ইরানকে সতর্ক করলেন আবে

দীর্ঘ চার দশক পর জাপানের কোনো প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দুই দিনের সফরে ইরানে গেছেন শিনজো আবে। গতকাল বুধবার ইরানের প্রেসিডেন্ট হাসান রুহানির সঙ্গে দেখা করেন তিনি। ছবি: রয়টার্স।
দীর্ঘ চার দশক পর জাপানের কোনো প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দুই দিনের সফরে ইরানে গেছেন শিনজো আবে। গতকাল বুধবার ইরানের প্রেসিডেন্ট হাসান রুহানির সঙ্গে দেখা করেন তিনি। ছবি: রয়টার্স।

পারস্য উপসাগরীয় অঞ্চলে চলমান উত্তেজনার মধ্যে গতকাল বুধবার ইরানের প্রেসিডেন্টের সঙ্গে দেখা করেছেন জাপানের প্রধানমন্ত্রী শিনজো আবে। যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বিরোধের জের ধরে মধ্যপ্রাচ্যে অপ্রত্যাশিত সংঘাত ঘটতে পারে বলে ইরানকে সতর্ক করেছেন তিনি।

যুক্তরাষ্ট্রের মিত্র জাপানের সঙ্গে কূটনৈতিক সুসম্পর্ক রয়েছে ইরানের। এ সফরের মাধ্যমে ইসলামিক প্রজাতন্ত্র এবং যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যকার জটিল রাজনৈতিক বিতর্কে গ্রহণযোগ্য এক মধ্যস্থতাকারী হিসেবে জাপানের আবির্ভাব ঘটতে পারে।

জাপানের নেতা আবে বলেন, ‘যেকোনো মূল্যে সশস্ত্র সংঘাত ঠেকাতে হবে। শুধু ওই অঞ্চলের জন্যই নয়, গোটা বৈশ্বিক উন্নয়নের কথা ভেবেই মধ্যপ্রাচ্যের শান্তি ও স্থিতিশীল অবস্থা নিশ্চিত করতে হবে। কোনো পক্ষই যুদ্ধ চাইছে না। চলমান উত্তেজনা নিরসনে আমরা সর্বোচ্চ সহায়তা করব। এ কারণেই ইরানে এসেছি।’ দীর্ঘ ৪১ বছর পর এই প্রথম জাপানের কোনো প্রধানমন্ত্রী ইরান সফরে এলেন।

ইরান থেকে তেল কেনার ব্যাপারে জাপানের সাম্প্রতিক নিষেধাজ্ঞার ব্যাপারে কোনো মন্তব্য করেননি আবে। ইরানের প্রেসিডেন্ট হাসান রুহানি বলেন, ইরানের কাছ থেকে তেল কিনতে চায় জাপান। রাষ্ট্রীয় টেলিভিশন চ্যানেলে সরাসরি প্রচারিত আবের সঙ্গে যৌথ সংবাদ সম্মেলনে রুহানি বলেন, বৈঠকে ইরানের কাছ থেকে তেল কিনতে আগ্রহ প্রকাশ করেছেন আবে।

এর আগে ইরানের দুই কর্মকর্তা বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে জানান, তেলবিষয়ক অবরোধ নিয়ে তেহরান ও ওয়াশিংটনের মধ্যে টোকিওর মধ্যস্থতা আশা করছে ইরান। এক জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্র তেলের ওপর যে অন্যায্য অবরোধ চাপিয়েছে, তা বাতিল করা উচিত অথবা সাময়িকভাবে তুলে নেওয়া উচিত।’

আমদানি শুরু করতে বলা হলেও ইরানের কাছ থেকে এখনো তেল কেনা শুরু করেনি জাপান। ওয়াশিংটন গত মে মাসে ইরানের তেল রপ্তানির ওপর নিষেধাজ্ঞায় কিছু রদবদল করেছে। এর ফলে জাপানসহ বেশ কিছু দেশ চাইলেই ইরানের কাছ থেকে অশোধিত তেল কিনতে পারবে। আবার কিছু দেশকে ইরানের কাছ থেকে তেল কিনতে কঠোরভাবে নিষেধ করা হয়েছে, অন্যথায় সে দেশগুলোর ওপর অবরোধ ঘোষণা করা হতে পারে।

গত মাসের জাপান সফরে গিয়ে ইরানের সঙ্গে লেনদেনে আবেকে সাধুবাদ জানিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। টোকিও এবং তেহরানের মধ্যে সম্পর্ককে ট্রাম্প ‘খুব ভালো সম্পর্ক’ বলে উল্লেখ করেছেন।

ছয়টি প্রধান শক্তিধর দেশের সঙ্গে ইরানের স্বাক্ষরিত চুক্তি থেকে ট্রাম্প গত বছর যুক্তরাষ্ট্রকে সরিয়ে নেন। তারপর থেকে ইরানের ওপর বিভিন্ন নিষেধাজ্ঞা তিনি পুনর্বহাল করতে শুরু করেন। ইরানের প্রেসিডেন্ট হাসান রুহানি সম্প্রতি এক বিবৃতিতে উল্লেখ করেন, যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে যেকোনো মধ্যস্থতার একটি পূর্বশর্ত হতে হবে—২০১৫ সালের পরমাণু চুক্তিতে ওয়াশিংটনের ফিরে আসা।

রুহানি বলেন, আঞ্চলিক ও বৈশ্বিক নিরাপত্তার কথা ভেবে পারমাণবিক চুক্তি মেনে চলবে ইরান। তেহরান ও টোকিও পারমাণবিক অস্ত্র বিরোধী বলে জানান তিনি।