পশ্চিমবঙ্গের তিন আসনে কড়া নিরাপত্তায় ভোট গ্রহণ চলছে

ভারতের লোকসভা নির্বাচনে দ্বিতীয় দফার ভোট গ্রহণ শুরু হয়েছে। আজ বৃহস্পতিবার সকাল সাতটা থেকে কড়া নিরাপত্তার মধ্য দিয়ে ১৩টি রাজ্যের ৯৭টি আসনে ভোট গ্রহণ চলছে।

৯৭টি আসনে ১ হাজার ৬০০ জন প্রার্থী রয়েছেন। এর মধ্যে পশ্চিমবঙ্গের তিনটি আসন দার্জিলিং, রায়গঞ্জ ও জলপাইগুড়িতে লড়ছেন ৪২ জন প্রার্থী। তবে মূল লড়াই হচ্ছে তৃণমূল, বিজেপি, বাম দল ও কংগ্রেসের মধ্যে। শুরুতেই দু–একটি কেন্দ্রে ইভিএম কাজ করেনি বলে অভিযোগ পাওয়া যায়। তবে কর্তৃপক্ষ সেই ইভিএম সরিয়ে নতুন ইভিএম দিয়ে ভোট শুরু করে। দু–একটি কেন্দ্রে বিরোধী দলের এজেন্টকে ঢুকতে বাধা দেওয়া হচ্ছে—এমন অভিযোগও পাওয়া যায়।

দার্জিলিংয়ে দাঁড়িয়েছেন ১৬ জন প্রার্থী, রায়গঞ্জে ১৪ জন ও জলপাইগুড়িতে ১২ জন প্রার্থী। প্রথম দফার নির্বাচনে ৫১ শতাংশ বুথে কেন্দ্রীয় নিরাপত্তা বাহিনী মোতায়েন ছিল। দ্বিতীয় দফার ভোটে তা বাড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। এবার ৮০ শতাংশ বুথে কেন্দ্রীয় নিরাপত্তা বাহিনী নিয়োগ করা হয়েছে। বাকি ২০ শতাংশ বুথে রয়েছে রাজ্যের সশস্ত্র পুলিশ।

রায়গঞ্জ আসনে ১ হাজার ৬২৩টি, দার্জিলিংয়ে ১ হাজার ৮৯৯টি এবং জলপাইগুড়িতে ১ হাজার ৮৬৮টি বুথে ভোট নেওয়া হচ্ছে। তবে ভোট শুরুর সময় রায়গঞ্জের আবদুলঘাটা কেন্দ্রে কোনো ভোটকর্মীকে পাওয়া যায়নি।

পশ্চিমবঙ্গে তিনটি আসনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন যে ৪২ জন প্রার্থী, তার মধ্যে ১৩ জনের বিরুদ্ধে রয়েছে ফৌজদারি অপরাধের মামলা। সবচেয়ে বেশি মামলা রয়েছে দার্জিলিং আসনের সিপিএম প্রার্থী সমন পাঠকের বিরুদ্ধে। তাঁর বিরুদ্ধে সাতটি মামলা রয়েছে। রায়গঞ্জ আসনের তৃণমূল প্রার্থী কানহাইয়ালাল আগরওয়াল এবং কংগ্রেস প্রার্থী দীপা দাসমুন্সির বিরুদ্ধে রয়েছে চারটি করে ফৌজদারি মামলা। এ ছাড়া দার্জিলিং কেন্দ্রের জন–আন্দোলন পার্টির প্রার্থী হরকা বাহাদুর ছেত্রী এবং জলপাইগুড়ি কেন্দ্রের এসইউসি প্রার্থী হরিভক্ত সরদারের বিরুদ্ধে রয়েছে তিনটি করে ফৌজদারি মামলা। মনোনয়নপত্রের সঙ্গে দেওয়া প্রার্থীর তথ্য যাচাই করে এ কথা জানিয়েছে পশ্চিমবঙ্গের ইলেকশন ওয়াচ ও এডিআর।

ইলেকশন ওয়াচ ও এডিয়ারের প্রতিবেদনে বলা হয়, পশ্চিমবঙ্গের ১৪ জন প্রার্থী কোটিপতি। তৃণমূল কংগ্রেসের তিন প্রার্থীই কোটিপতি। বিজেপি ও কংগ্রেসের তিন প্রার্থীর মধ্যে দুজন করে কোটিপতি।

এবার দার্জিলিং আসনে মূল লড়াই হচ্ছে চার প্রার্থীর মধ্যে। তাঁরা হলেন বিজেপির অমর সিং রাই, বিজেপির রাজু বিস্ত, সিপিএমের সমন পাঠক এবং কংগ্রেসের শঙ্কর মালাকার। রায়গঞ্জ আসনেও মূল লড়াই হবে চার প্রার্থীর মধ্যে। এঁরা হলেন তৃণমূলের কানহাইয়ালাল আগরওয়াল, বিজেপির দেবশ্রী চৌধুরী, বামফ্রন্টের মোহাম্মদ সেলিম এবং কংগ্রেসের দীপা দাসমুন্সি।

আর জলপাইগুড়ি আসনেও লড়ছেন চারজন। প্রার্থীরা হলেন তৃণমূলের বিজয়চন্দ্র বর্মণ, বিজেপির জয়ন্ত রায়, বামফ্রন্টের ভগীরথ রায় এবং কংগ্রেসের মণিকুমার ডারনাল।

আজ সকালে রায়গঞ্জ আসনের গোয়ালপোখরের একটি ভোটকেন্দ্রে ভোটদানে বাধা দেওয়ার খবর পেলে এবিপি আনন্দর সাংবাদিক পার্থপ্রতিম ঘোষ এবং ক্যামেরাম্যান স্বপন মজুমদার ঘটনাস্থলে গেলে তাঁদের বাঁশ ও লাঠি দিয়ে বেদম পেটানো হয়। ভেঙে দেওয়া হয় ক্যামেরা। গুরুতর আহত সাংবাদিকদের নিয়ে যাওয়া হয়েছে হাসপাতালে।

এ ছাড়া রায়গঞ্জের হেমতাবাদে কেন্দ্রীয় বাহিনী না আসায় ভোট বয়কট করেছেন স্থানীয় লোকজন।