খাসোগিকে হত্যাই করা হয়েছে

সাংবাদিক জামাল খাসোগি।
সাংবাদিক জামাল খাসোগি।

সাংবাদিক জামাল খাসোগিকে যে হত্যা করা হয়েছিল, এবার সরাসরিই তা স্বীকার করেছে সৌদি আরব। দেশটির দাবি, দুর্বৃত্তরাই এ হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছে। এতে তোলপাড় শুরু হয়ে গেছে সারা বিশ্বে। বিবিসি অনলাইনের এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়।

ফক্স নিউজকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে সৌদি পররাষ্ট্রমন্ত্রী আদেল আল জুবায়ের জানান, এটা ভয়ানক ভুল ছিল। এ ঘটনার সঙ্গে ক্রাউন প্রিন্স জড়িত নন।

সৌদি পররাষ্ট্রমন্ত্রী তাঁর মন্তব্যে ঘটনাটি হত্যা বলেই বর্ণনা দেন। তিনি বলেন, ‘কী ঘটেছিল, এর সবকিছুই আমরা জানতে চাই। এ হত্যার সঙ্গে যারা জড়িত, তাদের সবাইকে শাস্তি দিতে আমরা অঙ্গীকারবদ্ধ। যে বা যারা এ কাজ করেছে, কর্তৃপক্ষের নির্দেশের বাইরে এ কাজ করেছে। অবশ্যই এটা মারাত্মক ভুল ছিল। এ ভুলকে ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা করা হচ্ছিল।’

আদেল আল জুবায়ের জানান, খাসোগির লাশ কোথায় আছে, তা তিনি জানেন না। সৌদির গোয়েন্দা সংস্থা শীর্ষ কর্মকর্তারাও এ হত্যাকাণ্ডের বিষয়ে জানতেন না। এ হত্যাকাণ্ড দুর্বৃত্তদের দ্বারা সংঘটিত হয়েছে।

২ অক্টোবর তুরস্কের ইস্তাম্বুলে সৌদি কনস্যুলেট ভবনে ব্যক্তিগত কাগজপত্র আনার প্রয়োজনে ঢোকার পর থেকে নিখোঁজ ছিলেন সৌদির খ্যাতনামা সাংবাদিক খাসোগি। শুরু থেকে তুরস্ক দাবি করেছিল, খাসোগিকে কনস্যুলেট ভবনের ভেতর সৌদির চররা হত্যা করে লাশ টুকরো টুকরো করে ফেলে দিয়েছে কোথাও। গত বছর সৌদি যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমান ক্ষমতা নেওয়ার পর রোষানলে পড়েন খাসোগি। তিনি দেশ ছেড়ে স্বেচ্ছা নির্বাসনে চলে যান যুক্তরাষ্ট্রে। ওয়াশিংটন পোস্ট-এ যুবরাজ মোহাম্মদের কর্মকাণ্ডের সমালোচনা করে একের পর এক কলাম লেখেন। অভিযোগ রয়েছে, যুবরাজের নির্দেশে রাষ্ট্রীয় পৃষ্ঠপোষকতায় এ হত্যা সংঘটিত হয়েছে।

ঘটনার ১৭ দিন পর গতকাল শনিবার কনস্যুলেট ভবনের ভেতরই সাংবাদিক জামাল খাসোগি নিহত হয়েছে বলে স্বীকার করেছে সৌদি আরব। এর আগ পর্যন্ত দেশটি খাসোগি নিখোঁজের ব্যাপারে কিছু জানা নেই বলে জানিয়েছিল। তবে ক্রমাগত চাপের মুখে এবার খাসোগির পরিণতির বিষয়ে মুখ খুলেছে তারা। সৌদির বিবৃতিতে দাবি করা হয়েছে, ‘হাতাহাতির সময় খাসোগি খুন’ হয়েছেন। এ ঘটনায় গোয়েন্দা উপপ্রধান আহমাদ আল-আসিরি ও যুবরাজ মোহাম্মদের জ্যেষ্ঠ ঘনিষ্ঠ সহযোগী সৌদ আল-কাহতানিকে বরখাস্ত করা হয়েছে। গ্রেপ্তার করা হয়েছে ১৮ জন সৌদি নাগরিককে।

ইস্তাম্বুল থেকে ৯০ কিলোমিটার দূরে বেলগ্রাড জঙ্গলে ও ইয়ালোভা শহরের একটি গ্রাম্য এলাকায় খাসোগির দেহাবশেষ পুঁতে রাখা হয়েছে বলে আশঙ্কা করছে তুর্কি পুলিশ। এসব এলাকায় তল্লাশি চালাচ্ছে তারা। এর আগে জামাল খাসোগির নিখোঁজের তদন্তে ইস্তাম্বুলে সৌদি কনস্যুলেট ও কনসাল জেনারেলের বাসার তল্লাশি চালিয়েছে তুর্কি পুলিশ।