ভেনেজুয়েলায় 'রাষ্ট্রীয় সতর্কতা' জারি কামনা গুয়াইদোর

গুয়াইদো
গুয়াইদো

ভেনেজুয়েলায় চলমান বিদ্যুৎ–সংকট মোকাবিলায় আন্তর্জাতিক সাহায্য প্রাপ্তিকে ত্বরান্বিত করতে ‘রাষ্ট্রীয় সতর্কতা’ জারির আহ্বান জানাবেন বিরোধী নেতা ও স্বঘোষিত অন্তর্বর্তীকালীন প্রেসিডেন্ট হুয়ান গুয়াইদো। আজ সোমবার এএফপির খবরে এ তথ্য জানানো হয়।

বৃহস্পতিবার থেকে ভেনেজুয়েলা জুড়ে চলমান ব্যাপক বিদ্যুৎ–সংকটের কারণে হাসপাতালগুলো জরুরি সেবা দিতে হিমশিম খাচ্ছে। একই কারণে খাদ্য সরবরাহও হুমকির মুখে পড়েছে। সরকারি কোনো হিসাব না থাকলেও স্বাস্থ্য অধিকার নিয়ে কাজ করে এমন একটি গ্রুপ কোদেভিদা জানায়, এই পরিস্থিতির কারণে ১৫ জন গুরুতর কিডনি রোগীর মৃত্যু হয়েছে।

গত জানুয়ারিতে নিজেকে অন্তর্বর্তীকালীন প্রেসিডেন্ট হিসেবে ঘোষণা দেওয়া ৩৫ বছর বয়সী গুয়াইদো বলেছেন, ‘এই বিপর্যয়কে তাৎক্ষণিকভাবে আমাদের মোকাবিলা করতে হবে। এই অবস্থায় আমরা পিছিয়ে যেতে পারি না।’

গতকাল রোববার গুয়াইদো সাংবাদিকদের বলেন, ‘রাষ্ট্রীয় সতর্কতা জারি’ করতে তিনি মাদুরোবিরোধীদের নিয়ন্ত্রিত ন্যাশনাল অ্যাসেম্বলির কাছে জরুরি অধিবেশন ডাকারও আহ্বান জানিয়েছেন।

এদিকে বিদ্যুৎহীনতার মধ্যে গুয়াইদোর সমর্থক এবং দেশটির পুলিশের মধ্যে সংঘর্ষ হয়েছে। এর মধ্য দিয়ে মাদুরোর ওপর চাপ স্পষ্ট হয়ে উঠেছে। মাদুরোর সোশ্যালিস্ট পার্টি বলেছে, এই বিদ্যুৎ না থাকা যুক্তরাষ্ট্রের মদদে নাশকতা। তবে মাদুরোবিরোধী সমালোচকেরা এ ঘটনাকে দুই দশকের অব্যবস্থাপনা এবং দুর্নীতির ফসল হিসেবে অভিহিত করেছেন।

কারাকাসে প্রেসিডেন্টের বাসভবন মিরাফ্লোরেসসহ বিভিন্ন স্থানে গত শনিবার সকালে বৈদ্যুতিক বাতিগুলো কিছুক্ষণ পরপর টিমটিম করে জ্বলছিল এবং বন্ধ হচ্ছিল। সোশ্যালিস্ট পার্টির ভাইস প্রেসিডেন্ট দিসদাদো কাবেলো বলেন, গত শনিবার বিকেল পর্যন্ত দেশটির ২৩টি অঙ্গরাজ্যের মধ্যে ৬টিতে বিদ্যুতের ঘাটতি ছিল। গতকাল রাতে কিছুক্ষণের জন্য রাজধানী কারাকাসের কিছু অংশে বিদ্যুৎ ফিরে এলে উল্লাস করে সাধারণ মানুষ। তবে তা দীর্ঘস্থায়ী হয়নি। বিদ্যুৎ আসা–যাওয়ার মধ্যেই ছিল।

বিদ্যুৎ না থাকায় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানগুলো আজও বন্ধ রয়েছে। গণপরিবহনের অভাবে রাজধানী কারাকাসসহ বিভিন্ন স্থানে চলাচল কঠিন হয়ে পড়েছে।

প্রেসিডেন্ট মাদুরোর পদত্যাগের দাবিকে আরও বেগবান করতে জনগণকে রাস্তায় নামার আহ্বান জানিয়েছেন গুয়াইদো। সেনাবাহিনীকে ‘একনায়কদের রক্ষাবর্ম’ হিসেবে কাজ বন্ধের আহ্বান জানানোর পাশাপাশি জনগণের উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘আপনাদের রাস্তায় নেমে প্রতিবাদের ও দাবি জানানোর অধিকার রয়েছে, কারণ এই সরকার ভেনেজুয়েলার মানুষকে মেরে ফেলছে।’
এখনো পর্যন্ত ৫০টির বেশি দেশ ভারপ্রাপ্ত প্রেসিডেন্ট হিসেবে গুয়াইদোকে সমর্থন জানালেও দেশটির সেনাবাহিনীর শীর্ষ কর্মকর্তারা এখনো মাদুরোকেই সমর্থন করছেন।