অবশেষে 'ছুটি' পেলেন কলকাতার পুলিশ কমিশনার রাজীব কুমার

কলকাতার পুলিশ কমিশনার রাজীব কুমার। ছবি: প্রথম আলো
কলকাতার পুলিশ কমিশনার রাজীব কুমার। ছবি: প্রথম আলো

একটানা পাঁচ দিন সিবিআইয়ের জিজ্ঞাসাবাদ শেষে আজ বুধবার ছুটি পেয়েছেন কলকাতার পুলিশ কমিশনার রাজীব কুমার। বুধবার সন্ধ্যায় শিলং থেকে কলকাতায় ফিরছেন তিনি।

পশ্চিমবঙ্গের চাঞ্চল্যকর সারদা ও রোজভ্যালি দুর্নীতিকাণ্ডের তথ্য জানার জন্য কলকাতার পুলিশ কমিশনার রাজীব কুমারকে গত চার দিন ধরে একনাগাড়ে ৩৫ ঘণ্টা জিজ্ঞাসাবাদ করেও সন্তুষ্ট হতে পারেনি সিবিআই। তাই আজ বুধবারও পঞ্চম দিনের মতো সিবিআই তাঁকে জেরা করে। সকাল সাড়ে ৯টায় তিনি শিলংয়ের সিবিআই দপ্তরে যান। দুপুর সাড়ে ১২টা নাগাদ তাঁকে কলকাতায় ফিরে যাওয়ার অনুমতি দেওয়া হয়। এ–ও জানিয়ে দেওয়া হয় যে ২০ ফেব্রুয়ারি সুপ্রিম কোর্টে এ–সংক্রান্ত মামলার শুনানি শেষে তাঁকে আবার ডাকা হতে পারে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য।

সিবিআই শিলংয়ে রাজীব কুমারের মুখোমুখি বসিয়ে জেরা করে সারদা মামলার অন্যতম অভিযুক্ত ও সাবেক তৃণমূল সাংসদ কুণাল ঘোষকেও। সারদা কেলেঙ্কারি ফাঁসের পর কুণাল ঘোষকে গ্রেপ্তার করেছিল সিবিআই। পরে তিনি জামিনে মুক্তি পান। কুণাল ঘোষকে দুই দিন জেরা করে গত সোমবার বিকেলে ছেড়ে দেয় সিবিআই।

কলকাতার সংবাদমাধ্যম জানিয়েছে, এখনো সিবিআই সন্তুষ্ট হতে পারেনি রাজীব কুমারের জবাবে। তারা বহু প্রশ্নের জবাব পায়নি রাজীব কুমারের কাছ থেকে।

এদিকে রাজীব কুমার সিবিআইর কাছে গতকাল মঙ্গলবার এক লিখিত আবেদনে বলেছেন, সুপ্রিম কোর্টে সিবিআইয়ের মামলা দায়েরের পরিপ্রেক্ষিতে তাঁর ১৮ ফেব্রুয়ারি আদালতে হলফনামা দেওয়ার কথা। তাই এ–সংক্রান্ত কাজের জন্য তাঁর কলকাতা যাওয়া জরুরি।

সারদা ও রোজভ্যালিকাণ্ডের তথ্য জানার জন্য সিবিআই সমন পাঠায় কলকাতার পুলিশ কমিশনার রাজীব কুমারকে। সিবিআইর সমন পেয়ে রাজীব কুমার গত শনিবার সকালে উপস্থিত হন শিলংয়ের ওকল্যান্ডের সিবিআই দপ্তরে। তাঁর সঙ্গে ছিলেন কলকাতা পুলিশের দুই কর্মকর্তা কলকাতার অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার জাভেদ শামীম এবং ডেপুটি পুলিশ কমিশনার (এসটিএফ) মুরলি ধর শর্মা। যদিও গত চার দিন এই দুই পুলিশ কর্মকর্তা শিলংয়ের সিবিআই দপ্তরে গেলেও রাজীব কুমারকে জেরা করার সময় তাঁদের দপ্তরে থাকার অনুমতি দেওয়া হয়নি।

প্রসঙ্গত, সারদা ও রোজভ্যালি দুর্নীতিকাণ্ডের তথ্য জানার জন্য সিবিআই রাজীব কুমারের বাড়িতে গত ৩ ফেব্রুয়ারি যেতে গেলে তাতে বাধা দেয় কলকাতা পুলিশ। একপর্যায়ে পুলিশ সিবিআই কর্মকর্তাদের জোর করে গাড়িতে তুলে নিয়ে আটকে রাখে থানায়। রাজীব কুমারের বাসভবনে বেআইনিভাবে প্রবেশের চেষ্টার অভিযোগ তুলে ওই দিন রাতেই কলকাতার মেট্রো চ্যানেলে ধরনায় বসেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।

এ ঘটনার পর রাজীব কুমারের বিরুদ্ধে সুপ্রিম কোর্টে মামলা দায়ের করে সিবিআই। সেই মামলায় সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি রঞ্জন গগৈর ডিভিশন বেঞ্চ ৫ ফেব্রুয়ারি এক নির্দেশে জানান, সিবিআই রাজীব কুমারকে জেরা করতে পারবে, তবে জেরাকালীন তাঁকে গ্রেপ্তার করা যাবে না। আর জেরা হবে শিলংয়ের সিবিআই দপ্তরে। এই নির্দেশের পর ধরনা তুলে নেন মমতা। আর রাজীব কুমারের জেরা শুরু করে সিবিআই।