বিয়ের দিন কনের সাজেই সাজলেন তিনি

কনের সাজে সাদা ফুল হাতে সায়ারি। ছবি: ইনস্টাগ্রাম থেকে নেওয়া
কনের সাজে সাদা ফুল হাতে সায়ারি। ছবি: ইনস্টাগ্রাম থেকে নেওয়া

বিয়ের সাদা পোশাকটা দুজনে পছন্দ করেই কিনেছিলেন। বিয়ের অনুষ্ঠান ঘিরে ছিল দুজনের অনেক পরিকল্পনা। ১৩ বছরের সম্পর্কটার পরিণতি পাওয়ার কথা ছিল ১১ নভেম্বর। সেই ১১ নভেম্বর এল যথাসময়েই, কিন্তু সায়ারির জীবনে এলেন না রিও। বিমান দুর্ঘটনা তছনছ করে দিয়েছে তাঁদের স্বপ্নটাকে।

গত ২৯ অক্টোবর ইন্দোনেশিয়ার রাজধানী জাকার্তার বিমানবন্দর থেকে ১৮৯ জন যাত্রী নিয়ে ওড়ার অল্প সময় পর সাগরে বিধ্বস্ত হয় লায়ন এয়ারের বোয়িং ৭৩৭ উড়োজাহাজ। পাংকাল পিনাংয়ের দেপাতি আমির বিমানবন্দরে পৌঁছানোর কথা ছিল ফ্লাইটটির। ওই ফ্লাইটে ছিলেন রিও নন্দা প্রাতামা। অন্যদের মতো তাঁরও সলিলসমাধি হয় সাগরে।

রিও না থাকলেও তাঁর ইচ্ছেটা পূরণ করতে নিজেকে শক্ত করলেন সায়ারি। ১১ নভেম্বর ঠিকই বিয়ের আয়োজন হলো। একদম কনের সাজে সাদা ফুল হাতে অতিথিদের সামনে দাঁড়ালেন সায়ারি। বুক ফেটে কান্না এলেও মুখে ছিল হাসি, প্রিয়তমের শেষ ইচ্ছে পূরণের হাসি। বিবিসি অনলাইনের এক প্রতিবেদনে এ ঘটনা উঠে আসে।

সায়ারি জানান, মাধ্যমিক স্কুল থেকেই সম্পর্ক তৈরি হয় দুজনের। রিও ছিলেন সায়ারির প্রথম ভালোবাসা। একসঙ্গে পড়াশোনা, বেড়ে ওঠা দুজনের। একসময় পারিবারিকভাবেই বিয়ের আয়োজন হলো তাঁদের। বিয়ের তারিখ ঠিক হলো ১১ নভেম্বর। রিও ছিলেন ডাক্তার। একটা সেমিনারে অংশ নিতে জাকার্তা গিয়েছিলেন তিনি। জাকার্তায় যাওয়ার আগে, একদিন সায়ারিকে মজা করে বলেছিলেন, কোনো কারণে আমি বিয়েতে না থাকতে পারলেও তুমি সুন্দর করে কনের সাজে সেজে ছবি তুলবে, হাতে থাকবে সাদা গোলাপ। ছবিগুলো তুমি আমার জন্য রেখে দেবে। নিয়তির নির্মম পরিহাসে, সত্যি সত্যিই বিয়ের দিন নেই রিও।

রিওর ইচ্ছে পূরণ করতে ১১ নভেম্বর চমৎকার করে সেজেছিলেন সায়ারি। সাদা গোলাপ হাতে তুলেছেন একের পর এক ছবি। গাল বেয়ে জল পড়লেও তাঁর মুখে ছিল হাসি। অতিথিদেরও হাসিমুখে ছবি তুলতে অনুরোধ করা হয়। কারণ, সায়ারির ধারণা, তাঁদের হাসি পরপারে প্রশান্তি দেবে রিওর আত্মাকে।