অস্ট্রেলিয়ার প্রথম নারী পাইলটের নামে নতুন আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর

ন্যান্সি-বার্ড ওয়াল্টন। ছবি: সংগৃহীত
ন্যান্সি-বার্ড ওয়াল্টন। ছবি: সংগৃহীত

অস্ট্রেলিয়ার নারী বৈমানিকের অন্যতম নারী অগ্রদূত ন্যান্সি-বার্ড ওয়াল্টনের নাম পেতে যাচ্ছে দেশটির নতুন আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর। সোমবার দেশটির প্রধানমন্ত্রী স্কট মরিসন ‘ওয়েস্টার্ন সিডনি আন্তর্জাতিক ন্যান্সি-বার্ড ওয়াল্টন বিমানবন্দর’ নামটি ঘোষণা করেন। ২০২৬ সালে সিডনির ব্যাজরিস ক্রিকে চালু হবে নতুন বিমানবন্দরটি।

অস্ট্রেলিয়ার সবচেয়ে ব্যস্ততম আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর সিডনির কিংসফোর্ড স্মিথ বিমানবন্দরের চাপ কমাতে গত বছর নির্মাণকাজ শুরু হয় সিডনির দ্বিতীয় এই বিমানবন্দরটির। অস্ট্রেলিয়ার ইতিহাসে নারীদের মধ্যে অন্যতম ন্যান্সি-বার্ড ওয়াল্টনের সম্মানে এ নাম রাখা হয়। অস্ট্রেলিয়ার ইতিহাস তাঁকে ‘প্রথম নারী বৈমানিক’ হিসেবে সম্বোধন করে থাকে।

বিমানবন্দরের নাম ঘোষণার সময় স্কট মরিসন বলেন, ‘নারীদের সমাজের কল্যাণে এগিয়ে অগ্রণী ভূমিকা রাখতে উৎসাহিত করতে বিমানবন্দরটি তাঁর নামে রাখা হচ্ছে। আর অস্ট্রেলিয়ার আকাশের এই হিরো সেটা জেনে হয়তো গর্বিত হতেন।’ নিউ সাউথ ওয়েলস রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী গ্ল্যাডিস বেরেজিক্লিয়ান মরিসনের এই অনুপ্রাণিত নামকরণকে সাধুবাদ জানিয়ে বলেন, ‘ন্যান্সি শুধু নারীদের জন্য নয়, বরং ভবিষ্যৎ নিয়ে ভাবা এবং মানুষকে সাহায্য করার মানসিকতা রাখা প্রত্যেকের জন্যই তিনি একজন দৃষ্টান্ত।’

ন্যান্সি-বার্ড ওয়াল্টন ১৯১৫ সালে অস্ট্রেলিয়ার নিউ সাউথ ওয়েলস রাজ্যে জন্মগ্রহণ করেন। মাত্র ১৭ বছর বয়সে অস্ট্রেলিয়ার সবচেয়ে কমবয়সী প্রথম নারী বৈমানিক হিসেবে লাইসেন্স পান তিনি। এ ছাড়া দেশটির যাত্রীবাহী বিমান চালানোর বাণিজ্যিক লাইসেন্স ব্যবহারেও প্রথম নারী তিনি।

অস্ট্রেলিয়ার বিখ্যাত বৈমানিক কিংসফোর্ড স্মিথের কাছ থেকে বিমান চালনা শেখেন ন্যান্সি। ১৯৫৮ সালে যুক্তরাষ্ট্রে অনুষ্ঠিত বিমান প্রতিযোগিতায় মার্কিন নাগরিকদের বাইরে প্রথম নারী হিসেবে পুরস্কার জেতেন। ১৯৫৩ সালে দেশটির প্রথম নারী বৈমানিক সংঘ প্রতিষ্ঠা করেন এবং ১৯৯০ সাল পর্যন্ত এটির সভাপতি পদে ছিলেন ন্যান্সি। ১৯৬৬ সালে জনসেবায় তাঁর বিশেষ অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ তাঁকে যুক্তরাজ্যের অন্যতম রাষ্ট্রীয় সম্মাননা দেওয়া হয়। ২০০৯ সালে তিনি মৃত্যুবরণ করেন। তবে ন্যান্সি লাইসেন্স পাওয়া অস্ট্রেলিয়ার প্রথম নারী বৈমানিক নন। ১৯২৭ সালে দেশটিতে নারীরা বিমান চালানোর বৈধতা পাওয়ার পর লাইসেন্স গ্রহণ করা নারীদের তালিকায় ন্যান্সি সপ্তম। তবে তাঁদের মধ্যে বৈমানিক পেশাকে প্রথম গ্রহণ করেন তিনি। তাই অস্ট্রেলিয়ায় নারী বৈমানিকের অগ্রদূত হিসেবে ন্যান্সি-বার্ডকেই প্রথম নারী বৈমানিক সম্বোধন করা হয়।