সংঘর্ষে নিহত তিন, বিজেপি-তৃণমূলের পাল্টাপাল্টি অভিযোগ

ভাটপাড়ায় স্থানীয়দের পাশাপাশি পুলিশের অবস্থান। পশ্চিমবঙ্গ, ২০ জুন। ছবি: ভাস্কর মুখার্জি
ভাটপাড়ায় স্থানীয়দের পাশাপাশি পুলিশের অবস্থান। পশ্চিমবঙ্গ, ২০ জুন। ছবি: ভাস্কর মুখার্জি

পশ্চিমবঙ্গের উত্তর ২৪ পরগনা জেলায় আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে ৩ যুবক নিহত হয়েছেন। আজ বৃহস্পতিবার বেলা ১১টার দিকে বারাকপুর মহকুমার ভাটপাড়ায় এই ঘটনা ঘটে। বিজেপি ও তৃণমূল এ জন্য পরস্পরকে দায়ী করছে।

নিহত যুবকেরা হলেন, রামবাবু সাউ, সন্তোষ সাউ ও ধরমবীর সাউ। এর মধ্যে ধরমবীর বোমার আঘাতে মারা যান। আর রামবাবু ও সন্তোষ মারা যান গুলিতে। এই ঘটনায় চার ব্যক্তি গুলিবিদ্ধ হয়ে কলকাতার একটি বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন।

স্থানীয়দের সূত্রে জানা গেছে, আজ বেলা ১১ টায় দিকে বারাকপুর মহকুমার জগদ্দল থানা ভেঙে নতুন থানা ভাটপাড়ার উদ্বোধন হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু এ নিয়ে সকাল থেকেই উত্তপ্ত হয়ে পড়ে ভাটপাড়া এলাকা। একপর্যায়ে তা সংঘর্ষে রূপ নেয়। পরে পুলিশ সংঘর্ষ নিয়ন্ত্রণের লাঠিপেটা ও কাঁদানে গ্যাস নিক্ষেপ করে। এই সংঘর্ষের মধ্যেই হতাহতের এই ঘটনা ঘটে।

ভাটপাড়া এলাকাটি এবারের লোকসভা নির্বাচনকে কেন্দ্র করে আলোচনায় উঠে আসে। তৃণমূল নেতা ও বিধায়ক অর্জুন সিং এবার বারাকপুর আসনে সাংসদ পদে তৃণমূলের মনোনয়ন না পেয়ে বিজেপিতে যোগ দেন। এরপরে নির্বাচনে তিনি তৃণমূলের হেভিওয়েট প্রার্থী সাবেক কেন্দ্রীয় রেলমন্ত্রী এবং সাংসদ দীনেশ ত্রিবেদিকে হারিয়ে সাংসদ নির্বাচিত হন। অর্জুন সিংয়ের মধ্য দিয়ে গোটা বারাকপুরে বিজেপির দাপট শুরু হয়। এরপর বিজেপি বারাকপুরের ৪টি পৌরসভা তৃণমূলের কাছ থেকে ছিনিয়ে নেয়। ফলে সেখানে ক্রমে দুর্বল হয়ে পড়ে তৃণমূল। অভিযোগ রয়েছে, আজকের এই সংঘর্ষও ওই আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে।

স্থানীয় সাংসদ অর্জুন সিং এই সংঘর্ষের জন্য তৃণমূলকে দায়ী করেছেন। তাঁর দাবি, এই ঘটনায় জড়িত ব্যক্তিরা তৃণমূলের মদদপুষ্ট দুষ্কৃতকারী ও পুলিশ। তিনি বলেন, দুই ব্যক্তি পুলিশের গুলিতে মারা গেছেন। চিকিৎসাধীন চারজনও পুলিশের গুলিতে গুলিবিদ্ধ।

তবে তৃণমূল নেতা ও পশ্চিমবঙ্গের সাবেক মন্ত্রী মদন মিত্র দাবি করেছেন, বিজেপির মদদপুষ্ট দুষ্কৃতকারীরা এই হত্যা ও সংঘর্ষের জন্য দায়ী।

এদিকে এলাকায় শান্তি বজায় রাখতে ভাটপাড়া ও জগদ্দলে ১৪৪ ধারা জারি করা হয়েছে। রাজ্যের স্বরাষ্ট্রসচিব আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছেন, আজ ভাটপাড়া থানার কাজ শুরু করা হয়েছে। তবে আনুষ্ঠানিকভাবে এই থানার উদ্বোধন হবে পরবর্তীতে। সংঘর্ষকালে ব্যাপক বোমাবর্ষণ ও গোলাগুলি হয়েছে। পুলিশও এলাকা থেকে আগ্নেয়াস্ত্রসহ গোলাবারুদ উদ্ধার করেছে। গোটা এলাকায় পুলিশি টহল অব্যাহত আছে । মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় রাজ্যের ডিজি বীরেন্দ্র এডিজি (দক্ষিণবঙ্গ) সঞ্জয় সিংকে বিশেষ দায়িত্ব দিয়ে ভাটপাড়ায় পাঠিয়েছেন।