বাপ-দাদা ব্যর্থ, ছেলে পেলেন হীরা!

মতিলাল প্রজাপতির খুঁজে পাওয়া হীরা এটি। এর ওজন ৪২ ক্যারেটের বেশি। হীরাটির বাজারমূল্য কমপক্ষে দেড় কোটি রুপি। ছবি: সংগৃহীত
মতিলাল প্রজাপতির খুঁজে পাওয়া হীরা এটি। এর ওজন ৪২ ক্যারেটের বেশি। হীরাটির বাজারমূল্য কমপক্ষে দেড় কোটি রুপি। ছবি: সংগৃহীত

ভারতের মধ্যপ্রদেশের খনি এলাকা পান্না। সেখানে এক টুকরো জমি লিজ নিয়েছিলেন মতিলাল প্রজাপতির দাদা। লিজ নেওয়ার পর থেকে জমিতে খোঁড়াখুঁড়ি শুরু করেছিলেন তিনি। হীরার খনির জন্য পান্না বিখ্যাত হওয়ায় মতিলালের দাদা ভেবেছিলেন—যদি এক টুকরো পাওয়া যায়! কিন্তু দিন যায়, মাস যায়, বছর যায়, হীরা আর মেলে না।

মতিলালের বাবাও বংশ পরম্পরায় খোঁড়াখুঁড়ি জারি রেখেছিলেন। তাঁর ভাগ্যেও শিকে ছেঁড়েনি। শেষে কপাল খুলল মতিলালের। ৫০ বছর বয়সী এই দিনমজুর মাটি খুঁড়ে পেয়েছেন ৪২ ক্যারেটের বেশি ওজনের এক হীরার টুকরা। এর বাজারমূল্য কমপক্ষে দেড় কোটি রুপি।

ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভির খবরে বলা হয়েছে, গত মঙ্গলবার মতিলাল প্রজাপতি এই হীরার টুকরাটি পান। প্রায় দেড় মাস আগে মতিলাল ও তাঁর ভাই রঘুবীর মাটি খোঁড়ার কাজ শুরু করেছিলেন। পান্নার কৃষ্ণ কল্যাণপুর এলাকায় এই হীরা পাওয়া গেছে।

১৯৬১ সালের পর পান্না থেকে পাওয়া সবচেয়ে বড় আকারের হীরার টুকরো এটি। পান্না থেকে উত্তোলন করা সব হীরার মধ্যে ওজনের দিক থেকে এটি দ্বিতীয় স্থানে আছে। ১৯৬১ সালের ১৫ অক্টোবর পান্না এলাকার সবচেয়ে বড় হীরাটি পাওয়া গিয়েছিল। মাটি খুঁড়ে সেটি পেয়েছিলেন রসুল মোহাম্মদ নামের এক ব্যক্তি। তাঁর বাড়ি ছিলেন মাতুয়াতোলা গ্রামে। ওই হীরাটির ওজন ছিল প্রায় ৪৪ ক্যারেট।

মতিলাল প্রজাপতি। ছবি: সংগৃহীত
মতিলাল প্রজাপতি। ছবি: সংগৃহীত

মতিলাল প্রজাপতি বলেন, ‘আমি খুব খুশি। প্রায় দেড় মাসের কঠোর পরিশ্রমের পর আমি একটি হীরার টুকরা পেয়েছি। এর দাম কোটি টাকারও বেশি। ৫ লাখ রুপির দেনা আছে আমার। সেটি শোধ করতে হবে। এই হীরা আমার সব সমস্যার সমাধান করবে।’

মতিলাল জানান, মোট তিন প্রজন্ম ধরে লিজ নেওয়া জমিতে হীরা খুঁজছেন তাঁরা। তিনি বলেন, ‘আমার দাদা থেকে আমি পর্যন্ত-মোট তিনটি প্রজন্ম খনি এলাকার জমি লিজ নিয়েছি। কিন্তু এতদিন আমরা কোনো হীরা খুঁজে পাইনি। আমি আমার সন্তানদের পড়াশোনায় এই অর্থ খরচ করব।’

যদিও বিশেষজ্ঞরা হীরার টুকরাটির আক্ষরিক মূল্য নির্ধারণ করতে পারেননি, তবে ধারণা করা হচ্ছে যে, এর দাম থাকবে দেড় থেকে আড়াই কোটি রুপির মধ্যে। এরই মধ্যে মাটি খুঁড়ে পাওয়া হীরাটি সংশ্লিষ্ট সরকারি কর্মকর্তার কাছে হস্তান্তর করেছেন মতিলাল। পরে এই হীরা নিলামে উঠবে। নিলামে ওঠা মূল্য থেকে সরকারি রয়্যালটি ও শুল্ক কেটে রেখে বাকিটা দেওয়া হবে মতিলাল প্রজাপতিকে। আগামী জানুয়ারিতে এই নিলাম হওয়ার কথা রয়েছে।

মধ্যপ্রদেশের পান্না এলাকায় হীরা খুঁজে পাওয়ার ঘটনা নতুন কিছু নয়। গত সেপ্টেম্বরে প্রকাশ শর্মা নামের এক ব্যক্তি মাটি খুঁড়ে প্রায় ৩০ লাখ রুপি মূল্যমানের হীরা পেয়েছিলেন। ওই হীরার টুকরার ওজন ছিল প্রায় ১২ ক্যারেট।