সিডনিতে বাংলাদেশি নারী হত্যায় স্বামীর স্বীকারোক্তি

সৈয়দা নিরুপমা ও আলতাফ হোসেন। ছবিটি ফেসবুক থেকে সংগৃহীত
সৈয়দা নিরুপমা ও আলতাফ হোসেন। ছবিটি ফেসবুক থেকে সংগৃহীত

অস্ট্রেলিয়ার সিডনিতে বাংলাদেশি নারী খুনের ঘটনায় আটক তাঁর স্বামীর বিরুদ্ধে হত্যার অভিযোগ আনা হয়েছে। স্ত্রীকে ছুরিকাঘাতে হত্যার কথা জিজ্ঞাসাবাদে স্বীকার করেছেন তিনি।

গতকাল রোববার ভোরে সিডনির মিন্টো এলাকার একটি বাড়ি থেকে ৩৩ বছর বয়সী বাংলাদেশি নারী সৈয়দা নিরুপমার লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। এ সময় তাঁর স্বামী আলতাফ হোসেনকে আটক করা হয়।

নিরুপমা খুনের ঘটনায় প্যারামাটা আদালতে হত্যা মামলা করা হয়েছে। এই মামলায় আজ সোমবার নিরুপমার স্বামী আলতাফকে আদালতে হাজির করা হয়।

আদালতে আসামিপক্ষের আইনজীবী দাবি করেন, তাঁর মক্কেল আলতাফ আত্মরক্ষার জন্য নিরুপমাকে ছুরিকাঘাত করেন।

আলতাফকে আটক করার সময় তাঁর হাতে মারাত্মক জখম ছিল। তাঁকে হাসপাতালে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে থানায় নিয়ে আসে পুলিশ।

পুলিশি জিজ্ঞাসাবাদে স্ত্রীকে হত্যার কথা স্বীকার করেন ৪৯ বছর বয়সী আলতাফ। তিনি বলেন, ‘আমি তাঁকে (নিরুপমা) হত্যা করেছি।’

তবে আলতাফ দাবি করেন, আত্মরক্ষার জন্যই এই কাজ করেছেন তিনি।

নিরুপমার লাশ উদ্ধার করতে পুলিশ যখন ঘটনাস্থলে যায়, তখন আলতাফ বলেছিলেন, ‘এটা সে (নিরুপমা) করেছে।’

আদালত ও পুলিশের কাছে দেওয়া জবানবন্দিতে আলতাফ জানান, তিনি মানসিক স্বাস্থ্য সমস্যায় ভুগছিলেন।

সংবাদমাধ্যমে দেওয়া সাক্ষাৎকারে নিরুপমার পরিবারের এক সদস্য জানায়, আলতাফ দীর্ঘদিন শারীরিক অসুস্থতার কারণে কর্মক্ষম ছিলেন না। নিরুপমার আয়ে পরিবার চলছিল।

ঘটনাস্থল থেকে অক্ষত অবস্থায় এই দম্পতির ছয় বছরের মেয়ে ও দশ বছরের ছেলেকে উদ্ধার করে পুলিশ। তাদের সঙ্গে থাকার যুক্তি দেখিয়ে আলতাফ জামিন চাইলে তা নামঞ্জুর করেন আদালত।

আগামী ৩০ এপ্রিল এই মামলার শুনানি শুরু করবেন আদালত।

নিরুপমা সম্পর্কে প্রতিবেশীদের ভাষ্য, তিনি অত্যন্ত অমায়িক একজন মানুষ ছিলেন। প্রতিদিন বাচ্চাদের স্কুলে আনা-নেওয়ার কাজ তিনিই করতেন।

গতকাল রোববার এক পারিবারিক বন্ধুর ফোনে নিরুপমার মৃত্যুর বিষয়টি জানতে পেরে পুলিশ দ্রুত ঘটনাস্থলে যায়। সিডনির মিন্টো এলাকার বাড়ির গ্যারেজে তাঁর লাশ খুঁজে পায় পুলিশ

আলতাফ ২০০১ সালে বাংলাদেশ থেকে অস্ট্রেলিয়ায় আসেন। তিনি অস্ট্রেলিয়ার নাগরিক।

সিডনিতে বাংলাদেশি নারী খুন হওয়ায় প্রবাসীদের মধ্যে শোক বিরাজ করছে।