সাংবাদিকদের ঝুঁকি বিশ্বব্যাপী বেড়েছে

সিপিজ
সিপিজ

২০১৮ সালে যুদ্ধ ও সহিংসতাজনিত কারণে হত্যার ঝুঁকি কমলেও কাজ করতে গিয়ে হত্যার ঝুঁকি বেড়েছে সাংবাদিকদের। গতকাল বুধবার এই তথ্য জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক সাংবাদিকদের আন্তর্জাতিক সংস্থা দ্য কমিটি টু প্রটেক্ট জার্নালিস্ট (সিপিজে)। সংস্থাটি গতকাল যে প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে তাতে বলা হয়েছে, ২০১৭ সালের তুলনায় চলতি বছর প্রায় দ্বিগুণ সাংবাদিক হত্যাকাণ্ডের শিকার হয়েছেন।

সিপিজের প্রতিবেদন অনুযায়ী, গত ১ জানুয়ারি থেকে ১৪ ডিসেম্বর পর্যন্ত ৫৩ জন সাংবাদিক হত্যাকাণ্ডের শিকার হয়েছেন। তাঁদের মধ্যে ৩৪ জন কর্মরত সাংবাদিক হত্যার শিকার হয়েছেন কাজ করতে গিয়ে। তাঁদের পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়েছে।

চলতি সপ্তাহে এমন আরেকটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছিল ফ্রান্সের প্যারিসভিত্তিক গণমাধ্যম পর্যবেক্ষণ-বিষয়ক আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠান রিপোর্টার্স উইদাউট বর্ডারস (আরএসএফ)। প্যারিসভিত্তিক এই প্রতিষ্ঠানের দেওয়া সাংবাদিক হত্যার পরিসংখ্যান অনুযায়ী, ৮০ জন চলতি বছর হত্যাকাণ্ডের শিকার হয়েছেন। তবে তাঁদের মধ্যে গণমাধ্যমকর্মী, ব্লগার ও সিটিজেন জার্নালিস্টও আছেন।

সিপিজে ও আরএসএফ এই দুই প্রতিষ্ঠানই সাংবাদিকদের প্রতি প্রতিহিংসামূলক আক্রমণের জন্য উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। এ ছাড়া গত ২ অক্টোবর তুরস্কের ইস্তাম্বুলে সৌদি আরবের কনস্যুলেটে সাংবাদিক জামাল খাসোগির হত্যার বিষয়টিকে ‘নির্লজ্জ হত্যাকাণ্ড’ হিসেবে অভিহিত করেছে। সিপিজের প্রতিবেদন অনুযায়ী, বিগত তিন বছরের মধ্যে চলতি বছর সবচেয়ে বেশি কর্মরত সাংবাদিককে হত্যা করা হয়েছে। ২০১৭ সালে ৪৭ জন সাংবাদিককে হত্যা করা হয়েছে। তাঁদের মধ্যে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়েছে ১৮ জন কর্মরত সাংবাদিককে। এ বছর সেই সংখ্যা ৩৪।


সিপিজের ওয়েবসাইটে প্রকাশিত তথ্য অনুযায়ী, আফগানিস্তানে চলতি বছর ১৩ জন সাংবাদিককে হত্যা করা হয়েছে। তাঁদের মধ্যে শুধু এপ্রিল মাসেই নিহত হয়েছেন ১০ জন সাংবাদিক। চলতি বছর ভারতে নিহত হয়েছেন ৫ জন সাংবাদিক। সিরিয়ায় নিহত হয়েছেন ৯ জন, ইয়েমেনে ৩ জন, ইসরায়েল ও ফিলিস্তিনে ২ জন করে এবং সেন্ট্রাল আফ্রিকান রিপাবলিকে ৩ জন সাংবাদিকে হত্যা করা হয়েছে। এ ছাড়া যুক্তরাষ্ট্র ও মেক্সিকোতে ৪ জন করে সাংবাদিক হত্যা করা হয়েছে। ব্রাজিল ও কলম্বিয়াতে হত্যার শিকার হয়েছেন ২ জন করে ৪ জন। নিকারাগুয়া, সোমালিয়া, স্লোভাকিয়া, লিবিয়া, সৌদি আরব, পাকিস্তান-এই দেশগুলোতে একজন করে সাংবাদিক হত্যাকাণ্ডের শিকার হয়েছেন।

প্রতিবেদনে খাসোগি হত্যার কথা উল্লেখ করে বলা হয়েছে, সাংবাদিকদের অধিকার এবং নিরাপত্তায় আন্তর্জাতিক নেতৃত্বের অভাবে সংবাদমাধ্যমগুলোর ওপর বিপদ বাড়ছে। সিপেজের এলানা বেইসার বলেন, খাসোগি হত্যাকাণ্ড নিয়ে যেসব রাষ্ট্রপ্রধানেরা কথা বলেছেন, তাঁদের মধ্যে তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এরদোয়ান অন্যতম। কিন্তু তাঁর দেশে তিন বছরে সবচেয়ে বেশি সাংবাদিক কারাবরণ করেছেন।