মন্ত্রিসভা পুনর্গঠন, অস্থিরতা কাটেনি

যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী থেরেসা মে। ছবি: রয়টার্স
যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী থেরেসা মে। ছবি: রয়টার্স

ব্রেক্সিটের খসড়া চুক্তির বিরোধিতা করে যুক্তরাজ্যের মন্ত্রিসভা থেকে সাতজনের পদত্যাগের ঘটনা প্রধানমন্ত্রী থেরেসা মের ভিত নাড়িয়ে দিয়েছে। আরও পদত্যাগ ঠেকানো এবং গুরুত্বপূর্ণ দুই মন্ত্রীর পদে নতুন নিয়োগের মাধ্যমে ধকল আপাতত সামলে নিয়েছেন মে। তবে ব্রেক্সিট প্রশ্নে অস্থিরতা এখনো কাটেনি।

ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ) থেকে যুক্তরাজ্যের বিচ্ছেদকে বলা হয় ‘ব্রেক্সিট’। গত শুক্রবার ব্রেক্সিটবিষয়ক মন্ত্রী হিসেবে নিয়োগ পান স্টিফেন বার্কলে। তিনি সদ্য পদত্যাগ করা মন্ত্রী ডোমিনিক রাবের স্থলাভিষিক্ত হয়েছেন। অন্যদিকে, কর্ম ও পেনশনবিষয়ক মন্ত্রী হিসেবে নিয়োগ পেয়েছেন অ্যাম্বার রাড। তিনি সদ্য পদত্যাগ করা মন্ত্রী এসথার ম্যাকভির স্থান পূর্ণ করলেন।

অভিবাসন কেলেঙ্কারির জেরে গত এপ্রিলে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর পদ থেকে পদত্যাগ করেছিলেন রাড। তিনি প্রধানমন্ত্রী মের অনুগত হিসেবে পরিচিত। মন্ত্রিসভায় তাঁর ফেরত আসা বর্তমান পরিস্থিতিতে মের জন্য বেশ স্বস্তিদায়ক বলে বিবেচিত হচ্ছে।

নর্থ ইস্ট ক্যাম্ব্রিজশায়ার এলাকার এমপি বার্কলে আগে স্বাস্থ্য বিভাগের প্রতিমন্ত্রী ছিলেন। প্রায় দুই বছর আগে ব্রেক্সিট মন্ত্রণালয় চালুর পর এটি ব্রেক্সিট মন্ত্রীর তৃতীয় নিয়োগ। ব্রেক্সিটবিষয়ক প্রথম মন্ত্রী ডেভিড ডেভিসও ইইউর সঙ্গে বিচ্ছেদ প্রশ্নে প্রধানমন্ত্রীর অবস্থানের বিরোধিতা করে পদত্যাগ করেছিলেন।

সরকারের তরফ থেকে বলা হয়েছে, নতুন নিয়োগ পাওয়া ব্রেক্সিটবিষয়ক মন্ত্রী বার্কলে অভ্যন্তরীণ বিষয় দেখভাল করবেন। আর ইইউর সঙ্গে সমঝোতার কাজটি প্রধানমন্ত্রী মে নিজে করবেন।

দীর্ঘ দুই বছরের দর-কষাকষির পর বিচ্ছেদ বিষয়ে একটি খসড়া চুক্তিতে পৌঁছায় উভয় পক্ষ। কিন্তু চুক্তিটি যুক্তরাজ্যের স্বার্থবিরোধী বলে তুমুল সমালোচনা হয়।

গত বৃহস্পতি ও শুক্রবার ব্রেক্সিটবিষয়ক মন্ত্রী রাব, কর্ম ও পেনশনবিষয়ক মন্ত্রী ম্যাকভিসহ মোট সাতজন মন্ত্রিসভা থেকে পদত্যাগ করেন।

ব্রেক্সিটপন্থী মন্ত্রী মাইকেল গোভ, পেনি মরডন্ট, লিয়াম ফক্স, ক্রিস গেইলিং ও হাউস অব কমন্সের লিডার অ্যান্ড্রিয়া লিডসম শুক্রবার প্রধানমন্ত্রী মের নেতৃত্বের প্রতি প্রকাশ্য সমর্থন দিয়েছেন। তাঁরা প্রধানমন্ত্রীকে বুঝিয়ে চুক্তির খসড়া পরিবর্তন করে গ্রহণযোগ্য করার চেষ্টা চালাবেন। তবে তা সম্ভব না হলে তাঁরা পদত্যাগের সম্ভাবনা উড়িয়ে দেননি। এ কাজে প্রধানমন্ত্রী ও অন্য চার মন্ত্রীর মধ্যে সেতু হিসেবে কাজ করছেন ব্রেক্সিটপন্থী অন্যতম রাজনীতিক অ্যান্ড্রিয়া লিডসম।

প্রধানমন্ত্রীর প্রতি অনাস্থা ভোট চাওয়া এমপির সংখ্যা শুক্রবার ২৩ জনে এসে দাঁড়ায়। এই সংখ্যা ৪৮-এ পৌঁছালে থেরেসা মের নেতৃত্ব চ্যালেঞ্জের মুখে পড়বে।

কনজারভেটিভ দলের এমপি অ্যালান ডানকান তাঁর সহকর্মীদের বলেছেন, মের নেতৃত্ব চ্যালেঞ্জ করলে ব্রেক্সিট চুক্তি ভালো হয়ে যাবে না। পরিস্থিতির অবনতি না করে সমস্যা সমাধানে মনোযোগ দেওয়ার আহ্বান জানান তিনি।

অ্যালান ডানকান বলেন, ‘এখন নেতৃত্ব চ্যালেঞ্জ করা হলে একটি বাজে অবস্থার সৃষ্টি হবে। সরকার ভেঙে পড়বে। দেশ এক বিপর্যয়ের মুখে পড়বে। সবকিছুর ঊর্ধ্বে আমাদের দেশের কথা ভাবা উচিত।’