এনআরসি নিয়ে পথে বিজেপি, পাল্টা প্রচারে তৃণমূল

বিজেপি নেতা লকেট চট্টোপাধ্যায়। ছবি: ভাস্কর মুখার্জি
বিজেপি নেতা লকেট চট্টোপাধ্যায়। ছবি: ভাস্কর মুখার্জি

সামনে ভারতের লোকসভা নির্বাচন। এত দিন পশ্চিমবঙ্গে বিজেপি রাজনৈতিক হিসাব-নিকাশে চতুর্থ স্থানে ছিল। কিন্তু বাম দলের বিদায় ও কংগ্রেসের অবস্থা দুর্বল হয়ে পড়ায় এবার পশ্চিমবঙ্গে দ্বিতীয় স্থানে উঠে এসেছে বিজেপি। এই উত্থানে তারা আত্মসন্তুষ্টি নিয়ে লোকসভা নির্বাচনে মাঠে নেমে পড়েছে।

গত শনিবার থেকে এনআরসি নিয়ে মাঠে নেমে পড়েছে বিজেপি। গ্রামগঞ্জ চষে বেড়াচ্ছে। আসন্ন লোকসভা নির্বাচনে বিজেপি কাজে লাগাতে চায় এনআরসি বা জাতীয় নাগরিক নিবন্ধনকে। আগামী ১৫ দিন ‘টি-টোয়েন্টি ফর্মুলা’ নিয়ে মাঠে থাকবে তারা। ২০ জন করে একটি দল এলাকায় এলাকায় বাড়িতে বাড়িতে গিয়ে এনআরসির পক্ষে প্রচার চালাচ্ছে। সাধারণ মানুষকে উদ্বাস্তু, শরণার্থী আর অনুপ্রবেশকারীর সংজ্ঞা কী—এই ধারণা দিচ্ছে তারা। এনআরসি চালু হলে কতটা উপকার পাবেন রাজ্যের উদ্বাস্তু আর শরণার্থীরা, কী অবস্থা হবে অনুপ্রবেশকারীদের, তাদের আর এই রাজ্যে স্থান দেওয়া হবে না—এসব যুক্তি নিয়ে প্রচারে নেমে পড়েছে বিজেপির কর্মী বাহিনী। ২৬ সেপ্টেম্বর পশ্চিমবঙ্গ সচিবালয় নবান্নেও অভিযান চালাবে তারা।

তৃণমূলও নেমে পড়েছে প্রচারে। তারা বোঝাতে চাইছে এনআরসির ভয়াবহ দিকটি। চরম সাম্প্রদায়িকতা, মানুষে মানুষে বিভেদ সৃষ্টি করবে এনআরসি—এমনটা মনে করে তৃণমূল। প্রচারে চালাচ্ছে তৃণমূলের নারী বাহিনী। পঞ্চায়েত নির্বাচনে যেসব নারী প্রার্থী জয়ী হয়েছেন, তাঁদের নিয়ে গড়া হয়েছে এই দল। গ্রামে গ্রামে গিয়ে এনআরসির নেতিবাচক দিক এবং মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নারী উন্নয়নের বিভিন্ন দিক তুলে ধরছেন তাঁরা। নারী ভোটার পেতেই তৃণমূলের নতুন পরিকল্পনা এটি।

তৃণমূলের এই নারী বাহিনী জনগণকে বলছে, এই রাজ্যে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ই পঞ্চায়েতের ৫০ শতাংশ আসন সংরক্ষণ করেছেন নারীদের জন্য। নারী উন্নয়নের জন্য চালু করেছে ‘কন্যাশ্রী’, ‘সবুজ সাথী’ প্রকল্প। আর শুধু কন্যাশ্রী প্রকল্পের জন্য চলতি বছরে বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে পাঁচ হাজার কোটি রুপি। অথচ কেন্দ্রীয় সরকার এই ১২৫ কোটির দেশে ‘বেটি বাঁচাও ও বেটি পড়াও’ ও ‘উজ্জ্বলা যোজনার’ জন্য বরাদ্দ করেছে মাত্র ১০০ কোটি রুপি! পশ্চিমবঙ্গে ৬০ লাখ নারীকে কন্যাশ্রী প্রকল্পের আওতায় আনা হয়েছে। মেয়েদের বিয়ের জন্যও চালু করা হয়েছে ‘রূপশ্রী’ প্রকল্প।

তৃণমূলের এই প্রচারের জবাব দিয়েছেন বিজেপির পশ্চিমবঙ্গের মহিলা মোর্চার সভাপতি লকেট চট্টোপাধ্যায়। তিনি বলেছেন, তৃণমূল আসলে নারীদের ভাঁওতা দিচ্ছে। কেন্দ্রের সব উন্নয়ন প্রকল্প সব রাজ্যেই পৌঁছাচ্ছে। আর এ রাজ্যে তৃণমূল কেন্দ্রীয় সরকারের নানা উন্নয়ন প্রকল্প মানুষের কাছে পৌঁছাতে দেয় না। সরকারি অফিসে গেলে আগে তাঁরা জানতে চান, তাঁরা তৃণমূল করেন কি না।