কী বলছেন ইউরোপীয় নেতারা

ব্রেক্সিট চুক্তির খসড়া হাতে ইইউয়ের ব্রেক্সিট বিষয়ক মুখ্য আলোচক মিশেল বার্নিয়ার ও ইউরোপীয় কাউন্সিলের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড টাস্ক। ছবি: রয়টার্স
ব্রেক্সিট চুক্তির খসড়া হাতে ইইউয়ের ব্রেক্সিট বিষয়ক মুখ্য আলোচক মিশেল বার্নিয়ার ও ইউরোপীয় কাউন্সিলের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড টাস্ক। ছবি: রয়টার্স

ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ) থেকে যুক্তরাজ্যের বিচ্ছেদ বা ব্রেক্সিট চুক্তির খসড়া চূড়ান্ত করা নিয়ে এখন যুক্তরাজ্যে রাজনৈতিক ভূমিকম্প চলছে। ঠিক এই সময়ে ইউরোপের অন্য রাজনীতিকেরা বলছেন, বর্তমানে যে খসড়া চুক্তিতে উভয় পক্ষ পৌঁছাতে পেরেছে, তা একটি ভালো সমাধান। আবার অনেকে এও বলেছেন এ বিষয়ে আরও আলোচনার সুযোগ নেই।

ব্রেক্সিট চুক্তির খসড়ায় প্রাপ্তি-অপ্রাপ্তি নিয়ে স্ট্রাসবুর্গ শহরে অবস্থিত ইউরোপীয় পার্লামেন্টে ইইউয়ের ব্রেক্সিট বিষয়ক মুখ্য আলোচক মিশেল বার্নিয়ার কথা বলেছেন। ইইউ থেকে যুক্তরাজ্যের সরে যাওয়া নিয়ে চূড়ান্ত চুক্তিতে পৌঁছানোর বিষয়ে ৫৮৫ পৃষ্ঠার খসড়া দলিলটা সাংবাদিকদের দেখান তিনি। বার্নিয়ার বলেন, ‘এই বিশাল খসড়া দলিলের যে সব অংশে সবুজ রং অর্থাৎ অমীমাংসিত বিষয় ছিল, তা এখন সাদা। অর্থাৎ বিষয়গুলো এখন মীমাংসিত। শেষ পর্যন্ত আমরা অমীমাংসিত বিষয়গুলো নিয়ে একটা পর্যায়ে উপনীত হতে পেরেছি—যা উভয় পক্ষের জন্য একটি সুষম সমাধান। তবে এই খসড়া দলিল প্রস্তুত করতে আমাদের অনেক কাঠখড় পোড়াতে হয়েছে। দীর্ঘ ১৮ মাস সময় লেগেছে।’

জার্মানির চ্যান্সেলর অ্যাঙ্গেলা মেরকেল ব্রেক্সিট চুক্তির খসড়া বিষয়ে গতকাল বলেছেন, অবশেষে ইইউর ২৭ সদস্য রাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্যের আলোচনার ভিত্তিতে এই বিচ্ছেদ খসড়া চূড়ান্ত হয়েছে। তবে এই খসড়া বিষয়ে ভবিষ্যতে আর কোনো আলোচনার সুযোগ নেই।

ফ্রান্সের প্রধানমন্ত্রী এডওয়ার্ড ফিলিপে এই খসড়া দলিলকে একটি ‘বড় অগ্রগতি’ বলে অভিহিত করেছেন। তবে সতর্ক করে দিয়ে তিনি বলেছেন, এই বিচ্ছেদ দলিল নিয়ে অনেক আশাবাদী হওয়ারও কিছু নেই।

জার্মানির অর্থনীতি ও পরিকল্পনা মন্ত্রী পেটার আল্টমায়ার বলেন, ‘ব্রেক্সিট খসড়া চুক্তি নিয়ে যুক্তরাজ্যে যে সংকট দেখা দিয়েছে, তা মূলত বাণিজ্যিক দ্বন্দ্বের কারণে। এ মুহূর্তে বিশ্ব একটি কঠিন অর্থনৈতিক পরিস্থিতির মধ্য দিয়ে যাচ্ছে। তাই আমরাও এই বিচ্ছেদকে কেন্দ্র করে অতিরিক্ত অনিশ্চয়তার দায়ভার আর নিতে চাই না।’

জার্মানির বাণিজ্য ইনস্টিটিউটের প্রতিনিধি মিশেল হুনার বলেছেন, জার্মানি ও অন্য ইইউ সদস্য রাষ্ট্রের বাণিজ্যিক ও শিল্প প্রতিষ্ঠানগুলো এরই মধ্যে যুক্তরাজ্যের সঙ্গে ভবিষ্যতে বাণিজ্যের ক্ষেত্রে খুব সতর্ক দৃষ্টিভঙ্গি নিয়ে চলছে।

ব্রেক্সিটের খসড়া চুক্তিতে বলা আছে, ২০১৯ সালের ২৯ মার্চ বিচ্ছেদ কার্যকর হবে। এরপর অন্তর্বর্তীকালীন ব্যবস্থা হিসেবে ২০২০ সালের জুলাই মাস পর্যন্ত বর্তমান সম্পর্ক বজায় থাকবে। অন্তর্বর্তীকালীন ব্যবস্থা হিসেবে কোনো সমাধানে না পৌঁছাতে পারলে ২০২০ সালের ৩১ ডিসেম্বর এই ব্যবস্থা শেষ হবে। তারপরও যদি উভয় পক্ষ ভবিষ্যৎ বাণিজ্য ও অন্যান্য আদান-প্রদানের সম্পর্ক নির্ধারণ করতে পারে, তবে অন্তর্বর্তী ব্যবস্থার মেয়াদ আরও বাড়বে।