সহিংস খবরে জেল-জরিমানা

ছবি: রয়টার্স
ছবি: রয়টার্স

সহিংস কোনো বিষয় থাকলে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম প্রতিষ্ঠানকে জেল-জরিমানার মতো কঠিন মাশুল গুনতে হবে। আজ বৃহস্পতিবার অস্ট্রেলিয়ার পার্লামেন্টে এমন বিধান রেখে নতুন একটি আইন পাস হয়। দ্রুততার সঙ্গে সহিংস কনটেন্ট অপসারণ না করলে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম প্রতিষ্ঠানগুলোকে বার্ষিক বৈশ্বিক আয়ের ১০ শতাংশ পর্যন্ত জরিমানা এবং কার্যনির্বাহী সদস্যদের তিন বছর পর্যন্ত কারাদণ্ডের বিধান রয়েছে এই আইনে।

নিউজিল্যান্ডের ক্রাইস্টচার্চে ১৫ মার্চ এক বন্দুকধারীর হামলায় ৫০ জন নিহত হয়। এই হামলার দৃশ্য ফেসবুকে সরাসরি প্রচার করে বন্দুকধারী। ভিডিওটি সরিয়ে ফেলতে ফেসবুক কর্তৃপক্ষের প্রায় এক ঘণ্টা সময় লাগে। এর মধ্যে সারা বিশ্বের নানা প্রান্তে তা ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়ে। অস্ট্রেলিয়ার প্রধানমন্ত্রী স্কট মরিসনের মতে, এই দীর্ঘ সময়সীমা অগ্রহণযোগ্য।

ওই ঘটনায় শ্বেতাঙ্গ জঙ্গিবাদী হিসেবে অস্ট্রেলিয়ার নাগরিক ব্রেন্টন টারান্টকে (২৮) গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তাঁর বিরুদ্ধে হত্যার অভিযোগ আনা হয়। কোনো আবেদন গ্রাহ্য না করে তাঁকে রিমান্ডে নেওয়া হয়। কাল ৫ এপ্রিল টারান্টকে আদালতে হাজির করা হবে। পুলিশের ধারণা, তাঁর বিরুদ্ধে আরও অভিযোগ আনা হতে পারে।

এখন থেকে ইউটিউবের স্বত্বাধিকারী ফেসবুক এবং আলফাবেটস গুগলের মতো প্রতিষ্ঠানগুলো হত্যা, ধর্ষণ বা নির্যাতনের ছবি বা ভিডিও, যা সহিংস ঘটনার পরিচায়ক, তাৎক্ষণিকভাবে এসব সরিয়ে না ফেললে অস্ট্রেলিয়ায় তা শাস্তিযোগ্য অপরাধ বলে গণ্য হবে। প্রতিষ্ঠানগুলোকে ‘যৌক্তিক’ সময়সীমার মধ্যে অস্ট্রেলিয়ার পুলিশকেও বিষয়টি সম্পর্কে জানাতে হবে।

অস্ট্রেলিয়ার যোগাযোগ ও শিল্পমন্ত্রী মিচ ফিফিল্ড ক্যানবেরায় সাংবাদিকদের বলেন, ‘সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম প্রতিষ্ঠানগুলোকে খুব স্পষ্ট করে জানিয়ে দেওয়া প্রয়োজন যে তাদের আচরণে আমরা পরিবর্তন প্রত্যাশা করি।’ প্রতিষ্ঠানগুলো সময়সীমা মেনেছে কি না, তা বিচারকেরা নির্ধারণ করবেন।

ই-মেইলে পাঠানো বিবৃতিতে গুগলের এক মুখপাত্র বলেন, ‘আমাদের প্ল্যাটফর্মে সন্ত্রাসবাদী কোনো কনটেন্ট একেবারেই বরদাশত করা হবে না। সন্ত্রাসবাদী কনটেন্ট চিহ্নিত করে সরিয়ে ফেলতে নতুন প্রযুক্তির বিকাশে আমরা দৃঢ় প্রতিজ্ঞ।’ ফেসবুকের মুখপাত্র তাৎক্ষণিক কোনো মন্তব্য করতে পারেননি।

এই আইনের প্রতি সমর্থন জানিয়েছে অস্ট্রেলিয়ার বিরোধী দল লেবার পার্টি। তবে আসন্ন মে মাসের নির্বাচনে জয়ী হলে প্রযুক্তি শিল্পপ্রতিষ্ঠানগুলোর সঙ্গে বসে সম্ভাব্য সংশোধনীর পথ খোলা রাখবে বলে জানায় তারা। নির্বাচনের পরও অন্তত জুলাই মাস পর্যন্ত নবনির্বাচিত আইনপ্রণেতারা অস্ট্রেলিয়ার সংসদে দায়িত্ব গ্রহণ করতে পারবেন না। সমালোচকদের ভাষ্য, কারও সঙ্গে আলাপ-আলোচনা বা যথাযথ বিবেচনা না করে হুট করে সিদ্ধান্ত নিয়ে নিয়েছে সরকার।