উত্তর-পূর্ব ভারতে বন্ধ্, অচল আসাম

ভারতে অনুপ্রবেশকারী বাংলাদেশি হিন্দুদের ভারতীয় নাগরিকত্ব দেওয়ার উদ্যোগ বন্ধ করতে উত্তর–পূর্ব ভারতে আজ মঙ্গলবার সকালে শুরু হয়েছে ১১ ঘণ্টার বন্‌ধ্‌। উত্তর–পূর্বাঞ্চলীয় ছাত্র সংগঠনসহ (নেসো) বিভিন্ন সংগঠন এই বন্‌ধের ডাক দিয়েছে। একই সঙ্গে ভারতীয় বিভিন্ন শ্রমিক সংগঠনের ডাকে চলছে ভারত বন্‌ধ্‌।

নাগরিকত্ব সংশোধন বিল, ২০১৬ বাতিলের দাবিতে সকাল থেকেই শুরু হয়ে উত্তর–পূর্ব ভারত বন্‌ধ্‌। ভোর পাঁচটা থেকে বিকেল চারটা পর্যন্ত চলবে এই বন্‌ধ্‌।

পাশাপাশি চলছে বিজেপি সরকারের আর্থিক নীতির প্রতিবাদে বামপন্থী ও কংগ্রেসি ট্রেড ইউনিয়নের ডাকা ৪৮ ঘণ্টার ‘ভারত বন্‌ধ্‌’।

বন্‌ধের কারণে অচল আসাম। আজ সকাল থেকে রাস্তাঘাটে যানবাহন নেই বললেই চলে। দোকানপাট, অফিস সবই বন্ধ। বিক্ষিপ্ত গোলমালেরও খবর রয়েছে। বন্‌ধ্‌ সর্বাত্মক বলেই দাবি আন্দোলনকারীদের।

ভারতীয় আইন সংশোধন করে বাংলাদেশ, পাকিস্তান ও আফগানিস্তানের অনুপ্রবেশকারী হিন্দু, খ্রিষ্টান, শিখ, বৌদ্ধদের জন্য নাগরিকত্ব দেওয়ার বিধান রয়েছে এই বিলে। এর প্রতিবাদে চলছে আন্দোলন। গতকাল সোমবার বিলটি পেশ হলে আসামের প্রায় সব অবিজেপি সংগঠনই আন্দোলনে নেমেছে। এমনকি, বিজেপির শরিক দল অসম গণপরিষদ (অগপ) বিজেপির সঙ্গ ত্যাগ করার কথা ঘোষণা করেছে।

আসামজুড়ে শুরু হয়েছে রাজনৈতিক উত্তেজনা। রাজ্যের বিভিন্ন সংগঠন প্রতিবাদে সরব। কৃষক মুক্তি সংগ্রাম সমিতি (কেএমএসএস) বন্‌ধের ডাক দেয়। সেই ডাককে সমর্থন করে কংগ্রেসসহ বিভিন্ন দল রাস্তায় নেমেছে।

সর্বশেষ পাওয়া খবর অনুযায়ী, উত্তর–পূর্বাঞ্চলের মধ্যে আসামেই বন্‌ধের প্রভাব সবচেয়ে বেশি। হিংসাও ছড়াচ্ছে বন্‌ধ্‌কে কেন্দ্র করে।

নাগরিকত্ব সংশোধনী বিল প্রত্যাহার করা না হলে আন্দোলন আরও তীব্র হবে বলে প্রথম আলোকে জানিয়েছেন আসামের সাবেক মুখ্যমন্ত্রী প্রফুল্লকুমার মহন্ত।

কংগ্রেসের তরফে বন্‌ধ্‌কে সমর্থন করার পাশাপাশি অগপ বিজেপি জোট ছাড়ায় সন্তোষ প্রকাশ করা হয়। রাজ্যের বিরোধী দলনেতা দেবব্রত শইকিয়া প্রথম আলোকে জানান, তাঁরা অগপর সঙ্গে জোটের দরজা খুলে রেখেছেন।

নাগরিকত্ব সংশোধনী বিলের প্রভাব পড়েছে গোটা উত্তর–পূর্বাঞ্চলেই। পাশের রাজ্য মেঘালয়ের মুখ্যমন্ত্রী কনার্ড সাংমা আসামের মুখ্যমন্ত্রী সর্বানন্দ সোনোয়ালকে ইস্তফা দেওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন।

প্রসঙ্গত, একসময়ে সর্বানন্দ সোনোয়াল ছিলেন বিদেশি খেদাও আন্দোলনের অন্যতম সংগঠন আসুর শীর্ষ নেতা। এই আসুর সঙ্গেই চুক্তি স্বাক্ষরিত হয় ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ বিদেশিদের নাগরিকত্বের প্রশ্নে ভিত্তি বছর ধরার।

কিন্তু নাগরিকত্ব সংশোধনী বিলে হিন্দুসহ বাংলাদেশ, পাকিস্তান ও আফগানিস্তানের অন্য সংখ্যালঘুদের ক্ষেত্রে বিজেপি ৩১ ডিসেম্বর ২০১৪ সালকে ভিত্তি বছর ধরার কথা বলছে।

তাই সর্বানন্দের বিরুদ্ধে ক্ষোভ বাড়ছে আসামে। বিজেপির পাশাপাশি সর্বানন্দের বিরুদ্ধেও ক্ষোভ বাড়ছে।