ইইউর কালো তালিকায় সৌদি আরব

রয়টার্স ফাইল ছবি।
রয়টার্স ফাইল ছবি।
>

• কালো তালিকায় সৌদি আরবের নাম অন্তর্ভুক্ত করেছে ইউরোপিয়ান কমিশন
• পানামা ও যুক্তরাষ্ট্রের চারটি এলাকাও তালিকায়
• যুক্তরাষ্ট্র সমর্থন দেয়নি

ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) জন্য হুমকি, এমন কালো তালিকায় সৌদি আরবের নাম অন্তর্ভুক্ত করেছে ইউরোপিয়ান কমিশন। সন্ত্রাসীদের অর্থায়ন বন্ধ এবং মানি লন্ডারিং ঠেকাতে ব্যর্থ হওয়ায় এই তালিকাভুক্ত হয়েছে দেশটি। গত বুধবার এই তথ্য জানিয়েছে ইইউ কর্তৃপক্ষ।

এই তালিকায় আরও স্থান পেয়েছে পানামা ও যুক্তরাষ্ট্রের চারটি এলাকা। ইইউর বিভিন্ন ব্যাংকের কেলেঙ্কারির পরিপ্রেক্ষিতে মানি লন্ডারিং ঠেকাতে এই উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। তবে এই উদ্যোগের সমালোচনা করেছে যুক্তরাজ্যসহ ইইউর বিভিন্ন দেশ। তারা কালো তালিকাভুক্ত দেশগুলো, বিশেষ করে সৌদি আরবের সঙ্গে ইইউর দেশগুলোর আর্থিক সম্পর্ক নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। যুক্তরাষ্ট্রও এই তালিকাকে সমর্থন দেয়নি।

ইইউর এই ঘোষণার পর সৌদি আরব এ নিয়ে দুঃখ প্রকাশ করেছে। সৌদি প্রেস এজেন্সির এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, মানি লন্ডারিং এবং সন্ত্রাসের অর্থায়নের বিরুদ্ধে দেশটি যুদ্ধের প্রতিশ্রুতি দিয়েছে এবং কৌশলগত অগ্রাধিকার দেওয়া হয়েছে।

এদিকে পানামা বলেছে, ওই তালিকা থেকে দেশটির নাম বাদ দেওয়া উচিত। কারণ, মানি লন্ডারিংয়ের বিরুদ্ধে দেশটি সাম্প্রতিক সময়ে শক্তিশালী আইন প্রণয়ন করেছে।

সাম্প্রতিক সময়ে আন্তর্জাতিক মহলে সৌদি আরবের সুনাম ক্ষুণ্ন হয়েছে। এই তালিকায় প্রবেশ করার ফলে ইইউর সঙ্গে সৌদির আর্থিক সম্পর্কে জটিলতা দেখা দেবে। ইইউর ব্যাংকগুলো অর্থ প্রদানের ক্ষেত্রে অতিরিক্ত সতর্কতা অবলম্বন করবে। এ ছাড়া অর্থ পাওয়ার ক্ষেত্রে বিভিন্ন যাচাই-বাছাইয়ের মধ্য দিয়েও যেতে হবে সৌদি আরবকে।

ইইউর এই কালো তালিকায় বর্তমানে ২৩ এলাকা অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। এর আগে তালিকায় ছিল ১৬টি এলাকা। কমিশন বলেছে, সন্ত্রাসীদের অর্থায়ন বন্ধে এবং মানি লন্ডারিং ঠেকাতে যাদের কৌশলগত ব্যর্থতা আছে, তাদের ওই তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।

এবারের তালিকায় নতুন করে অন্তর্ভুক্ত হয়েছে সৌদি আরব, লিবিয়া, বতসোয়ানা, ঘানা, সামোয়া, বাহামা দ্বীপপুঞ্জ। আর যুক্তরাষ্ট্রের চারটি অঞ্চল হলো সামোয়া অঞ্চল, ভার্জিন দ্বীপপুঞ্জ, পুয়ের্তো রিকো ও গুয়াম।

এ ছাড়া তালিকায় আছে আফগানিস্তান, উত্তর কোরিয়া, ইথিওপিয়া, ইরান, ইরাক, পাকিস্তান, শ্রীলঙ্কা, সিরিয়া, ত্রিনিদাদ ও টোবাকো,  তিউনিসিয়া এবং ইয়েমেন।

আর তালিকা থেকে বাদ পড়েছে বসনিয়া, গায়ানা, লাওস, উগান্ডা ও ভানুয়াতু। এই তালিকা অনুমোদন দেওয়ার জন্য ইইউ সদস্যভুক্ত ২৮ দেশের হাতে এক মাস সময় আছে। এই মেয়াদ আরও এক মাস বাড়তে পারে। নতুন এই তালিকা সংখ্যাগরিষ্ঠের ভোট না পাওয়ায় বাতিল হয়ে যেতে পারে।

ইইউর বিচারবিভাগীয় কমিশনার ভেরা জোরেভা এই তালিকা প্রস্তাব করেছেন। তিনি আশা করছেন, ইইউর দেশগুলো এই তালিকার অনুমোদন দিতে বাধা দেবে না। ভেরা বলেন, তালিকাটি করা জরুরি ছিল। কারণ ব্যাংকিং খাতে ঝুঁকি বুনো আগুনের মতো বিস্তার লাভ করছে।

তবে এই তালিকা নিয়ে উদ্বেগ এখনো আছে। আগামী ২৯ মার্চ ইইউ ত্যাগ করার কথা রয়েছে যুক্তরাজ্যের। দেশটি বুধবার বলেছে, এই তালিকা বাণিজ্যের ক্ষেত্রে বিভ্রান্তি ছড়াতে পারে। কারণ, মানি লন্ডারিং ও সন্ত্রাসে অর্থায়ন প্রতিরোধে নিয়োজিত আন্তর্জাতিক সংস্থা ফাইন্যান্সিয়াল অ্যাকশন টাস্কফোর্স (এফএটিএফ) এর থেকে ছোট তালিকা করেছে।