দমদমে দম ফেলার জো নেই ৩ নেতার

সৌগত রায়, নেপালদেব ভট্টাচার্য, শমীক ভট্টাচার্য। ছবি: ভাস্কর মুখার্জি
সৌগত রায়, নেপালদেব ভট্টাচার্য, শমীক ভট্টাচার্য। ছবি: ভাস্কর মুখার্জি

পশ্চিমবঙ্গের কলকাতার দমদম আসনটিতে লোকসভা নির্বাচনে ত্রিমুখী লড়াই হবে। গুরুত্বপূর্ণ এই আসনে আছে কলকাতা বিমানবন্দর, পাতালরেল স্টেশন, চক্ররেল, কলকাতার কেন্দ্রীয় কারাগারসহ বিভিন্ন শিল্পপ্রতিষ্ঠান।

পশ্চিমবঙ্গের লোকসভার ৪২টি আসনের মধ্যে দমদম আসনটি তাই গুরুত্বপূর্ণ। রাজ্যে ক্ষমতাসীন তৃণমূল এবং বিরোধী সিপিএম ও বিজেপির তিন প্রার্থী এ আসন পেতে জোর লড়াইয়ে নেমেছেন।

১৯৭৭ থেকে ২০১৪ সাল পর্যন্ত লোকসভার ১১টি নির্বাচনে এ আসনে পাঁচবার জিতেছে সিপিএম, আর দুবার করে জিতেছে তৃণমূল ও বিজেপি। একবার করে জিতেছে কংগ্রেস ও জাতীয় লোকদল। ফলে, চার দলেরই অস্তিত্ব আছে এই আসনের ভোটারদের মধ্যে।

দমদম আসনে তৃণমূল প্রার্থী করেছে দলের প্রবীণ নেতা সৌগত রায়কে। তিনি এই আসনেরই সাংসদ। পরপর দুবার জিতেছেন এই আসনে। পেশায় অধ্যাপক সৌগত ২০০৯ থেকে ২০১২ সাল পর্যন্ত ছিলেন ইউপিএর মনমোহন সিং সরকারের পৌর ও নগর উন্নয়ন প্রতিমন্ত্রী। তিনি পাঁচবার বিধানসভার সদস্য ছিলেন। ছিলেন কংগ্রেসের ছাত্রসংগঠন ছাত্র পরিষদের রাজ্য সভাপতি। প্রদেশ কংগ্রেসের সাধারণ সম্পাদকও।

বামফ্রন্ট প্রার্থী করেছেন দলের প্রবীণ নেতা নেপালদেব ভট্টাচার্যকে। স্কুলজীবন থেকে তিনি জড়িয়ে আছেন বাম রাজনীতির সঙ্গে। ১৯৮১ থেকে ১৯৮৮ সাল পর্যন্ত তিনি ছিলেন ভারতীয় সংসদ রাজ্যসভার সদস্য বা সাংসদ (এমপি)। ২০১১ সালে উত্তর ২৪ পরগনার ভাটপাড়া বিধানসভা কেন্দ্রে তিনি বিধায়ক পদে দাঁড়িয়ে হেরেছিলেন তৃণমূল প্রার্থী অর্জুন সিংয়ের কাছে। এই অর্জুন সিংই সম্প্রতি তৃণমূল ছেড়ে যোগ দিয়েছেন বিজেপিতে। আর বিজেপির টিকিটে এবার লড়ছেন বারাকপুর লোকসভা আসনে।

দমদমে বিজেপির প্রার্থী দলের ‘হেভিওয়েট’ প্রার্থী শমীক ভট্টাচার্য। তিনি রাজ্য বিজেপির শীর্ষ নেতা এবং দলীয় মুখপাত্র। ২০১৪ সালে উপনির্বাচনে বসিরহাট দক্ষিণ কেন্দ্রের বিজেপি বিধায়ক হন। পরে অবশ্য ২০১৬ সালের নির্বাচনে হেরে যান।

আর কংগ্রেস প্রার্থী করেছে দলের সাবেক ছাত্রনেতা সৌরভ সাহাকে।

সৌরভ বলেছেন, ‘এখনই ভাববেন না যে আমি হেরে যাচ্ছি। আগে ফলাফল দেখুন। হয়তো ত্রিমুখী এই শীর্ষ তিন নেতার লড়াইয়ের ফাঁকফোকর দিয়ে আমিও বেরিয়ে যেতে পারি।’

পর্যবেক্ষকেরা অবশ্য মনে করছেন, লড়াই হবে তৃণমূল, বিজেপি ও সিপিএমের মধ্যে। আর মর্যাদার এই আসন পেতে তিন দল জোর তৎপরতা চালাচ্ছে। এই প্রচণ্ড গরমকে তুচ্ছ করে, বয়সকে উপেক্ষা করে তিন নেতা জোর প্রচার চালাচ্ছেন। তিন অভিজ্ঞ নেতার চরম লড়াইয়ের পরিণতি কী হবে, তা জানা যাবে ২৩ মে ফল ঘোষণার দিন।