যুক্তরাজ্যে বিচ্ছেদপন্থীদের জয়জয়কার

ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) পার্লামেন্ট
ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) পার্লামেন্ট

ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ) থেকে যুক্তরাজ্যের বিচ্ছেদ কার্যকর না হওয়ায় ক্ষুব্ধ বিচ্ছেদপন্থীরা মাত্র ৬ সপ্তাহ আগে গঠন করেছিলেন ‘ব্রেক্সিট পার্টি’। যুক্তরাজ্যে ইইউ পার্লামেন্ট নির্বাচনে সেই ব্রেক্সিট পার্টিরই জয়জয়কার হলো। সোমবার (২৭ মে) ইইউ পার্লামেন্ট নির্বাচনের ফলাফল ঘোষণা হয়।

প্রকাশিত ফলাফলে দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে ব্রেক্সিট-বিরোধী লিবারেল ডেমোক্র্যাট দল (লিবডেম)। আর ভরাডুবি হয়েছে ব্রেক্সিট প্রশ্নে নমনীয় অবস্থান বজায় রাখা ক্ষমতাসীন কনজারভেটিভ ও বিরোধী দল লেবারের। এই নির্বাচনের ফল আবারও জানান দিল ব্রেক্সিটের পক্ষে-বিপক্ষে যুক্তরাজ্যের মানুষ কতটা কট্টরভাবে বিভক্ত।

এর আগে ২৩ থেকে ২৬ জুন ইইউ সদস্যভুক্ত ২৯টি দেশে ক্রমান্বয়ে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। যুক্তরাজ্যে ভোট হয় ২৩ মে।

যুক্তরাজ্যে ১২টি অঞ্চল থেকে মোট ৭৩ জন এমইপি (মেম্বার অব ইউরোপিয়ান পার্লামেন্ট) নির্বাচিত হয়। সোমবার স্থানীয় সময় দুপুর পর্যন্ত প্রকাশিত ১০টি অঞ্চলের ফলাফলে দেখা যায়, ৩২ শতাংশ ভোট পেয়ে শীর্ষ অবস্থানে রয়েছে ব্রেক্সিট পার্টি, যারা কোনো চুক্তি ছাড়াই ইইউর সঙ্গে বিচ্ছেদের পক্ষে। দলটির ২৮ জন এমইপি নির্বাচিত হয়েছেন। ঘোষিত ১০টি অঞ্চলের ফলাফলে ৯টিতেই সর্বোচ্চ ভোট পেয়েছে কট্টর ইইউ-বিরোধী নেতা নাইজেল ফারাজের ব্রেক্সিট পার্টি। লন্ডন ছাড়া ইংল্যান্ডের সবখানেই শীর্ষ অবস্থানে রয়েছে তারা। দলটি ওয়েলসেও সর্বোচ্চ ভোট পেয়েছে।

২০ শতাংশ ভোট পেয়ে দ্বিতীয় অবস্থানে আছে লিবডেম। দলটির বিজয়ী এমইপির সংখ্যা গতবারের চেয়ে ১৪ জন বেড়ে হয়েছে ১৫ জন।

অন্যদিকে ব্রেক্সিট বাস্তবায়ন কিংবা পুনরায় গণভোট দিতে ব্যর্থ ক্ষমতাসীন কনজারভেটিভ দলের মাত্র ৩ জন প্রার্থী জয়ী হয়েছেন, যা গতবারের তুলনায় ১৫ জন কম। ভোটের হিসাবে ক্ষমতাসীনরা এবার পিছিয়ে পঞ্চম অবস্থানে।

ব্রেক্সিট প্রশ্নে ধোঁয়াশা অবস্থান বজায় রাখা লেবার দলের এমইপি সংখ্যা এবার ৮ জন কমে হয়েছে মাত্র ১০ জন। তাদের ভোটের হার কমেছে ১১ শতাংশ।

স্কটল্যান্ডের ৬ জন এমইপির মধ্যে স্কটিশ ন্যাশনালিস্ট পার্টির ৩ জন এবং ব্রেক্সিট পার্টি, লিবডেম ও কনজারভেটিভ পার্টির একজন করে এমইপি জয়ী হবেন বলে আভাস আছে। আর নর্দার্ন আয়ারল্যান্ডের ফলাফল জানা যাবে মঙ্গলবার। সেখানে মাত্র একজন এমইপি নির্বাচিত হবেন।

ব্রেক্সিট পার্টির নেতা নাইজাল ফারাজ বলেন, কথিত প্রগতিশীল গণতান্ত্রিক দলগুলো ২০১৬ সালে অনুষ্ঠিত ব্রেক্সিট গণভোটের রায় বাস্তবায়নে ব্যর্থ হয়েছে। সে কারণেই মাত্র ৬ সপ্তাহ আগে গড়ে ওঠা ব্রেক্সিট পার্টির এমন বিজয়। তবে লিবডেম বলছে, তাদের দেওয়া প্রতিটি ভোট ব্রেক্সিট বাতিলের জন্য।

ব্রেক্সিট প্রশ্নে নমনীয় অবস্থানে থাকা দলগুলোর সম্মিলিত ভোটের হার ৪০ শতাংশ। এই হিসাব দেখিয়ে ব্রেক্সিট-বিরোধীরা ইইউ থেকে বিচ্ছেদ প্রশ্নে পুনরায় গণভোট আয়োজনের যৌক্তিকতা তুলে ধরছে।