুথিডং জেটিতে মিয়ানমার সেনাবাহিনী। ছবি: রয়টার্স

সংখ্যালঘু মুসলিম রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে গণহত্যার জন্য মিয়ানমারের শীর্ষ জেনারেলদের বারবার অভিযুক্ত করা হয়েছে জাতিসংঘের তদন্ত প্রতিবেদনে। রোহিঙ্গা সংকটে ক্ষয়ক্ষতির বিষয়ে আজ মঙ্গলবার প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে জাতিসংঘের তদন্তকারীরা বলেন, ‘রাজনীতি থেকে মিয়ানমারের সেনাবাহিনীকে সরানো উচিত।’

জাতিসংঘের ৪৪৪ পৃষ্ঠার প্রতিবেদনে বলা হয়, সেনাবাহিনীর শীর্ষ নেতৃত্ব পরিবর্তন করা উচিত। সেই সঙ্গে দেশটির প্রশাসনের ওপর বাহিনীটি যেন আর কোনো ধরনের প্রভাব না রাখে, সেই ব্যবস্থা করা উচিত।

সংবাদ সংস্থা এএফপির প্রতিবেদনে বলা হয়, বৌদ্ধ জাতিগোষ্ঠী সংখ্যাগরিষ্ঠ দেশটির শাসনকর্তা কার্যত মিয়ানমারের সেনাবাহিনী। পার্লামেন্টে এক-চতুর্থাংশ আসন সেনাবাহিনীর দখলে এবং তিনটি মন্ত্রণালয়ও তাদের নিয়ন্ত্রণে। গত ২০১১ সালে দেশটিতে রাজনৈতিক সংস্কার শুরু হওয়ার পরও তারা দাপট ধরে রেখেছে।

প্রতিবেদনে বলা হয়, দেশটির বেসামরিক নেতৃত্বকে মিয়ানমারের রাজনৈতিক জীবন থেকে সেনাবাহিনীকে ফের অপসারণের চেষ্টা করা উচিত। প্রকৃত নিরাপত্তা হুমকির জন্য সেনাবাহিনীর কার্যপদ্ধতি ‘ধারাবাহিকভাবে এবং স্পষ্টত’ বেঠিক ছিল। সেনা অভিযানে ১০ হাজার মানুষ নিহত হয়েছে এবং সম্ভবত এই তথ্য রক্ষণশীল।

১৮ মাসের পর্যবেক্ষণ, ৮৫০ জনের বেশি মানুষের সাক্ষাৎকার, গণহত্যার বিষয়ে মিয়ানমারের সেনাপ্রধান জেনারেল মিন অং হ্লাইয়াংসহ শীর্ষ কর্মকর্তাদের কর্মকাণ্ড নিয়ে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের তদন্তের ভিত্তিতে প্রতিবেদনটি করেছে জাতিসংঘ।

চলমান নেতৃত্ব পরিবর্তনে সেনাবাহিনীর পুনঃসংস্কার এবং সেই প্রক্রিয়া শুরু হওয়া উচিত বলেও মন্তব্য করেন জাতিসংঘের তদন্তকারী কর্মকর্তারা।

প্রসঙ্গত, ২০১৭ সালে ২৫ আগস্ট থেকে মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে সন্ত্রাসী দমনের নামে দেশটির সেনাবাহিনী সহিংস অভিযান শুরু করে। এতে নির্বিচারে রোহিঙ্গাদের হত্যার অভিযোগ ওঠে। এসব হত্যাকাণ্ডের ঘটনাকে ‘জাতিগত নিধন’ হিসেবে অভিহিত করে জাতিসংঘ। সেনাবাহিনী ও বৌদ্ধ ভিক্ষুদের দমন-পীড়নের মুখে মিয়ানমার থেকে পালিয়ে সাত লক্ষাধিক রোহিঙ্গা বাংলাদেশে ঠাঁই নেয়।