ট্রাম্প-কিম বৈঠক লোকদেখানো?

ডোনাল্ড ট্রাম্প ও কিম জং-উন সবশেষ গতকাল রোববার বৈঠক করেন। ছবি: রয়টার্স
ডোনাল্ড ট্রাম্প ও কিম জং-উন সবশেষ গতকাল রোববার বৈঠক করেন। ছবি: রয়টার্স

যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এক বছরের ব্যবধানে উত্তর কোরিয়ার নেতা কিম জং-উনের সঙ্গে তিনবার বৈঠকে বসলেন। সবশেষ গতকাল রোববার তাঁদের বৈঠক হয় দুই কোরিয়ার সীমান্তে পানমুনজমের অসামরিকায়িত অঞ্চলে। তবে এসব বৈঠক লোকদেখানো নাকি শান্তির জন্য দৌড়ঝাঁপ, তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন বিশ্লেষকেরা।

পারমাণবিক নিরস্ত্রীকরণের বিনিময়ে উত্তর কোরিয়ার ওপর থেকে নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়ার প্রশ্নে সিঙ্গাপুর ও ভিয়েতনামে দুই দফা বৈঠকে বসেন কিম-ট্রাম্প। এর কোনোটিতেই আশানুরূপ ফল পাওয়া যায়নি। এ কারণেই পানমুনজমে এবারের বৈঠকের ঘোষণা আসার পর অনেকেই ধরে নিয়েছিলেন, দুই নেতার মধ্যে হয়তো শুধু কুশল বিনিময়ই হবে। কিন্তু আধা ঘণ্টার বেশি সময় বৈঠক করেছেন তাঁরা।

এবারের ট্রাম্প-কিম বৈঠকের পরও কোরীয় উপদ্বীপকে পারমাণবিক অস্ত্রমুক্ত করার প্রক্রিয়ার অগ্রগতির বিষয় নিয়ে সন্দিহান বিশেষজ্ঞরা। ম্যাসাচুসেট ইনস্টিটিউট অব টেকনোলজির অধ্যাপক বিপিন নারাং বলেন, পানমুনজমের ‘নাটক’ তখনই সফল হবে, যখন দুই দেশ কার্যকরভাবে আলোচনার দিকে যাবে। তিনি আরও বলেন, ‘এটা না হলে আমরা ১৫ মাস পর আবার একই ধরনের নাটক দেখতে পাব।’

উত্তর কোরিয়াকে পারমাণবিক অস্ত্রমুক্ত করতে অটল ট্রাম্প প্রশাসন। তবে পিয়ংইয়ং কখনো জনসমক্ষে বলেনি, তারাও সেটা চায়। পারমাণবিক কর্মসূচির কারণে আন্তর্জাতিক নিষেধাজ্ঞায় বিপর্যস্ত উত্তর কোরিয়ার অর্থনীতি। ফলে দেশটি সেই নিষেধাজ্ঞা থেকে বেরোতে চাইছে। এ জন্য ইয়ংবিন নামের একটি পারমাণবিক কেন্দ্র বন্ধের প্রস্তাবও দিয়েছে। কিন্তু বিশেষজ্ঞরা বলেছেন, অস্ত্র বানাতে ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণের জন্য আরও অনেক কেন্দ্র রয়েছে পিয়ংইয়ংয়ের।

দক্ষিণ কোরিয়ার রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠান কোরিয়া ইনস্টিটিউট ফর ন্যাশনাল ইউনিফিকেশনের জ্যেষ্ঠ গবেষক হাং মিন বলেন, পানমুনজম বৈঠক আবার সংলাপ শুরুর একটি ভালো উপায় বাতলে দিয়েছে। তবে যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা প্রশাসনের পররাষ্ট্র দপ্তরের কর্মকর্তা মিনতারো ওবা ট্রাম্প-কিম বৈঠককে ‘সাময়িক সময়ের অগ্রগতি’ হিসেবে আখ্যা দিয়েছেন।

সিউলের ইউনিভার্সিটি অব নর্থ কোরিয়ার অধ্যাপক কো কাব উ বলেন, যুক্তরাষ্ট্রে প্রেসিডেন্ট নির্বাচন আগামী বছরে। নির্বাচনী প্রচারণায় উত্তর কোরিয়ার বিষয়টি ‘কার্যকর হাতিয়ার’ হিসেবে ব্যবহার করতেই ট্রাম্প নানা নাটকীয় পদক্ষেপ নিচ্ছেন।

তবে ট্রাম্প-কিম বৈঠককে ইতিবাচক হিসেবে দেখছেন যুক্তরাষ্ট্রের কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থার (সিআইএ) সাবেক বিশ্লেষক সো কিম। তিনি বলেন, রোববারের ঘটনা আলোচনার পথকে প্রশস্ত করবে।