শিক্ষার্থীদের জন্য শিক্ষকের চমক

শিক্ষার্থীদের চমকে দিতে গত ডিসেম্বরে মাস জুড়ে গোপনে প্রতিটি শিক্ষার্থীর ছবি আঁকেন রোজলিন বারকোমা। ছবি: বারকোমার ফেসবুক পেজ থেকে নেওয়া
শিক্ষার্থীদের চমকে দিতে গত ডিসেম্বরে মাস জুড়ে গোপনে প্রতিটি শিক্ষার্থীর ছবি আঁকেন রোজলিন বারকোমা। ছবি: বারকোমার ফেসবুক পেজ থেকে নেওয়া

বড়দিনের ছুটি শেষে অন্যদিনের মতো স্কুলে এসেছিল নবম শ্রেণির শিক্ষার্থীরা। কিন্তু ক্লাসে ঢুকেই তাদের চোখ কপালে। এ কি! প্রত্যেকের নির্ধারিত আসনে একেক জনের চেহারার স্কেচ। আর এগুলো এঁকেছে তাদেরই শিক্ষক রোজলিন বারকোমা। শিক্ষার্থীদের চমকে দিতে তিনি গত ডিসেম্বরে মাস জুড়ে গোপনে প্রতিটি শিক্ষার্থীর ছবি আঁকেন। মোট শিক্ষার্থীর সংখ্যা ২৭জন।

ফিলিপাইনে হলি রেডিমার স্কুল অব কাবুয়ায়োতে ৩৫ বছরের বারকোমা ষষ্ঠ ও নবম শ্রেণিতে ইংরেজি পড়ান।

বারকোমা বিবিসিকে বলেন, শিক্ষার্থীরা ক্লাসে ঢুকে নিজেদের ডেস্কে নিজেদের পোর্ট্রেট দেখে খুব অভিভূত হয়ে পড়ে। তারা প্রথমে বাকরুদ্ধ হয়ে পড়ে। এরপর তারা আমাকে ধন্যবাদ জানায়।

শিক্ষার্থীদের চমকে দিতে গত ডিসেম্বরে মাস জুড়ে গোপনে প্রতিটি শিক্ষার্থীর ছবি আঁকেন রোজলিন বারকোমা। ছবি: বারকোমার ফেসবুক পেজ থেকে নেওয়া
শিক্ষার্থীদের চমকে দিতে গত ডিসেম্বরে মাস জুড়ে গোপনে প্রতিটি শিক্ষার্থীর ছবি আঁকেন রোজলিন বারকোমা। ছবি: বারকোমার ফেসবুক পেজ থেকে নেওয়া

বারকোমা বলেন, ‘ছোট্টবেলা থেকেই আমার ছবি আঁকার শখ। আমার ছোট্টবেলার স্বপ্ন ছিল কমিক চরিত্র আঁকা। কারণ আমার মনে হয়েছে এর মধ্য দিয়ে মানুষকে আনন্দ দেওয়া যাবে।’ এখন তিনি কমিক চরিত্রের আঁকিয়ে না হলেও শিক্ষকতা করতে গিয়েও শিক্ষার্থীদের খুব মজা করেই পড়ান।

গত সোমবার বারকোমা তাঁর শিক্ষার্থীদের জন্য আঁকা স্কেচগুলোর ছবি ফেসবুকে শেয়ার করেন। খুব অল্প সময়ের মধ্যেই ফিলিপাইনের নিউজ ওয়েবসাইট রাপলার এই ছবির পেছনের গল্পটি নিয়ে খবর প্রচার করে। রাপলারের ফেসবুক পেজে পোস্ট হওয়া এই খবর ১০ হাজারের বেশিবার শেয়ার হয়েছে।

এই প্রথম বারকোমা পুরো ক্লাসের শিক্ষার্থীদের ছবি আঁকলেন। তিনি বলেন, তিনি শিক্ষার্থীদের বিশেষ, অনন্য ও ব্যক্তিগতভাবে কিছু দিতে চেয়েছেন; যা তাদের পড়াশোনায় অনুপ্রেরণা দেবে। ‘আমি যখন তাদের মুখে হাসি দেখি, আমার পরিশ্রম সার্থক।’

মোট শিক্ষার্থীর সংখ্যা ২৭ জন। ছবি: বারকোমার ফেসবুক পেজ থেকে নেওয়া
মোট শিক্ষার্থীর সংখ্যা ২৭ জন। ছবি: বারকোমার ফেসবুক পেজ থেকে নেওয়া

১৫ বছরের ছাত্র মিচেল রেই আরগো বলেন, ‘এটি অনন্য এক উপহার। এ জন্য না যে বারকোমা আমাদের জন্য নিজে এটি বানিয়েছেন, বরং তিনি কতটা কষ্ট করে আমাদের জন্য এটি করেছেন তা স্মরণীয় হয়ে থাকবে।’ বারকোমার দুটি দিক রয়েছে উল্লেখ করে মিচেল বলে, ক্লাসে তিনি খুবই কড়া আবার আরেকটি দিক হলো তিনি খুব মজার মানুষ। কারণ শিক্ষার্থীদের পড়াশোনায় উৎসাহী করে তুলতে তিনি খুবই মজা করে পড়ান।

অভিভূত শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে বারকোমা অনেক অনেক শুভ বার্তা পেয়েছেন। শুধু শিক্ষার্থীরাই নয়, শিক্ষক ও বিভিন্ন চিত্রশিল্পীর কাছ থেকে তিনি অনেক অভিনন্দন বার্তা পেয়েছেন। বারকোমা বলেন, ‘আমি শুধু আমার শিক্ষার্থীদের আনন্দ দিতে চেয়েছিলাম, কিন্তু এসব পোর্ট্রেট দেখে এখন অনেকেই অনুপ্রাণিত হচ্ছেন।’