মোদির সঙ্গে দ্বন্দ্ব, কেন্দ্রীয় ব্যাংকের গভর্নরের পদত্যাগ

উরজিৎ প্যাটেল। ছবি: রয়টার্স
উরজিৎ প্যাটেল। ছবি: রয়টার্স

অবশেষে পদত্যাগই করলেন ভারতের কেন্দ্রীয় ব্যাংক রিজার্ভ ব্যাংক অব ইন্ডিয়ার (আরবিআই) গভর্নর উরজিত প্যাটেল। ব্যক্তিগত কারণ দেখিয়ে আজ সোমবার তিনি পদত্যাগ করেন। পাঁচ বছরের মেয়াদ পূরণ না করেই কোনো গভর্নরের পদত্যাগের এমন ঘটনা নজিরবিহীন।

বিবিসির খবরে বলা হয়েছে, গভর্নরের পদত্যাগের ঘটনায় বেকায়দায় থাকা ভারতের অর্থনীতি নতুন করে বিপাকে পড়তে পারে। অর্থনৈতিক বিশ্লেষকেরা বলছেন, এই ঘটনায় আন্তর্জাতিক বাজারে ভারতীয় মুদ্রা রুপির মূল্যমান আরও কমে যাওয়ার আশঙ্কা আছে।

এক বিবৃতিতে উরজিত প্যাটেল বলেছেন, কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের কারণেই কেন্দ্রীয় ব্যাংক সাম্প্রতিক সময়ে সফলতা পাচ্ছে। ব্যাংকের সব স্তরের কর্মীকে ধন্যবাদ জানান তিনি। পদত্যাগের কারণ হিসেবে ‘ব্যক্তিগত কারণ’-কে উল্লেখ করেছেন উরজিত প্যাটেল।

ধারণা করা হচ্ছে, মোদি সরকারের সঙ্গে মতভেদের কারণেই পদত্যাগ করতে হলো উরজিত প্যাটেলকে। গত ২৬ অক্টোবর বোমা ফাটান রিজার্ভ ব্যাংক অব ইন্ডিয়ার (আরবিআই) ডেপুটি গভর্নর বিরল আচার্য। তিনি প্রকাশ্যেই বলেন, ‘যে সরকার কেন্দ্রীয় ব্যাংকের স্বাধীনতাকে শ্রদ্ধা করে না, সেটি যেকোনো সময় অর্থনৈতিক বাজারব্যবস্থায় ব্যাপক ক্ষোভের সঞ্চার করবে। এর ফলে আর্থিক অবকাঠামোয় আগুন লেগে যাবে এবং এমন একদিন আসবে, যখন সেই সরকার একটি গুরুত্বপূর্ণ নিয়ন্ত্রক সংস্থাকে ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে নিয়ে যাবে।’

ওই সময়ই গুজব রটেছিল, শিগগিরই রিজার্ভ ব্যাংক অব ইন্ডিয়ার গভর্নর উরজিত প্যাটেল পদত্যাগ করতে চলেছেন। আর এই পদত্যাগের একমাত্র কারণ মোদির সঙ্গে দ্বিমত।

বিবিসি বলছে, লোকসভা নির্বাচন সামনে রেখে মোদির সরকার অর্থনৈতিক খাতে লোকরঞ্জনবাদী পদক্ষেপ নিতে চায়। ভোটের রাজনীতিতে সুবিধা নিতেই ক্ষুদ্র ব্যবসায় সরকারি ব্যাংকের ঋণ বাড়ানোর কথা বলছে সরকার। একই সঙ্গে দরিদ্রদের হেলথ ইনস্যুরেন্সের সুবিধা নেওয়ার প্রকল্পে অর্থ জোগাতে রিজার্ভ মানি ব্যবহার করতে চান মোদি। আর এগুলো নিশ্চিত করতে গিয়েই কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সঙ্গে বিরোধ হচ্ছে সরকারের।

উরজিত প্যাটেলের দায়িত্ব গ্রহণের আগে কেন্দ্রীয় সরকার নোট বাতিলের মতো গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নিয়েছিল। নোট বাতিলের এই পদক্ষেপকে বিজেপির নেতৃত্বাধীন জোট সরকারের সবচেয়ে অপরিকল্পিত ও অদক্ষ কাজ বলে অভিহিত করে আসছেন বিশ্লেষকেরা।