৭৫৫ কোটি টাকায় বিক্রি হকনির চিত্রকর্ম!

ডেভিড হকনির ‘পোর্ট্রেট অব এন আর্টিস্ট (পুল উইথ টু ফিগারস)’ নামের চিত্রকর্মটি ৯০ দশমিক ৩ মিলিয়ন ডলারে বিক্রি হয়েছে। ছবি: ক্রিস্টিসের সৌজন্যে
ডেভিড হকনির ‘পোর্ট্রেট অব এন আর্টিস্ট (পুল উইথ টু ফিগারস)’ নামের চিত্রকর্মটি ৯০ দশমিক ৩ মিলিয়ন ডলারে বিক্রি হয়েছে। ছবি: ক্রিস্টিসের সৌজন্যে

৪৬ বছর আগে যে চিত্রকর্মটি ১৮ হাজার ডলারে বিক্রি হয়েছিল, সেটাই পাঁচ হাজার গুণের চেয়েও বেশি দামে এখন বিক্রি হলো! জীবন্ত কিংবদন্তি চিত্রকর ডেভিড হকনির একটি চিত্রকর্ম নিলামে রেকর্ড ৯০ দশমিক ৩ মিলিয়ন ডলারে বিক্রি হয়েছে। বাংলাদেশি মুদ্রামানে চিত্রকর্মটির দাম পড়েছে ৭৫৫ কোটি ৮৭ লাখ ৪২ হাজার টাকা।
গতকাল বৃহস্পতিবার যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কে ক্রিস্টিস নামের নিলাম প্রতিষ্ঠান ‘পোর্ট্রেট অব এন আর্টিস্ট (পুল উইথ টু ফিগারস)’ নামের চিত্রকর্মটি এই দামে বিক্রি করে। কোনো জীবিত চিত্রকরের চিত্রকর্ম এত দামে বিক্রি হওয়ার ক্ষেত্রে এটা রেকর্ড।
মজার ব্যাপার হলো, ১৯৭২ সালে এই ছবি ব্রিটিশ চিত্রকর ডেভিড হকনি তাঁর পরিবেশকের মাধ্যমে মাত্র ১৮ হাজার ডলারে বিক্রি করেছিলেন। নানা হাত ঘুরে সেই ছবিই এখন এত দামে বিক্রি হলো।

চিত্রকর্মটি দেখছেন দর্শকেরা। ছবি: টুইটার
চিত্রকর্মটি দেখছেন দর্শকেরা। ছবি: টুইটার

সিএনএনের খবরে বলা হয়, এই ছবির স্মৃতি এখনো তিক্ত মধুর ৮১ বছর বয়সী ডেভিড হকনির কাছে। গত বছর হলিউড হিলসে তাঁর স্টুডিওতে সিএনএনকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে তিনি এই ছবি নিয়ে কথা বলেছিলেন। ওই সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন,‘ওই সময় আমি ভেবেছিলাম, এটা যথেষ্ট অর্থ। অথচ ছয় মাসের মধ্যে ওই ছবি ৫০ হাজার ডলারে বিক্রি হয়েছিল।’ বিক্রির পরপরই তাঁর মার্কিন পরিবেশক অ্যান্ড্রে ইমেরিক বুঝতে পেরেছিলেন, অনেক কম দামে ওটা বিক্রি করা হয়ে গেছে। তবে ততক্ষণে অনেক দেরি হয়ে গেছে। চিত্রকর্মের বাজারে এমন ঘটনা হরহামেশাই ঘটে।

চিত্রকর্মটির ব্যাপারে সিএনএনকে হকনি বলেছিলেন, স্টুডিওতে দুর্ঘটনাবশত তাঁর দুটি চিত্রকর্ম একটি আরেকটির ওপর পড়ে যাওয়া থেকে এই চিত্রকর্মটি করতে উৎসাহিত হন তিনি। ওই চিত্রকর্ম দুটোর একটি ছিল মার্কিন শিল্পী পিটার স্লেজেনজারের প্রতিকৃতি ও আরেকটি ছিল একজন সাঁতারুর। ওই দুটো ভাবনাকে এক করে তিনি এই চিত্রকর্মটি করেন। তিনি জানান, দুজন ব্যক্তির ভিন্ন ভঙ্গি তাঁকে এতটাই আপ্লুত করে যে তিনি দ্রুত ছবিটি আঁকা শুরু করেন।

চিত্রকর ডেভিড হকনি। ছবি: টুইটার
চিত্রকর ডেভিড হকনি। ছবি: টুইটার

চিত্রকর্মটি আঁকার শুরুতে হকনি ছয় মাস সময় নেন, চূড়ান্ত করেন মাত্র দুই সপ্তাহে। ১৯৭২ সালের মে মাসে নিউইয়র্কের একটি প্রদর্শনীতে চিত্রকর্মটি দেওয়ার জন্য তিনি দ্রুত কাজ শেষ করেন।

প্রকৃত দামের চেয়ে পাঁচ হাজার গুণের চেয়েও বেশি দামে চিত্রকর্ম বিক্রি হলে চিত্রকরের কেমন লাগে, তা সহজেই অনুমেয়। ক্রিস্টিস মুখপাত্র নিশ্চিত করেছেন, চিত্রকর্মটি এত দামে বিক্রি হলেও চিত্রকর আর্থিকভাবে লাভবান হবেন না। চিত্রকর্মটি কে কিনেছেন, তা জানায়নি ক্রিস্টিস।