সাংবাদিক জামাল খাসোগি হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় গ্রেপ্তার সন্দেহভাজন ১১ জনের মধ্যে ৫ জনের মৃত্যুদণ্ড চেয়েছেন সৌদি আরবের সরকারি কৌঁসুলি। আজ বৃহস্পতিবার রাজধানী রিয়াদে এ মামলার প্রথম শুনানির দিন আদালতে আসামিদের উপস্থিতিতে এ আবেদন জানান রাষ্ট্রীয় কৌঁসুলি। সৌদি আরবের রাষ্ট্রীয় সংবাদ সংস্থা সৌদি প্রেস এজেন্সি এ তথ্য জানিয়েছে।
বিয়ের কাগজপত্র সংগ্রহ করতে গত ২ অক্টোবর তুরস্কের ইস্তাম্বুলে অবস্থিত সৌদি কনস্যুলেটে গিয়ে নিখোঁজ হন সাংবাদিক জামাল খাসোগি। একসময় সৌদি রাজপরিবারের ঘনিষ্ঠ খাসোগি পরে তাদের কট্টর সমালোচকে পরিণত হন। যুক্তরাষ্ট্রে নির্বাসিত খাসোগি ওয়াশিংটন পোস্টের কলাম লেখক ছিলেন। তুরস্ক শুরু থেকেই এ ঘটনার জন্য সৌদি আরবকে দায়ী করলেও দেশটি প্রথমে তা অস্বীকার করে। ঘটনার দুই সপ্তাহেরও বেশি সময় পর প্রথমবারের মতো সৌদি স্বীকার করে ইস্তাম্বুলে সৌদি কনস্যুলেটের ভেতর কর্মকর্তাদের সঙ্গে ধস্তাধস্তির একপর্যায়ে নিহত হয়েছেন খাসোগি। তবে আন্তর্জাতিক মহল সৌদির এ দাবি প্রত্যাখ্যান করে প্রকৃত সত্য জানানোর আহ্বান জানায়। শেষ পর্যন্ত সৌদি আরব স্বীকার করে, খাসোগিকে পরিকল্পিতভাবে খুন করা হয়েছে। সৌদি আরব ঘটনা খতিয়ে দেখতে তদন্ত দল গঠন করে।
এ হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় সৌদি আরবের আলোচিত যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমানের দিকে অভিযোগের তির যায়। তবে সৌদি আরব বারবার এ ধরনের অভিযোগ অস্বীকার করে বলে, ঘটনার সঙ্গে যুবরাজের কোনো ধরনের সংশ্লিষ্টতা নেই। এ ধরনের অভিযোগ কেউ করলে তার বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
তুরস্ক দাবি করে, ঘটনার দিন বিশেষ উড়োজাহাজে করে সৌদি থেকে ১৫ সদস্যের দল কনস্যুলেটে গিয়ে খাসোগিকে হত্যার পর ওই দিনই ফিরে যায়। শুধু তা-ই নয়, মরদেহ অ্যাসিডে নিশ্চিহ্ন করে দেওয়ায় ঘটনার এত দিন পরও খাসোগির মরদেহ পাওয়া যায়নি। এ ছাড়া এ হত্যাকাণ্ডের বহু প্রমাণ তাদের কাছে থাকার দাবিও করে তুরস্ক।
তবে আজ অ্যাটর্নি জেনারেল বলেছেন, তুরস্কের কাছে থাকা তথ্য-প্রমাণ সৌদিকে দেওয়ার জন্য দুবার আনুষ্ঠানিকভাবে অনুরোধ করেছে তারা। তবে তুরস্কের পক্ষ থেকে সাড়া মেলেনি। আদালতে আজ হাজির করা ১১ আসামির নাম প্রকাশ করেনি সৌদি কর্তৃপক্ষ।