কিমের সঙ্গে ঠিকই 'হ্যান্ডশেক' করে এলেন ট্রাম্প

উত্তর কোরিয়ার নেতা কিম জং-উনের হাতে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের হাত। ছবি: রয়টার্স
উত্তর কোরিয়ার নেতা কিম জং-উনের হাতে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের হাত। ছবি: রয়টার্স

টুইটে প্রকাশ করা ইচ্ছাকেই বাস্তবে রূপ দিলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। উত্তর কোরিয়ার নেতা কিম জং-উনের সঙ্গে ঠিকই ‘হ্যান্ডশেক’ করতে ছুটে গেলেন দুই কোরিয়ার মাঝের অসামরিক এলাকায় (ডিএমজেড)। পরে ট্রাম্প সীমান্তরেখা অতিক্রম করে উত্তর কোরিয়ার মাটিতেও পা রাখেন। কোনো ক্ষমতাসীন মার্কিন প্রেসিডেন্ট এই প্রথম উত্তর কোরিয়ায় পা রাখলেন।

সমালোচকদের চোখে, ট্রাম্পের এই কাজ রাজনৈতিক নাটকের মঞ্চায়ন ছাড়া আর কিছু নয়। তবে অন্যরা বলছেন, ভবিষ্যৎ আলোচনার দৃশ্যপট তৈরি করতে পারে এই ‘হ্যান্ডশেক’।

গতকাল শনিবার চমকপ্রদ টুইটটি করেন ট্রাম্প। পরে সবাইকে বিস্মিত করে দিয়ে ট্রাম্প নিশ্চিত করেন, তিনি উত্তর কোরিয়ার নেতা কিম জং-উনের সঙ্গে শুধু ‘হাত মেলানোর জন্য’ যাচ্ছেন ডিএমজেডে।

আজ রোববার ডিএমজেডে গিয়ে কিম জং-উনের সঙ্গে সেই ‘হ্যান্ডশেক’ করেন ট্রাম্প। এ সময় দুজনের মুখেই ছিল হাসি। পরে ট্রাম্প উত্তর কোরিয়ার ভেতরে কিছুটা পথ যান।

ডিএমজেডে দুই নেতা প্রায় ৩০ মিনিটের মতো বৈঠকে মিলিত হন। তাঁরা পরমাণু আলোচনা ফের শুরু করতে টিম গঠনের ব্যাপারে একমত হন।

এভাবে দুই নেতার দেখা করার ঘটনাটিকে নজিরবিহীন বলা হচ্ছে। উত্তর কোরিয়াও ট্রাম্পের ওই টুইটে বিস্মিত হয়। জাপানে জি-২০ সম্মেলনে অংশ নেওয়া শেষে আজ ট্রাম্প দক্ষিণ কোরিয়া সফরে যান। সেখান থেকেই তিনি কিম জং-উনের সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে যান।

গত শুক্রবার জি-২০ সম্মেলনে অংশ নিতে ট্রাম্প জাপানের ওসাকায় যান। দুই দিনব্যাপী সম্মেলনটি শেষ হয় গতকাল।

গতকাল উত্তর কোরিয়ার নেতা কিম জং-উনকে উদ্দেশ করে ট্রাম্প টুইট করার পর তা নিয়ে হইচই পড়ে যায়। আসলে কী ঘটতে যাচ্ছে, তা নিয়ে কৌতূহল তৈরি হয়।

ট্রাম্প ওই টুইটে বলেছিলেন, উত্তর কোরিয়ার নেতা কিম জং-উনের সঙ্গে দেখা করতে, শুধু হ্যালো বলে হাত মেলাতে তিনি ডিএমজেডে যাবেন। সেই টুইটের পরিপ্রেক্ষিতেই দুই নেতার অভূতপূর্ব এই সাক্ষাৎ হলো।

হঠাৎ সাক্ষাতের বিষয়ে দক্ষিণ কোরিয়ার প্রেসিডেন্ট মুন জে-ইন আগেই বলেন, ‘শান্তির জন্য তাঁরা (দুই নেতা) হ্যান্ডশেক করবেন।’

সাক্ষাতের বিষয়ে উত্তর কোরিয়া এখনো কোনো মন্তব্য করেনি। তবে ট্রাম্পের টুইটের প্রতিক্রিয়ায় উত্তর কোরিয়া বলে, বিষয়টি বেশ কৌতূহলোদ্দীপক।

ভেস্তে যাওয়া আলোচনা এখন নতুন করে প্রাণ পেতে যাচ্ছে বলে মনে করা হচ্ছে।

বিবিসি অনলাইনের খবরে বলা হয়, এ নিয়ে ট্রাম্প ও কিমের মধ্যে তৃতীয় দফায় মুখোমুখি সাক্ষাৎ হলো।

পারমাণবিক নিরস্ত্রীকরণ ইস্যুতে গত বছরের জুনে প্রথমবারের মতো বৈঠক হয় ট্রাম্প ও কিমের। বৈঠকটি অনুষ্ঠিত হয়েছিল সিঙ্গাপুরে। দুই নেতার মধ্যে দ্বিতীয় বৈঠক অনুষ্ঠিত হয় এ বছরের ২৮ ফেব্রুয়ারি ভিয়েতনামের হ্যানয়ে। কোনো সমঝোতা না হওয়ায় ভেস্তে যায় সেই বৈঠক।

আজ কিমের সঙ্গে সাক্ষাতের পর ট্রাম্প বলেন, ‘এটা অনেক বড় সম্মান। এর মাধ্যমে অনেক অগ্রগতি হয়েছে। বিশ্বের জন্য আজ একটি মহৎ দিন।

এ সময় হাসিমুখে প্রতিক্রিয়া জানিয়ে কিম বলেন, তিনি মনে করেন, এর মাধ্যমে অতীত দূরে ঠেলে নতুন যুগে প্রবেশের ইচ্ছার প্রকাশ ঘটেছে।

সংক্ষিপ্ত সাক্ষাতের পর দক্ষিণ কোরিয়ার সিউলে ফিরে যান ট্রাম্প।