চলে গেলেন 'উলঙ্গ রাজা'র কবি

নীরেন্দ্রনাথ চক্রবর্তী
নীরেন্দ্রনাথ চক্রবর্তী

‘উলঙ্গ রাজা’র কবি নীরেন্দ্রনাথ চক্রবর্তী চলে গেলেন। বাংলা সাহিত্যের এক স্বর্ণযুগের কবিকে হারিয়ে স্তব্ধ কলকাতার সাহিত্যজগৎ। আজ মঙ্গলবার দুপুর ১২টায় কলকাতার একটি বেসরকারি হাসপাতালে শেষনিশ্বাস ত্যাগ করেন ‘কলকাতার যীশু’, ‘অমলকান্তি রোদ্দুর হতে চেয়েছিল’, ‘উলঙ্গ রাজা’র মতো কবিতার স্রষ্টা নীরেন্দ্রনাথ। তাঁর বয়স হয়েছিল ৯৪ বছর।

বেশ কিছুদিন ধরেই বার্ধক্যজনিত রোগে ভুগছিলেন নীরেন্দ্রনাথ চক্রবর্তী। কয়েক দিন আগে তাঁকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছিল। নীরেন্দ্রনাথ শুধু কবিতাই লেখেননি। তিনি গদ্যসাহিত্যেও যথেষ্ট স্বকীয়তা দেখিয়েছেন। ‘ডিটেকটিভ ভাদুড়ীমশাই’ বাংলা কিশোর সাহিত্যে তাঁর এক অনবদ্য সৃষ্টি। একাধারে তিনি ছিলেন কবি ও ছড়াকার, অন্যদিকে প্রাবন্ধিক, ঔপন্যাসিক ও গল্পকারও। বানান-বিশেষজ্ঞ হিসেবেও তিনি পরিচিত ছিলেন।

১৯২৪ সালের ১৯ অক্টোবর বাংলাদেশের ফরিদপুরে তাঁর জন্ম। প্রাথমিক লেখাপড়া সেখানকার পাঠশালায়। পরে ১৯৩০ সালে কলকাতায় চলে এসেছিলেন। ১৯৫১ সালে যোগ দিয়েছিলেন ‘আনন্দবাজার’ পত্রিকায়। দীর্ঘ সময় তিনি ‘আনন্দমেলা’ পত্রিকা সম্পাদনা করেছেন। নীরেন্দ্রনাথের প্রথম কবিতার বই ‘নীল নির্জন’, প্রকাশিত হয়েছিল ১৯৫৪ সালে। এরপর প্রকাশিত হয়েছে তাঁর লেখা ‘অন্ধকার বারান্দা’, ‘নিরক্ত করবী’, ‘নক্ষত্র জয়ের জন্য’, ‘আজ সকালে’সহ অসংখ্য কবিতার বই। সাহিত্য অ্যাকাদেমি পুরস্কারসহ বহু পুরস্কার পেয়েছেন তিনি। পশ্চিমবঙ্গ সরকার তাঁকে বঙ্গবিভূষণ সম্মান দিয়ে সম্মানিত করেছিল।

কবির মৃত্যুতে শোক প্রকাশ করে শঙ্খ ঘোষ বলেছেন, ‘জীবনের প্রায় শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত সৃষ্টিশীল থেকে গেছেন, এমন একজন স্রষ্টার জীবনাবসান সমস্ত বিচ্ছেদবোধের মধ্যেও একটা সফলতার স্পর্ধা এনে দেয়। সহজ ভাষার টান টান চেতনার স্পর্ধিত সেই কবি চলে গেলেন। তাঁকে আমাদের প্রণাম।’ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছেন, ‘নীরেন্দ্রনাথ চক্রবর্তীর মৃত্যুতে আমরা বাংলা সাহিত্যের স্বর্ণযুগের এক মহিরুহকে হারালাম।’