ভারতীয় রিজার্ভ ব্যাংকের ডেপুটি গভর্নরের ইস্তফা

বিরল আচার্য
বিরল আচার্য

ভারতের রিজার্ভ ব্যাংকের ডেপুটি গভর্নরের পদ থেকে ইস্তফা দিলেন বিরল আচার্য। মেয়াদ শেষের আট মাস আগে পদত্যাগ করে যুক্তরাষ্ট্রে শিক্ষকতা করতে চলে যাচ্ছেন তিনি। বিরলের পদত্যাগের কথা স্বীকার করে রিজার্ভ ব্যাংক আজ সোমবার এক বিবৃতিতে বলেছে, বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষর বিবেচনাধীন। সরকারের সঙ্গে মতবিরোধের কারণে রিজার্ভ ব্যাংকের গভর্নর উর্জিত প্যাটেল পদত্যাগ করেছিলেন। ৪৫ বছর বয়সী অর্থনীতিবিদ বিরল আচার্যও এবার সেই পথে হাঁটলেন।

উর্জিত প্যাটেলের সঙ্গে বিজেপি সরকারের মতপার্থক্যের পর বিরলও পদত্যাগ করবেন বলে একটা খবর রটেছিল। উর্জিত পদত্যাগ করেন গত বছরের ডিসেম্বর মাসে। তাঁর পর গভর্নর নিযুক্ত হন সাবেক আমলা শক্তিকান্ত দাস। সরকারের ভাবনাচিন্তার সঙ্গে অর্থনীতিবিদদের মিল না হওয়ায় মোদি সরকার রিজার্ভ ব্যাংকের দায়িত্ব আমলার হাতে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয়। শক্তিকান্তর সঙ্গেও বিরলের বনিবনা হচ্ছিল না। দেশের প্রবৃদ্ধি ও মুদ্রাস্ফীতির হার নিয়ে তাঁদের মতবিরোধ হয়। রিজার্ভ ব্যাংকের স্বাধীনতা খর্ব করার অভিযোগেও তিনি সরব হয়েছিলেন। এক অনুষ্ঠানে ভাষণ দেওয়ার সময় বিরল বলেছিলেন, ‘কেন্দ্রীয় ব্যাংকের স্বাধীনতাকে যে সরকার সম্মান করে না তাদের অর্থনীতির ক্রোধ ও রোষের মুখে আজ বা কাল পড়তেই হবে।’ এই সব কারণে কিছুদিন ধরে শোনা যাচ্ছিল, বিরলও উর্জিতের পথে হাঁটতে চলেছেন। অবশেষে তা সত্য হলো।

রিজার্ভ ব্যাংকের সঙ্গে মোদি সরকারের বিরোধের শুরু ক্ষমতায় আসার পর থেকেই। প্রথম খটাখটি লাগে কংগ্রেস আমলে নিযুক্ত গভর্নর রঘুরাম রাজনের সঙ্গে। তিন বছরের মেয়াদ শেষ হওয়ার পর দ্বিতীয় দফাতেও গভর্নরের দায়িত্বে থাকতে তিনি রাজি ছিলেন। কিন্তু তাঁকে সেই সুযোগ না দিয়ে মোদি সরকার দায়িত্ব দেন উর্জিত প্যাটেলকে। ডেপুটি হন বিরল আচার্য। বনিবনা তাঁদের সঙ্গেও হলো না। রাজনৈতিক স্বার্থে অর্থনীতিকে ব্যবহার করার এই প্রচেষ্টাই অর্থনীতিবিদেরা মেনে নিতে পারছেন না বলে কংগ্রেস অভিযোগ করেছে। দলের মুখপাত্র রণদীপ সিং সুরযেওয়ালা টুইট করে বলেছেন, ‘সরকার বদল হয়। কিন্তু অর্থনীতির বিপর্যয় অব্যাহত। বিজেপির শাসনকালে সত্য তুলে ধরার জন্য যাদের সরে যেতে হয়েছে, সেই তালিকায় বিরল আচার্যের নাম যুক্ত হলো। ৪ জন অর্থনৈতিক উপদেষ্টা, রিজার্ভ ব্যাংকের ২ জন গভর্নর এবং নীতি আয়োগের একজন বড় কর্তা আগেই ইস্তফা দিয়েছেন।’