স্যান্ডউইচ 'চুরির' অভিযোগে সাংসদের পদত্যাগ

স্লোভেনিয়ার এমপি দারি ক্রাজিক
স্লোভেনিয়ার এমপি দারি ক্রাজিক

দক্ষিণ মধ্য ইউরোপের দেশ স্লোভেনিয়ার একজন পার্লামেন্ট সদস্যকে স্যান্ডউইচ চুরির অভিযোগে পদত্যাগ করতে হয়েছে। তাঁর নাম দারি ক্রাজিক (৫৪)। তিনি স্লোভেনিয়ার ক্ষমতাসীন জোটের প্রধান শরিক দল মারিয়ান সারেজ লিস্টের (এলএমএস) নেতা। গত বৃহস্পতিবার তিনি পদত্যাগের ঘোষণা দেন।

দারি ক্রাজিকের বিরুদ্ধে অভিযোগ, তিনি রাজধানী লুব্লিয়ানার একটি সুপারশপে স্যান্ডউইচ খেয়ে তার দাম না দিয়েই চলে যান। বিষয়টিকে নৈতিকতার স্খলন হিসেবে দেখেছে তাঁর দল।

ক্রাজিক স্লোভেনিয়ার বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেল পপ টিভিকে বলেন, তিনি সুপারশপের কাউন্টারে তিন মিনিট অপেক্ষা করেও কোনো কর্মীকে পাননি। অথচ সুপারশপে তখন তিনজন কর্মী ছিলেন। তাঁরা নিজেদের মধ্যে গল্পে এতটাই মশগুল ছিলেন যে গ্রাহকের দিকে খেয়ালই করছিলেন না। ক্রাজিকের ভাষ্যমতে, সুপারশপের কর্মীরা তাঁকে পাত্তা দেননি। এতে বিরক্ত হয়ে তিনি স্যান্ডউইচের দাম না দিয়েই চলে যান।

বিবিসির খবরে বলা হয়, গত বুধবার পার্লামেন্টারি কমিটির এক বৈঠকে হাস্যোচ্ছলে সুপারশপের ঘটনার কথাটি বলেন দারি ক্রাজিক। তাঁর সহকর্মীরাও ঘটনাটি শুনে বেশ মজা পান এবং হাসাহাসি করেন। কিন্তু পরে বিষয়টি গণমাধ্যমে প্রকাশ হয়। এরপর ক্রাজিকের দল এলএমএসের পার্লামেন্টারি অংশের প্রধান ব্রেনি গোলুবোভিচ ওই আচরণের নিন্দা জানান। তিনি এই ধরনের কাজকে ‘অগ্রহণযোগ্য’ অভিহিত করে বলেন, সাংসদ হিসেবে ক্রাজিকের দায়িত্বজ্ঞানের পরিচয় দেওয়া উচিত ছিল। এলএমএসের উচ্চ নৈতিক মানদণ্ডের কথাও মাথায় রাখা উচিত ছিল তাঁর। ঘটনা বেগতিক দেখে ক্রাজিক দুঃখ প্রকাশ করেন। পরে পার্লামেন্টের সদস্যপদ থেকে পদত্যাগের ঘোষণা দেন তিনি।

মধ্য বামপন্থী দল এলএমএস থেকেই স্লোভেনিয়ার প্রধানমন্ত্রী মারিয়ান সারেজ নির্বাচিত। গত বছরের সেপ্টেম্বরের নির্বাচনে তাঁর পাঁচদলীয় জোট বিজয়ী হয়ে সরকার গঠন করে। ওই নির্বাচনে সাংসদ নির্বাচিত হন সাবেক অধ্যাপক ক্রাজিক। প্রধানমন্ত্রী সারেজ সম্প্রতি ক্ষমতার অপব্যবহার ও ভীতি প্রদর্শনের অভিযোগে তাঁর দুই মন্ত্রীকে বরখাস্ত করেছেন। সরকারি চাকরিজীবীদের বেতন বৃদ্ধি করেছেন তিনি। বিভিন্ন জরিপের ফলাফল বলছে, এসব ঘটনায় প্রধানমন্ত্রীর জনসমর্থন বেড়েছে। এখন তাঁর দলের কোনো সাংসদের স্যান্ডউইচের মতো ছোটখাটো জিনিসের দাম পরিশোধ না করা এবং এ কারণে পদত্যাগ করায় এই জনপ্রিয়তায় কী প্রভাব পড়ে, তা-ই দেখার বিষয় বলে মন্তব্য করেছেন বিশ্লেষকেরা।