সন্ত্রাসীদের অর্থায়নের তালিকায় সৌদি আরব

ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) জন্য হুমকি এমন খসড়া তালিকায় সৌদি আরবের নাম অন্তর্ভুক্ত করেছে ইউরোপিয়ান কমিশন। সন্ত্রাসীদের অর্থায়ন বন্ধ এবং মানি লন্ডারিং ঠেকাতে ব্যর্থ হওয়ায় এই তালিকাভুক্ত হয়েছে দেশটি। দুটি সূত্র গত শুক্রবার এই তথ্য জানিয়েছে।

সৌদি আরব এমন সময়ে তালিকাভুক্ত হলো যখন সাংবাদিক জামাল খাসোগি হত্যাকাণ্ড নিয়ে আন্তর্জাতিক মহলের চাপের মুখে আছে দেশটি। গত ২ অক্টোবর তুরস্কের ইস্তাম্বুলে সৌদি কনস্যুলেটে হত্যাকাণ্ডের শিকার হন খাসোগি। সৌদি এই হত্যার ঘটনা স্বীকার করেছে।

ইইউর তালিকায় ১৬টি দেশ আছে। এর মধ্যে আছে ইরান, ইরাক, সিরিয়া, আফগানিস্তান, ইয়েমেন ও উত্তর কোরিয়া। মানি লন্ডারিং ও সন্ত্রাসে অর্থায়ন প্রতিরোধে নিয়োজিত আন্তর্জাতিক সংস্থা ফাইন্যান্সিয়াল অ্যাকশন টাস্কফোর্সের (এফএটিএফ) মানদণ্ডের ভিত্তিতে এই তালিকা করেছিল ইইউ। তবে ২০১৭ সালে ইইউ নতুন যে মানদণ্ড নির্ধারণ করেছে তার ভিত্তিতে গত সপ্তাহে এই তালিকা হালনাগাদ করা হয়েছে। হালনাগাদ করার পর সৌদি আরব এই তালিকায় প্রবেশ করেছে। তবে তালিকাটি এখনো গোপন রাখা হয়েছে। সৌদি আরবের একটি সূত্র এবং ইইউর একটি সূত্র এই তথ্য নিশ্চিত করেছে।

ইইউর এই কালো তালিকায় প্রবেশ প্রসঙ্গে সৌদি আরবের সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ এখনো কোনো মন্তব্য করেনি।

সাম্প্রতিক সময়ে সৌদি আরব অর্থনৈতিক সংস্কারের কাজ শুরু করেছে। বিনিয়োগের জন্য আন্তর্জাতিক মহলে গ্রহণযোগ্যতা বাড়িয়ে যখন বিদেশি বিনিয়োগকারীদের উদ্বুদ্ধ করার চেষ্টা করছে, ঠিক তখনই এমন একটি তালিকায় সৌদি আরবের নাম প্রবেশ করল।

এদিকে যুক্তরাজ্যভিত্তিক গণমাধ্যম ওয়াশিংটন পোস্টের কলাম লেখক ও সৌদি যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমানের সমালোচক খাসোগি হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় আন্তর্জাতিক মহলে সৌদির সুনাম ক্ষুণ্ন হয়েছে। এর মধ্যে এই তালিকায় প্রবেশ করার ফলে ইইউর সঙ্গে সৌদির আর্থিক সম্পর্কে জটিলতা দেখা দেবে। ইইউর ব্যাংকগুলো অর্থ প্রদানের ক্ষেত্রে অতিরিক্ত সতর্কতা অবলম্বন করবে। এ ছাড়া অর্থ পাওয়ার ক্ষেত্রে বিভিন্ন যাচাই–বাছাইয়ের মধ্য দিয়েও যেতে হবে সৌদি আরবকে।

আগামী সপ্তাহে এ–সংক্রান্ত চূড়ান্ত তালিকা প্রকাশ করবে ইইউ। তবে এর আগে ইইউর ২৮টি দেশ এই তালিকা অনুমোদন দেবে।  

মানি লন্ডারিং ঠেকাতে যদি কোনো ঘাটতি থাকে এবং সন্ত্রাসীদের যদি কোনো দেশ অর্থায়ন করে এবং তা যদি ইইউর জন্য হুমকি হয় তবে সেই দেশ এই কালো তালিকায় প্রবেশ করে। মানি লন্ডারিং এবং সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে যুদ্ধে ব্যর্থ হওয়ায় গত সেপ্টেম্বরে এফএটিএফের পূর্ণাঙ্গ সদস্য হতে পারেনি সৌদি আরব।