ভেনেজুয়েলায় দুটি সামরিক বিমান পাঠিয়েছে রাশিয়া

কারাকাস বিমানবন্দরে রাশিয়ার একটি উড়োজাহাজ। ছবি: রয়টার্স
কারাকাস বিমানবন্দরে রাশিয়ার একটি উড়োজাহাজ। ছবি: রয়টার্স

ভেনেজুয়েলার রাজধানী কারাকাসে পৌঁছেছে রাশিয়ার দুটি সামরিক বিমান। গত শনিবার কয়েক ডজন সেনা ও বিপুলসংখ্যক সরঞ্জাম নিয়ে বিমান দুটি কারাকাসে অবতরণ করে। রাশিয়ার সরকারি সংবাদ সংস্থা স্পুটনিকের এক প্রতিবেদনে বলা হয়, প্রযুক্তিগত সামরিক চুক্তি পূরণে এই সামরিক বিমান পাঠানো হয়েছে।

ভেনেজুয়েলার সাংবাদিক হাভিয়ার মায়রকা এক টুইটার বার্তায় বলেন, তিনি উড়োজাহাজগুলো থেকে প্রায় ১০০ জন সেনা এবং ৩৫ টনের মতো সরঞ্জাম নামাতে দেখেছেন। মায়রকা ওই টুইটে আরও বলেন, রাশিয়ার বিমানবাহিনীর অ্যান্তনভ-১২৪ বিমান ও একটি ছোট জেট কারাকাসে অবতরণ করে। রাশিয়ার জেনারেল ভাসিলি তনকুশকরাভ সৈন্যবাহিনীকে বিমান থেকে নামানোর কাজ পরিচালনা করেন।

তিন মাস আগে যৌথ সামরিক কার্যক্রম পরিচালনায় সম্মত হয় দুই দেশ। আর এর পরেই এই উড়োজাহাজ পাঠাল রাশিয়া।

ভেনেজুয়েলার ঘনিষ্ঠ মিত্র রাশিয়া। দক্ষিণ আমেরিকার এই দেশকে কোটি কোটি ডলার ঋণ ও দেশটির তেলশিল্প ও সামরিক শক্তিকে সব সময় সমর্থন দিচ্ছে তারা।

ভেনেজুয়েলার প্রেসিডেন্ট নিকোলা মাদুরোর বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রের পদক্ষেপ ও নিষেধাজ্ঞার তীব্র সমালোচনা করে আসছে রাশিয়া।

সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্র ও ভেনেজুয়েলার মধ্যে সম্পর্ক খারাপ হওয়ার পর মস্কো ও ভেনেজুয়েলার মধ্যকার সম্পর্ক আরও শক্তিশালী হয়েছে। গত ডিসেম্বরে ভেনেজুয়েলায় দুটি পরমাণু বোমারু টিইউ-১৬০ বিমান পাঠায় রাশিয়া। মাদুরোর প্রতি সমর্থন ও একই সঙ্গে নিজেদের সামরিক শক্তি প্রকাশের জন্য এ বিমান পাঠায় তারা। ওই বিমান দুটি ব্ল্যাকজ্যাক নামে পরিচিত। এর সঙ্গে রয়েছে একটি এএন-১২৪ পরিবহন বিমান এবং আইএল-৬২ যাত্রীবাহী বিমান।

বেশ কিছুদিন ধরে ভেনেজুয়েলায় রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক সংকট তীব্র আকার ধারণ করেছে। দ্রব্যমূল্য বেড়ে যাচ্ছে। খাবার ও ওষুধের মতো মৌলিক পণ্য কিনতে হিমশিম খাচ্ছেন সেখানকার জনগণ। অনেকে দেশ ছেড়ে চলে গেছেন। ২০১৫ সাল থেকে কমপক্ষে ২৭ লাখ মানুষ ভেনেজুয়েলা ছেড়ে পালিয়েছেন। এর মধ্যে গত ১০ জানুয়ারি মাদুরো দ্বিতীয় মেয়াদে ক্ষমতায় বসলে দেশজুড়ে বিক্ষোভ শুরু হয়। গত বছর এক প্রশ্নবিদ্ধ নির্বাচনে জয়ী হন মাদুরো। বিরোধীরা প্রেসিডেন্ট নিকোলা মাদুরোর বৈধতা নিয়ে প্রশ্ন তুলে অবাধ ও স্বচ্ছ নির্বাচন দাবি করছে। পরে গত ২৩ জানুয়ারি ভেনেজুয়েলার বিরোধী নেতা ও পার্লামেন্টের স্পিকার গুয়াইদো নিজেকে দেশটির অন্তর্বর্তীকালীন প্রেসিডেন্ট ঘোষণা করেন; যদিও দেশটির অঙ্গরাজ্য ও সেনাবাহিনীর ওপর তাঁর কোনো নিয়ন্ত্রণ নেই।

ইতিমধ্যে যুক্তরাষ্ট্র ও ২০টির বেশি দেশ হুয়ান গুয়াইদোকে ভেনেজুয়েলার অন্তর্বর্তীকালীন প্রেসিডেন্ট হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছে। তবে মিত্র হিসেবে রাশিয়াকে সব সময় পাশে পাচ্ছেন মাদুরো।