ভোট পেতে মতুয়াদের দ্বারে মোদি

মতুয়া সম্প্রদায়ের সমাবেশে যোগ দেবেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি।
মতুয়া সম্প্রদায়ের সমাবেশে যোগ দেবেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি।

মতুয়া সম্প্রদায়ের তীর্থভূমি পশ্চিমবঙ্গের বনগাঁ লোকসভা কেন্দ্রের অধীন ঠাকুরনগরে কাল আসবেন মোদি। মতুয়াদের এক সমাবেশে যোগ দেবেন তিনি। এ ছাড়া মতুয়া সম্প্রদায়ের গুরুমা শতবর্ষী বীণাপাণি দেবীর আশীর্বাদ গ্রহণ এবং মতুয়া সম্প্রদায়ের ধর্মগুরু হরিচাঁদ-গুরুচাঁদ ঠাকুরের মন্দির দর্শন করারও কথা রয়েছে তাঁর।

বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ বলেছেন, প্রধানমন্ত্রী ঠাকুরনগরে মতুয়াদের এক সমাবেশে ভাষণও দেবেন।

এই সমাবেশ নিয়ে বিজেপি ও তৃণমূলের মধ্যে ঠোকাঠুকি চলছেই। উদ্যোক্তারা জানিয়েছেন, এই সমাবেশ মঞ্চে কোনো বিজেপির পতাকা তোলা হবে না। এটি হবে ধর্মীয় সমাবেশ। আবার তৃণমূল সাংসদ মমতাবালা ঠাকুর জানিয়েছেন, গুরুমা এখন অসুস্থ। অন্যদিকে সমাবেশের উদ্যোক্তা শান্তনু ঠাকুর বলেছেন, তিনি গুরুমার সঙ্গে দেখা করেছেন। তিনি সুস্থ। এটা তৃণমূলের ষড়যন্ত্র।

বিজেপির লক্ষ্য পশ্চিমবঙ্গের মতুয়া সম্প্রদায়ের ভোট নিজেদের দিকে টেনে আনা। কারণ এই মতুয়া সম্প্রদায় এখনো উত্তর ও দক্ষিণ ২৪ পরগনা, নদীয়া, মালদহ, মুর্শিদাবাদসহ রাজ্যের বেশ কয়েকটি এলাকায় ভোটের নির্ণায়ক শক্তি হিসেবে রয়েছে। তাই তাদের মন পেতে চায় বিজেপি।

শান্তনু ঠাকুর এই মহাসমাবেশের ডাক দিয়েছেন। তিনি বলেন, মতুয়া সম্প্রদায়ের ১০ দফা দাবি এদিন তুলে ধরা হবে প্রধানমন্ত্রী মোদির কাছে। এই দাবির মধ্যে রয়েছে মতুয়া উদ্বাস্তুদের নাগরিকত্ব প্রদান, ঠাকুনগরে আয়োজিত বারুণি মেলার দিনটিকে জাতীয় ছুটি ঘোষণা, মতুয়াদের ঠাকুরনগরে আসা–যাওয়ার সময় ট্রেনে বিশেষ সুবিধা, মতুয়া সম্প্রদায়ের গুরু গুরুচাঁদ ঠাকুরকে মরণোত্তর ভারত রত্ন প্রদান ইত্যাদি।

মতুয়া সম্প্রদায়ের সঙ্গে মূলত পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সুসম্পর্ক রয়েছে। পশ্চিমবঙ্গের ২৯৪টি রাজ্য বিধানসভার আসনের ৫৭টি আসনের এখনো নির্ণায়ক শক্তি হিসেবে রয়েছে মতুয়ারা। পাশাপাশি লোকসভার ৪২টি আসনের মধ্যে ১০টি আসনেরও নির্ণায়ক শক্তি এই মতুয়ারা। যদিও মতুয়াদের আদি আশ্রম রয়েছে বাংলাদেশের ফরিদপুর জেলার ওড়াকান্দিতে। ভারত ভাগের পর প্রচুর মতুয়া–ভক্ত পশ্চিমবঙ্গে চলে আসে। তারাই ১৯৪৭ সালের পর এই ঠাকুরনগরে তৈরি করে তাদের দ্বিতীয় আশ্রম। এই আশ্রম এখন ভারতের কেন্দ্রীয় আশ্রম হিসেবে পরিচিত।