পুলওয়ামা হামলার অন্যতম হোতা সংঘর্ষে নিহত!

ভারতনিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরে হামলার সন্দেহভাজনদের অন্যতম জঙ্গি সংঘর্ষে নিহত হয়েছেন। তাঁর নাম মুদসির আহমেদ খান। তিনি জইশ-ই-মুহাম্মদের নেতা। মুদসির আহমেদ খান ওরফে মোহম্মদ ভাই ইলেকট্রিশিয়ান হিসেবে পরিচিত ছিলেন।

এনডিটিভির খবরে বলা হয়েছে, ভারতীয় সেনাসদস্যদের সঙ্গে জঙ্গিদের সংঘর্ষে জইশ-ই-মুহাম্মদের তিন জঙ্গি নিহত হয়েছে। তিনজনের মধ্যে পুলওয়ামা হামলার সন্দেহভাজনদের একজন রয়েছেন বলে দাবি ভারতীয় সেনাবাহিনীর। তাঁর নাম মুদসির আহমেদ খান।

রোববার সীমান্তের ত্রালের পিঙলিশ এলাকায় তল্লাশি শুরু করে ভারতের সেনাবাহিনী। তল্লাশি চালানোর সময় জঙ্গিদের সঙ্গে গুলিবিনিময় শুরু হয়। এতে তিন জঙ্গি নিহত হয়। সোমবার ভোরের দিকে তাদের শনাক্ত করা হয়। তাঁদেরই একজন মুদসির আহমেদ খান। ২৩ বছর বয়সী মুদসির ইলেকট্রিকাল ইঞ্জিনিয়ারিং নিয়ে স্নাতক করেছন। ওই যুবক তাঁর এলাকায় মোহম্মদ ভাই নামেই পরিচিত ছিলেন। পুলওয়ামার বাসিন্দা ওই যুবকই সিআরপিএফে হামলার গাড়ি এবং বিস্ফোরকের ব্যবস্থা করে দিয়েছিলেন বলে অভিযোগ করে আসছে ভারত।

পুলওয়ামার মীর মহল্লার বাসিন্দা মুদসির আহমেদ খান জইশে যোগ দেন ২০১৭ সালে। জঙ্গি সংগঠনের গোপন কর্মী হিসেবে কাজ করতেন। এরই মধ্য নূর মুহম্মদ তান্ত্রেই ওরফে নূর ত্রালি নামে জইশ-ই-মুহাম্মদের এক সক্রিয় জঙ্গির সংস্পর্শে আসেন তিনি। নূর ত্রালিই উপত্যকায় জঙ্গি সংগঠনগুলোকে সক্রিয় রাখতে সাহায্য করতেন।

ভারত ও পাকিস্তান দুই দেশের সর্বশেষ সংকটের শুরু ১৪ ফেব্রুয়ারি। ওই দিন ভারতনিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরের পুলওয়ামায় দেশটির আধা সামরিক সিআরপিএফের গাড়িবহরে আত্মঘাতী হামলায় ৪০ জনের বেশি জওয়ান নিহত হন। পাকিস্তানভিত্তিক জঙ্গি সংগঠন জইশ-ই-মুহাম্মদ এ হামলার দায় স্বীকার করে। এ ঘটনার ১২ দিন পর ২৬ ফেব্রুয়ারি ভোরে পাকিস্তাননিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরের বালাকোটে বিমান হামলা চালায় ভারত। নয়াদিল্লির দাবি, ওই হামলায় পাকিস্তানভিত্তিক জঙ্গি গোষ্ঠী জইশ-ই-মুহাম্মদের বড় ঘাঁটি গুঁড়িয়ে গেছে। নিহত হয়েছে ৩০০ জঙ্গি। জঙ্গি ঘাঁটিতে আকাশপথে মিরাজ-২০০০ যুদ্ধবিমান দিয়ে হামলা চালায় ভারতীয় বিমানবাহিনী। কিন্তু ওই হামলায় এখন পর্যন্ত মাত্র একজনের আহত হওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত হয়েছে বলে দাবি হামলাস্থল পাকিস্তানশাসিত কাশ্মীরের বালাকোটের বাসিন্দাদের। এরপরই প্রতিবেশী দেশ দুটির মধ্যে চরম উত্তেজনা চলছে। পাকিস্তানের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, জঙ্গিদের লাশ কই। তবে ইতালির এক সাংবাদিক দাবি করেছেন, ভারতের আঘাত হানা জায়গা থেকে কয়েকটি দেহ সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়েছে।

এদিকে সেই হামলার পরদিনই ভারতের আকাশসীমায় ঢুকে পড়ে পাকিস্তানের একাধিক যুদ্ধবিমান। তার মধ্যে ছিল এফ-১৬ যুদ্ধবিমান। পরে ভারতের পক্ষ থেকে জানানো হয়, এ দেশের সৈন্য ঘাঁটিই ছিল পাকিস্তানের আক্রমণের লক্ষ্য। কিন্তু তা অস্বীকার করেছে পাকিস্তান।

ভারতীয় যুদ্ধবিমানের একজন পাইলটকে আটকের দাবি করে তাঁর ভিডিও প্রকাশ করেছে পাকিস্তান। যদিও কিছুক্ষণ পরই সেই ভিডিও মুছে ফেলা হয়েছে। সেই ভিডিওতে একজন ব্যক্তিকে চোখ বাঁধা অবস্থায় দেখা যায়। ভারতের পক্ষ থেকে একজন পাইলট নিখোঁজ হওয়ার কথা স্বীকার করা হয়েছে। ভারতের দুটি বিমান ভূপাতিত করে পাকিস্তান, আটক করে ভারতীয় পাইলট অভিনন্দন বর্তমানকে। অবশ্য গত শুক্রবার ভারতীয় পাইলট অভিনন্দনকে ছেড়ে দেওয়ার মধ্য দিয়ে ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে বিরাজমান উত্তেজনা কমার লক্ষণ দেখা গেছে।