রাহুলের তৎপরতায় আশাবাদী কংগ্রেস

রাহুল গান্ধী
রাহুল গান্ধী

এক মাস পূর্ণ হলো ভারতের জাতীয় কংগ্রেসের নেতৃত্বহীনতার। কবে শতাব্দী প্রাচীন এই দল নেতৃত্ব প্রশ্নের মীমাংসা করবে অজানা। কিন্তু তারই মধ্যে রাহুল গান্ধীর রাজনৈতিক তৎপরতায় কিছুটা হলেও দলীয় মহলে আশা সৃষ্টি করেছে। কারণ, তিন রাজ্যের নেতাদের পাশাপাশি সেই রাজ্যগুলোর ভারপ্রাপ্ত এআইসিসি সাধারণ সম্পাদকদের সঙ্গে রাহুল বৈঠক করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।

দলীয় সূত্রের খবর, আগামী কয়েক দিনে রাহুল দেখা করবেন মহারাষ্ট্র, হরিয়ানা ও দিল্লির নেতৃত্ব ও এই রাজ্যের ভারপ্রাপ্ত এআইসিসি নেতাদের সঙ্গে। কংগ্রেস সদর দপ্তরে সেই বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে। ঝাড়খন্ডের নেতাদের সঙ্গেও তিনি বৈঠক করবেন। এই চার রাজ্যেই এই বছরের শেষ ও আগামী বছরের গোড়ায় বিধানসভার ভোট। দলীয় সূত্রের খবর, রাজ্যগুলোর নেতারা দিনকয়েক ধরেই রাহুলের ওপর চাপ সৃষ্টি করছিলেন তাঁদের সঙ্গে বৈঠকে বসার জন্য। রাহুলকে তাঁরা ‘দেশ ও দলের স্বার্থে’ সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনার অনুরোধও জানিয়েছেন।

নির্বাচন বিপর্যয়ের যাবতীয় দায় মাথায় নিয়ে গত মাসের ২৫ তারিখ কংগ্রেস ওয়ার্কিং বৈঠকে রাহুল সভাপতি পদ ছেড়ে দেওয়ার কথা জানিয়েছিলেন। তাঁর বক্তব্য ছিল, দায় ও দায়িত্ব পদাধিকারীর নেওয়া দরকার। সেই দায় তিনি নিচ্ছেন। দলকে তিনি জানিয়ে দেন, পরিবারের কেউ কংগ্রেসের সভাপতির দায়িত্ব নেবেন না। কে বা কারা দায়িত্ব নেবেন ওয়ার্কিং কমিটি তা ঠিক করবে। এক মাস কেটে গেলেও ওয়ার্কিং কমিটি সেই সিদ্ধান্ত নিতে পারেনি। নানাবিধ চাপ সৃষ্টি ও অনুরোধ, উপরোধ, দাবি সত্ত্বেও রাহুল সিদ্ধান্ত বদলে নমনীয় হননি। লোকসভার নেতা হতেও রাজি হননি। কিন্তু ঠিক এক মাসের মাথায় রাজ্য নেতৃত্বের সঙ্গে বৈঠক করতে রাজি হওয়াকে দল ‘ইতিবাচক’ বলে মনে করছে। এমনও ভাবা হচ্ছে, শেষ পর্যন্ত রাহুল হয়তো মন বদলাতে পারেন।

কিন্তু রাহুল রাজি না হলে ওয়ার্কিং কমিটির বৈঠক ডাকা ছাড়া অন্য কোনো উপায় থাকবে না। সে ক্ষেত্রে সময় নষ্ট না করে সেই বৈঠক ডাকা উচিত বলে দলীয় নেতারা মনে করছেন। মোটামুটি যে বিষয়টি নিয়ে ঘরোয়াভাবে দলের শীর্ষ নেতারা একমত, তা হলো চার-পাঁচজন নেতাকে নিয়ে একটা ‘কলেজিয়াম’ তৈরি করা। বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত সেই ‘কলেজিয়াম’ নেবে। পাশাপাশি, সভাপতি পদের নির্বাচনের জন্য প্রস্তুতি নেওয়া হবে। সে জন্য গঠনতন্ত্র অনুযায়ী এআইসিসির অধিবেশন ডাকতে হবে।

আপাতত ঠিক আছে, পরশু বৃহস্পতিবার, মহারাষ্ট্র এবং পরের দিন, শুক্রবার, হরিয়ানা ও দিল্লির নেতাদের সঙ্গে রাহুল আলোচনায় বসবেন। ইতিমধ্যেই উত্তর প্রদেশ ও কর্ণাটকের প্রদেশ কংগ্রেস কমিটি ভেঙে দেওয়া হয়েছে। অন্যান্য রাজ্য কমিটিও পুনর্গঠনের উদ্যোগ চলছে।