সরে দাঁড়ালেন জেট এয়ারওয়েজের চেয়ারম্যান

জেট এয়ারওয়েজের প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান নরেশ গয়াল। ছবি: রয়টার্স
জেট এয়ারওয়েজের প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান নরেশ গয়াল। ছবি: রয়টার্স

দেনায় জর্জরিত ভারতীয় বিমান সংস্থা জেট এয়ারওয়েজের চেয়ারম্যানের পদ থেকে সরে দাঁড়িয়েছেন সংস্থাটির প্রতিষ্ঠাতা নরেশ গয়াল। এর ফলে ভারতের বেসরকারি খাতের সবচেয়ে পুরোনো এই বিমান সংস্থাটি সচল রাখার সম্ভাবনা তৈরি হলো।

বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়, প্রায় ১০০ কোটি ডলার ঋণের দায় নিয়ে টিকে থাকার চেষ্টা করছে জেট। সংস্থাটি তাদের কর্মী, সরবরাহকারী ও লিজিং কোম্পানিদের বেতন দিতে হিমশিম খাচ্ছে। অর্থাভাবে নিজেদের দুই-তৃতীয়াংশ বিমান উড্ডয়নও বন্ধ রেখেছে সংস্থাটি। কিন্তু নরেশ গয়াল এত দিন ধরে কোম্পানির ওপর তাঁর নিয়ন্ত্রণ ছাড়তে চাচ্ছিলেন না। শেষ পর্যন্ত চাপের মুখে নতি স্বীকার করতে বাধ্য হলেন তিনি।

এদিকে নরেশ গয়ালের এই ঘোষণার পরপরই জেট এয়ারওয়েজের শেয়ারের দাম এক লাফে ১২ শতাংশ বেড়ে গেছে। নতুন বিনিয়োগকারীদের কাছে শেয়ার বিক্রি শুরু না করা পর্যন্ত ব্যাংকগুলো তাদের ২০ কোটি ডলারেরও বেশি ঋণ দেবে বলেও জানিয়েছে সংস্থাটি।

বর্তমানে জেট এয়ারওয়েজের মালিকানার ৫২ শতাংশই নরেশ গয়াল ও তাঁর পরিবারের দখলে রয়েছে। চেয়ারম্যানের পদ ছাড়ার পর তাঁরা কতটুকু শেয়ার ধরে রাখবেন, সেটা পরিষ্কার নয়। তবে বেশির ভাগ মালিকানাই যে তাঁরা হারাতে যাচ্ছেন, সেটি একরকম নিশ্চিত।

এর আগে মার্চের মধ্যে বকেয়া বেতন পরিশোধ না করা হলে জেট এয়ারওয়েজের পাইলটরা বিমান চালনা বন্ধ করে দেবেন বলে হুমকিও দিয়েছিলেন। বিবিসি বলছে, সংস্থাটির এমন দুর্দশার মূলে ছিলেন নরেশ গয়াল। এত দিন তিনি ক্ষমতা ছাড়তে অস্বীকৃতি জানিয়ে আসায় অন্য বিনিয়োগকারীরাও বিনিয়োগ করেননি।
এর আগে ভারতের অন্যতম বড় কোম্পানি টাটা গ্রুপও বিমান সংস্থা জেট এয়ারওয়েজকে কিনে নেওয়ার ব্যাপারে আগ্রহ দেখিয়েছিল। কিন্তু পরিচালনা পর্ষদ থেকে নরেশ গয়াল সরে না দাঁড়ানোয় এই সিদ্ধান্ত থেকে পিছু হটে টাটা গ্রুপ।
বিভিন্ন প্রতিবেদন থেকে এমনটাও জানা গেছে, খোদ মোদি সরকারই বিভিন্ন সরকারি ব্যাংককে অনুরোধ করেছেন বিমান সংস্থাটিকে বাঁচাতে এগিয়ে আসতে। লোকসভা নির্বাচনের আগে এত মানুষ চাকরি হারাক, এমনটা চাইছে না ভারতীয় সরকার।
১৯৯৩ সাল থেকে বাণিজ্যিক কার্যক্রম শুরু করে মুম্বাইভিত্তিক বিমান সংস্থা জেট এয়ারওয়েজ। ২০১৭ সালের তথ্য অনুযায়ী, ইন্ডিগোর পর এটি ভারতের দ্বিতীয় বৃহত্তম বিমান সংস্থা। কিন্তু দেনায় জর্জরিত হয়ে পড়ায় বেশ কিছুদিন ধরেই সংকটে ভুগছে সংস্থাটি।