কোন দল হাসবে শেষ হাসি?

অস্ট্রেলিয়ার জাতীয় নির্বাচনে মুখোমুখি লিবারেল পার্টির স্কট মরিসন ও লেবার পার্টির বিল শর্টেন।
অস্ট্রেলিয়ার জাতীয় নির্বাচনে মুখোমুখি লিবারেল পার্টির স্কট মরিসন ও লেবার পার্টির বিল শর্টেন।

দিন নয়, অস্ট্রেলিয়ার ৪৬তম জাতীয় নির্বাচনের বাকি এখন কয়েক ঘণ্টা। আগামীকাল শনিবার দেশটিতে অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে নতুন সরকার গঠনের মহা আয়োজন। অস্ট্রেলিয়ার প্রত্যেক প্রাপ্তবয়স্ক নাগরিকের জন্য ভোট দেওয়া বাধ্যতামূলক, যা অমান্য করা আইনত দণ্ডনীয় অপরাধ। নিজ নিজ অবস্থান থেকে প্রত্যেক নাগরিক জানাবেন নতুন সরকার হিসেবে তাঁদের পছন্দের দলের কথা।

নির্বাচন সামনে রেখে আবারও জনপ্রিয়তা বেড়েছে দেশটির প্রধান বিরোধী দল লেবার পার্টির। এর আগেও দীর্ঘদিন ধরে জনপ্রিয়তার তুঙ্গেই ছিল লেবার পার্টি। কিন্তু গত এক মাসের চিত্রে জনপ্রিয়তার রেখা নিচে নামতে শুরু করেছিল। অস্ট্রেলিয়ায় একক দল হিসেবে টানা তৃতীয় মেয়াদে নির্বাচনে জয়ের ইতিহাস শুধু লেবার পার্টিরই রয়েছে। সে রেশ ধরেই এবার জয়ের সম্ভাবনা বেশি ছিল লেবারের। তবে সরকার দল লিবারেল পার্টি ও বিরোধী দলের নির্বাচনী ইশতেহার প্রকাশ হলে ভোটার সমর্থক বেড়ে যায় লিবারেলের। লিবারেলের করনীতি জনগণের বেশি পছন্দ হয়। কেননা, বিরোধী দল লেবার পার্টির করনীতিতে বেশ কিছু প্রচলিত ব্যবস্থা সংস্কারের ইঙ্গিত প্রকাশ পায়। ফলে ব্যক্তিগত স্বার্থেই অনেক সমর্থক লিবারেলকে ভোট দেওয়ার পক্ষে চলে এসেছিলেন। তবে সে দৃশ্য একদমই বদলাতে শুরু করে নির্বাচনের দিন কয়েক আগে থেকে। বিভিন্ন জরিপে এখন অর্থনীতির পাশাপাশি দেশটির অন্যান্য ক্ষেত্রেও লেবার পার্টিকে উন্নয়নের অগ্রদূত হিসেবে দেখছেন ভোটাররা।

এদিকে সব নির্বাচনী প্রচারণা বন্ধ হয়ে গেলেও প্রার্থীদের আলোচনা সভা করার অনুমতি রয়েছে নির্বাচনের দিনেও। আজ শুক্রবার সকালেও এক ভাষণ প্রদান অনুষ্ঠানের আয়োজন করেন লেবার পার্টির প্রধান বিল শর্টেন। দল ক্ষমতায় গেলে তিনিই হবেন অস্ট্রেলিয়ার ৩১তম প্রধানমন্ত্রী। তাঁর আয়োজিত অনুষ্ঠানটি সিডনির একটি ঐতিহাসিক স্থানে আয়োজন করা হয়। লেবার পার্টির জন্য শহরের অন্যতম সৌভাগ্যের স্থান ব্ল্যাকটাউনে এ আয়োজন করা হয়। এখানেই ১৯৭২ সালে দেওয়া ‘এখনই সময়’ নির্বাচনী প্রচারণা ভাষণের কারণে অন্যতম লেবার নেতা গফ উইটলাম ২৩ বছর পর জোট সরকার দল লিবারেলের বিরুদ্ধে জয় পেয়েছিলেন। একই স্থানে ‘পরিবর্তন’ শীর্ষক প্রচারণা বক্তব্য দেন বিল শর্টেন। ভাষণে শর্টেন তাঁর দলের বিভিন্ন পরিকল্পনার কথা জানান। প্রচারণার স্লোগান ছিল ‘পরিবর্তনের জন্য ভোট দিন’। প্রচারণাটিকে শর্টেনের জয়ের একটি শক্তিশালী হাতিয়ার হিসেবে মনে করছেন অনেকে।

এ দিকে নির্বাচনের মাত্র এক দিন আগে কিংবদন্তিতুল্য অস্ট্রেলিয়ার সাবেক প্রধানমন্ত্রী বব হক মৃত্যুবরণ করেছেন। তিনি লেবার পার্টির সবচেয়ে বেশি মেয়াদে প্রধানমন্ত্রী ছিলেন। গত বুধবার মৃত্যুর ঠিক একদিন আগে লেবার পার্টিকে জয়যুক্ত করার আহ্বান জানিয়েছিলেন তিনি। এটিরও ইতিবাচক প্রভাব পড়তে পারে নির্বাচনে।

এদিকে আজ দিনভর চালানো বিভিন্ন জরিপেও লেবার পার্টি এগিয়ে আছে। এগিয়ে আছে বিভিন্ন বাজিকরের বাজিতেও। অন্যদিকে, তরুণ বাংলাদেশি অস্ট্রেলিয়ানদের মাঝে লেবার পার্টির বিভিন্ন কর্মকাণ্ড নিয়ে অনুযোগ থাকলেও বেশির ভাগ মানুষই লেবারকে পার্টিকেই সমর্থন করবেন বলে আশাবাদী লেবার পার্টির বাংলাদেশি নেতৃবৃন্দ।